Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চিঠিপত্র

সাঙ্গুর প্রতি সুনজর দিন

| প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি হওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম ২৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ১১৯ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট পাহাড়ি নদী ‘সাঙ্গু’ বা ‘শঙ্খ’ চট্টগ্রাম বিভাগের ২য় বৃহত্তম নদী। পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। পর্যটন নগরী ও পার্বত্য জনপদ বান্দরবান জেলার বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকার সাথে এর সম্পর্ক অনেক পুরাতন ও অবিচ্ছেদ্য। জেলার অভ্যন্তরে অনেক মানুষের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই নদী। এছাড়াও অনেকের নিত্য ব্যবহারের পানির প্রধান উৎস এটি। এই নদীটি একদিকে যেমন জীবন ও জীবিকার পথ সুগম করছে তেমনি এটাকে কেন্দ্র করেই সমৃদ্ধ হচ্ছে জেলার পর্যটন। নানা কারণে নদীটি দিন দিন তার জৌলুশ হারাচ্ছে। দখল আর দূষণের নিত্য আঘাতে নষ্ট হচ্ছে এর স্বাভাবিকতা। নদীর ধারে মলমূত্র ত্যাগ, নোংরা ময়লা-আবর্জনার স্তূপ আর বর্জ্য ও পয়ঃনিষ্কাষণের সরাসরি পাইপলাইন সব মিলিয়ে মারাত্মক দূষণের শিকার নদীটি। সেইসাথে পরিত্যক্ত পলিথিন আর প্লাস্টিক বর্জ্যরে কারণে নব্য কমে আসছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন আর দখলেরও শিকার সাঙ্গু। শুষ্ক মৌসুমে নদীর যে চর ছিল শিশু-কিশোরদের খেলা ও বিভিন্ন বয়সের স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের হাঁটা ও ব্যায়ামের নিরাপদ জায়গা, এখন তা দখল আর দূষণে কাবু। ভরা বর্ষার পর নদীর ধারে জমা হওয়া উর্বর পলিতে অনেকেই বিভিন্ন ফসল বুনে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ময়লা-আবর্জনা ও পরিত্যক্ত সামগ্রীর স্তূপে সেটাও কমে আসছে। নদীর ধারের অনেকেই তাদের আবাসিক ও ব্যবসায়িক স্থাপনা কিংবা ভবনের বর্জ্য পদার্থ সরাসরি নদীতে ফেলছেন। মারাত্মক দূষণ ও নাব্য নষ্টের প্রভাবে সাঙ্গু নদীতে থাকা মাছের বৈচিত্র্য আজ কমতির তালিকায়। নদীর ধারের অনেক লোকের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারের পানির একমাত্র উৎস সাঙ্গু নদী। কাপড় ধোয়া, গোসল করা ও নানাবিধ কজে ব্যবহৃত হচ্ছে এর পানি। এছাড়া বাজারের গণশৌচাগারে ব্যবহার করা হচ্ছে নদীর পানি। শহরে পুকুরের সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে এর পানি শহরের অনেক খাবার হোটেলেও ব্যবহার করা হচ্ছে! ফলে সংশ্লিষ্টদের খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে। তাই নদীমাতৃক দেশের পাহাড় কন্যা পার্বত্য নগরী বান্দরবানের বৈচিত্র্যময় পর্যটন শিল্পকে গতিশীল ও টেকসই করতে সাঙ্গু নদীকে অনিয়ন্ত্রিত দূষণ ও দখলের কবল থেকে মুক্ত এবং নিয়ন্ত্রণহীন বালু উত্তোলন রোধ করে এর নাব্য নিশ্চিত করার আশু কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য।
আবু ফারুক
বনরুপা, বান্দরবান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন