যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে এবার একযোগে ৫৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করেছে। নিউ ইয়র্কের বাফেলোতে ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে পুলিশ ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। ওই ব্যক্তি মাটিতে পড়ে রক্তাক্ত হলেও তাকে সেই অবস্থায় ফেলে একদল পুলিশ পাশ দিয়ে হেঁটে যায়। সামনে গিয়ে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করে। মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের র প্রতিবাদে এসব মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। পুলিশের এমন একশনের ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর তাদের দু’সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বাফেলোর ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম থেকে পুরো ৫৭ জনের পুলিশি টিম পদত্যাগ করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।
যে দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তাদেরকে কোনো রকম পাওনা পরিশোধ করা হবে না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত করা হবে। মার্টিন গুগিনো নামের ৭৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে নির্যাতনের ভিডিও চারদিক ছড়িয়ে পড়লে তাতে হতাশা সৃষ্টি হয়। অসন্তোষ বাড়তে থাকে। এর ফলে ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বাফেলো পুলিশ বেনেভোলেন্ট এসোসিয়েশন (পিবিএ) বলেছে, এ ঘটনায় বাফেলোর পুরো ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম পদত্যাগ করেছে। পিবিএ প্রেসিডেন্ট জন ইভান্স বলেছেন, ৫৭ জন পুলিশ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। কারণ, যে দু’জন সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা শুধু নির্বাহী আদেশ পালন করেছেন। তবে এই ৫৭ জন পুলিশ সদস্য পুলিশ বিভাগ থেকে পদত্যাগ করেন নি। তারা শুধু ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম থেকে পদত্যাগ করেছেন।
ওদিকে মার্টিন গুগিনোর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি দীর্ঘ সময় শান্তির পক্ষে অধিকারকর্মী। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং জলবায়ু ইস্যুতে তিনি বিক্ষোভ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। এবার রাস্তায় নেমেছিলেন জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে। তাকে একজন অমায়িক মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তার এক বন্ধু। তিনি কখনো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘাতে জড়ান নি। তার শারীরিক কিছু সমস্যা আছে। তাকে নির্যাতনের ওই ভিডিও ধারণ করেন স্থানীয় একজন সাংবাদিক। এতে দেখা যায় দাঙ্গা পুলিশরা অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু তাদের বিপরীতে হাঁটা শুরু করেন মার্টিন গুগিনো।
এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে ধাকা দেয়। দ্বিতীয় আরেকজন হাত দিয়ে ধাক্কা দেয়। তিনি মাটিতে পড়ে যান। শব্দ পাওয়া যায়। মুহূর্তেই রক্তে সয়লাব হয় সেখানে। কিন্তু তার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে পুলিশ তাকে মাটিতে ফেলে রেখে সামনে এগিয়ে যায়। অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকেন মার্টিন গুগিনো। বাফেলোর মেয়র বায়রন ব্রাউন বলেছেন, এই ভিডিও দেখে আমি খুব হতাশ।