Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

ইসলাম-মুসলিম নিয়ে বিজেপির মন্তব্যে তীব্র

প্রতিবাদ ইমরান খানের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র সংসদ সদস্য সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেছেন, ‘মুসলিম (জনসংখ্যা) যদি (যে কোনও দেশে) ৩০ শতাংশের বেশি হয়ে যায়, তবে সে দেশটি বিপদে পড়তে পারে।’ রোববার প্রচারিতব্য ভাইস নিউজকে দেয়া এক ভিডিও সাক্ষাতকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংসদ সদস্য সুব্রামানিয়ামের কাছে ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা জানি যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা বেশি সেখানে সর্বদা সমস্যা থাকে। কারণ ইসলামী মতাদর্শ তাই বলে।’

সুব্রামানিয়াম বলেন যে, এটাকে ঘৃণা বলে অভিহিত করা সহজ। তবে ভারতে প্রবেশ না করতে দিয়ে তিনি তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করছেন। ভারতীয় সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে ভারতে প্রত্যেকের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি মনে করিয়ে দেয়া হলে তিনি এটিকে এই অনুচ্ছেদের ভুল ব্যাখ্যা মন্তব্য করে বলেন, ‘আইন সমতার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করে।’

‘সব মানুষ কি সমান নয়? ভারতে কি মুসলমানরা সমান নয়?’ এই প্রশ্নের জবাবে সুব্রামানিয়াম জানান, ‘না, সমস্ত মানুষ সমান নয়। মুসলমানরা সমান শ্রেণিতে পড়ে না।’ তার এই ধর্মান্ধ মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভিডিও ক্লিপটি শেয়ার করে তিনি বলেন যে, বিজেপির নেতৃত্ব এখন খোলামেলাভাবে মুসলমানদের সম্পর্কে সেভাবে কথা বলছে ঠিক যেভাবে নাৎসিরা ইহুদিদের সম্পর্কে বলেছিল। পাকিস্তানের পিটিআই নেতা আলী হায়দার জায়েদীও এই ভিডিও ক্লিপটি টুইট করে সুব্রামানিয়ামের করা মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তার কথাগুলি ‘পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী এবং বর্ণবাদী’।

এদিকে, খোদ ভারতেও সমালোচনার শিকার হয়েছেন সুব্রামানিয়াম। দ্য কারভান-এর সম্পাদক বিনোদ কে জোস ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-সিএএ, দিল্লির সহিংসতা এবং করোনাভাইরাসজনিত কারণে দরিদ্রদের ব্যাপকভাবে আত্মগোপনের বর্তমান পরিস্থিতি সামনে রেখে সুব্রামানিয়ামের মন্তব্যে প্রেক্ষিতে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘ভারতে এই বিদ্বেষপূর্ণ বাণীর ব্যবহারিক প্রদর্শনী চলছে কি?’

এর আগে, কংগ্রেস এই আইন এবং সুব্রামানিয়াম স্বামীর কট্টরতার সমালোচনা করায় তিনি সোনিয়া গান্ধীকে ‘সত্যিকারের নাজি’ হিসাবে অভিহিত করেন। বেঙ্গালুরুতে এক জনসভায় সুব্রামানিয়াম বলেন, ‘অনেকে সিএএ’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, কিন্তু তারা বিলটি পড়েননি। আমি মনে করি বেশিরভাগ কংগ্রেস লোক পড়তে বা লিখতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘বিলটি কী? ধর্মের কারণে যারা নিপীড়িত হয়েছিল এবং পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে এসেছিল, তারা এখনো অবৈধ অভিবাসী। তাদের কোন দলিল না থাকায় তারা চাকরি পেতে পারে না।’
সুব্রামানিয়াম আরো বলেন, ‘৭০ বছর ধরে কংগ্রেস তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছে। কিন্তু তারা এটি কার্যকর করেনি। সিএএ’র কারণে আমাদের (ভারতীয়) মুসলিম সংখ্যালঘু এবং তাদের নাগরিকত্ব মোটেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না। ধর্মের কারণে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে মুসলমানরা নিপীড়িত হচ্ছে না। সে কারণে মুসলমানদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।’ ভারতে বিতর্কিত সিএএ-কে কেন্দ্র করে দিল্লিতে গেল ফেব্রæয়ারির সহিংস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালে সুব্রাসানিয়াম এ মন্তব্য করেছিলেন।

উল্লেখ্য, নয়াদিল্লির সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয় এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, দিল্লি পুলিশ ‘সম্মিলিতভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছিল’ এবং ‘সরাসরি হিন্দু আক্রমণকারীদের’ সহায়তা করেছিল ‘যারা মারাত্মক দাঙ্গার সময় মুসলমানদের এবং তাদের বাড়িঘরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে।’ সূত্র : ডন।



 

Show all comments
  • jack ali ৫ এপ্রিল, ২০২০, ১২:১৩ পিএম says : 0
    O'Allah destroy Modi BJP and his supporter with corona Virus. Ameen
    Total Reply(0) Reply
  • ling ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১:৪৮ এএম says : 0
    এই ফকিরনির কথা সুনে মাথা গরম হয়।ওই বেটা ভারত ত মুসলিম রাই শাশন করসে হাজার বসর ধইরা।মুসলিমরাই ভারতরে শক্তিশালী করসে আর হিন্দুগুলি ইংরেজদের দালালি করসে। কই অন্য মুসলিম দেস গুলোতে ত এত প্রবলেম হয়না।আর ভারতের সাথে সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ