মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে সাংবাদিকতা সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, তবে সাংবাদিকরা বলেছেন, নয়াদিল্লিতে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে গত সপ্তাহের মারাত্মক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় গণমাধ্যমের উপর হামলা দেখায় যে, পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
একজন রিপোর্টার গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন, আরেকজন তার দাঁত হারিয়েছেন এবং আরও অনেকে অভিযোগ করেছেন যে, হিন্দুত্ববাদীরা তাদের ধর্মের প্রমাণ চেয়েছিল এবং তাদেরকে সহিংসতার খবর সংগ্রহে বাধা প্রদান করেছিল।
বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইনের জন্য কয়েক মাস ধরে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছিল যদিও কর্তৃপক্ষ ৭২ ঘণ্টার সংঘর্ষে ৪৬ জনের প্রাণহনি ও শতাধিক আহতের বিষয়ে কোন সরকারী বিবৃতি এখনো দেয়নি। তারা হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা সাংবাদিক নিগ্রহের অভিযোগের বিষয়েও কোন মন্তব্য করেনি।
তবে বিশেষজ্ঞরা এবং সাংবাদিকরা বলেছেন যে, সহিংসতার খবর সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং তার পরে সমালোচনামূলক সংবাদ প্রকাশে রাষ্ট্রীয় বাধা, এগুলো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু-জাতীয়তাবাদী সরকারের অধীনে ভারতে বাক স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের লক্ষণ।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া পত্রিকার ফটোগ্রাফার অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় সংবাদ সংগ্রহের সময় নিগৃহীত হয়েছিলেন। দাঙ্গাবাজরা তার ‘প্যান্ট খুলে’ ধর্ম পরীক্ষা করতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ভারতে সাংবাদিকদের তাদের কাজের জন্য সবসময় টার্গেট করা হয়েছে, মোদির অধীনে ‘আক্রমণকারীরা অনেক বেশি বেপরোয়া, হিংস্র এবং নির্ভীক।’
ধর্মের প্রমাণের অনুরূপ ঘটনা ঘটেছিল গুজরাটে ২০০২ সালে মুসলিমদের উপর ‘সহিংসতা’ চালানোর সময়। সে সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদি ছিলেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সে সময় মোদির বিরুদ্ধে মুসলমানদের বিরুদ্ধে চালানো তান্ডব সমর্থন করার অভিযোগ তোলা হয়েছিল, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র তার উপরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এজন্য মোদির সমর্থকরা সাংবাদিক ও সমালোচকদের দায়ি করেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত ‘বিশেষ তদন্তে’ তাকে সেই অবিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
এ বিষয়ে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ভারতের দাঙ্গার ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ আশুতোষ বর্ষনি বলেন, মোদী এবং তার অনুসারীরা বিশ্বাস করেন যে ‘সমালোচক মিডিয়া’ তাদের হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনায় হস্তক্ষেপ করছে।
সরকারী মুখপাত্র এবং ফেডারেল প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর পরিচালক কুলদীপ ধাতওয়ালিয়া বলেন যে, তিনি দিল্লিতে সাংবাদিক নিগ্রহের কোন অভিযোগ পাননি।
নিউইয়র্কের কাশ্মীরি কার্টুনিস্ট মীর সুহাইল দিল্লির ঘটনা নিয়ে মোদির বিরুদ্ধে একটি কার্টুন একে সমালোচিত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটারসহ সব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তার কার্টুনটি সরিয়ে ফেলা হয়। সুহাইল বলেন, এই কারণেই তাকে নয়াদিল্লির একটি সংবাদ সংস্থায় চাকরি ছেড়ে যেতে হয়েছিল। তার আশঙ্কা ভারতে ফিরে আসলে তাকে কারাগারে যেতে হবে।
ভারতের বৃহত্তম ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হটস্টার আমেরিকান শো ‘আজ রাতে জন অলিভারের সাথে’ এর একটি এপিসোডও সরিয়ে নিয়েছে, যেখানে গত সপ্তাহে ভারতে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে মোদির সমাবেশ নিয়ে বিদ্রুপ করা হয়েছে এবং নয়াদিল্লিতে সহিংসতার বিষয়ে ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়ারও সমালোচনা করা হযেছিল। এ বিষয়ে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৌরভ সিং বলেন, ‘কার্টুন ও এপিসোডের সেন্সরশিপ নিয়ে সরকারের কিছুই করার নেই।’ সূত্র : এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।