Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধারাভি বস্তি করোনা মোকাবেলা করে আদর্শ

ইন্ডিয়া টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে যখন প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে, এতে বহুল বিপর্যয়ের সতর্কবার্তা ছিল। কারণ ১৫ লাখেরও বেশি লোকের আবাস ৬ হাজার ১শ’ ১৩ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি ঘনবসতির ধারাভিতে করোনার মতো মহামারী ছড়িয়ে পড়ার আগেই শনাক্ত করতে পারাটা সময়সাপেক্ষ বিষয় ছিল। ঠিক এর পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ধারাভি মুম্বাইয়ের বৃহত্তম করোনা সংক্রমণের চারণভ‚মিতে পরিণত হয়। সেখানে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৩টি সংক্রমণ ঘটেছে এবং ৭৭ জন মারা গেছে।
তবে, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে যখন ভারতজুড়ে কোভিড-১৯’র বিস্ফোরণ ঘটছে, সেসময় ধারাভিতে সংক্রমণের হার ক্রমেই হ্রাস পায়। সংক্রমণের মৌলিক পরীক্ষা, যোগাযোগ অনুসন্ধান এবং কোয়ারেন্টিন মেনে চলে ধারাভি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটিয়েছে। যেখানে বাসিন্দাদের করোনার লক্ষণগুলির জন্য পরীক্ষা করা হয়েছিল, সেখানে বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন-বিএমসি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে জ্বর বিষয়ক ক্লিনিক স্থাপন করতে শুরু করে। গেল এপ্রিলেও ধারাভিতে মাত্র ২ থেকে ৩টি ক্লিনিক ছিল, তবে বর্তমানে এই এলাকায় শতাধিক ক্লিনিক চালু রয়েছে।
এপ্রিলের পর থেকে বিএমসি’র কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবীরা ঘরে ঘরে গিয়ে ধারাভির ছয় লক্ষাধিক লোককে পরীক্ষা করে ফেলেছেন। তারা ধারাভির লোকজনের অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রাও পরীক্ষা করেছেন এবং তা ৯৫ শতাংশের নীচে থাকলে তাদেরকে দেখাশোনা করার জন্য পৃথক পৃথক কেন্দ্রগুলোতে নেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এবং জ্বরের ক্লিনিকগুলির মাধ্যমে লোকদের কঠোরভাবে পরীক্ষা এবং শনাক্ত করার পদ্ধতিটি কাজে দিয়েছে। ধারাভি সফলভাবে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি কমিয়ে আনতে পেরেছে এবং এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১০ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছে। বাকিরা নির্ধারিত কোভিড-১৯ হাসপাতাল ও সুবিধা কেন্দ্রসমূহে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এছাড়াও, ধারাভিতে গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো নতুন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ধারাভির সাফল্যের পেছনের মূল কারণ হিসেবে করোনা প্রতিরোধের মৌলিক পদ্ধতিগুলোর অনুসরণ করাকে সহজেই চিহ্নিত করা যেতে পারে। এই ঘনবসতির বস্তিটির সাফল্যের অনুক‚লে কাজ করা আরেকটি বিষয় হ’ল লকডাউন। এরফলে, প্রায় ২ লাখেরও বেশি বাসিন্দা গত মার্চ মাস থেকে বস্তি ছেড়ে দিতে শুরু করে, যা বাসিন্দাদের মাঝে এক ধরনের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করেছে।
করোনা প্রতিরোধে ডবøুএইচও’র প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস তার প্রতিটি বক্তব্যে যোগাযোগ সন্ধান এবং সন্দেহভাজন সংক্রমিতকে পরীক্ষা এবং আলাদা করে দেয়াসহ কঠোরভাবে মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার বিষয়টির প্রতি জোর দিয়ে আসছেন, যা ধারাভি কঠোরভাবে অনুসরণ করেছে এবং সমগ্র ভারতে একটি আদর্শে মডেলে পরিণত হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ