মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ভারতের অর্থনীতি একেবারে রুগ্ন দশায় চলে এসেছে। এতদিন মোদি সরকার বিষয়টি চাপা দিয়ে রাখলেও আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জের নতুন রেটিংয়ে তা ঠিকই প্রকাশ পেল। সোমবার এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির ক্রেডিট রেটিং কমে তলানিতে যেয়ে ঠেকেছে। ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং অনিয়ন্ত্রিত আর্থিক ব্যবস্থাই এর জন্য দায়ি বলে জানিয়েছে মুডি।
কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছিল, গত অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর মধ্যেই সোমবার বিদেশি ম্দ্রুায় এবং ভারতীয় মুদ্রায় ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বল্পমেয়াদি সরকারি বন্ডের রেটিং কমিয়েছে মুডি’জ। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যায়ন কমল ভারতের। দীর্ঘমেয়াদে যে বন্ড ছেড়ে সরকার ধার নেয়, তার রেটিং ‘বিএএ২’ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ‘বিএএ৩’। অন্য দিকে ভারতীয় মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদি বন্ডের ক্ষেত্রে ‘পি-২’ থেকে কমে হয়েছে ‘পি-৩’। বন্ডে লগ্নির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন রেটিং ‘বিএএ৩’। ফলে ভারতে বন্ডে লগ্নি না-করার সুপারিশ ‘জাঙ্ক’ থেকে এখন মাত্র এক ধাপ উপরে ভারত।
রেটিং কমিয়ে মুডি’জের বার্তা, ভারতীয় অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে দীর্ঘমেয়াদে নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে বিপুল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। যা সামাল দেয়া মুশকিল হতে পারে। করোনার আবহে রেটিং ছাঁটার পদক্ষেপ করা হলেও, তার কারণ যে অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা নয়, তা-ও স্পষ্ট জানিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থাটি। তাদের দাবি, ঝিমুনি ছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমছে নাগাড়ে। সমস্যা চেপে ক্রমশ চেপে বসেছে আর্থিক ক্ষেত্রে। রাজকোষ ঘাটতি মাথা তুলেছে ইতিমধ্যেই। ফলে ভারতকে ধার দেয়ার ঝুঁকি বেড়েছে অনেক আগেই। করোনা শুধু সেই ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি মুডি’জের এটাও দাবি যে, এখন যতটা আশঙ্কা করা হচ্ছে, আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্যাগুলির জেরে ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি আগামী দিনে তার থেকেও অনেক বেশি ক্ষয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যেহেতু আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্যা সংক্রান্ত ঝুঁকিগুলি কমানোর জন্য ভারতের নীতি নির্ধারক প্রতিষ্ঠানের নেয়া নীতিগুলি কার্যকর করাই কঠিন হতে পারে।
অবশ্য এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। ভারতের বিরোধী দলগুলো-সহ সংশ্লিষ্ট মহল দাবি করছিল যে, রেটিং কমে যাওয়ার ভয়েই আসলে কেন্দ্র ত্রাণ প্যাকেজে সরাসরি আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে না সরকার। যাতে সরকারের খরচ বেড়ে গিয়ে রাজকোষ ঘাটতি আর না বাড়ে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। খরচ নিয়ে সরকারের সতর্ক পদক্ষেপ সত্তে¡ও মূল্যায়নে কোপ পড়ল।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের নভেম্বরে ভারতের সরকারি বন্ডের রেটিং বিএএ৩ থেকে বাড়িয়ে বিএএ২ করেছিল মুডি’জ। তখন তাদের আশা ছিল, ভারত আর্থিক ক্ষেত্রে যে সব সংস্কার আনছে, তার সুবাদে ভবিষ্যতে বাজার থেকে ধার নেয়ার ক্ষেত্রে এ দেশের যোগ্যতা আরও বাড়বে। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।