Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দিল্লির সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৪৬

আরও ৩ লাশ উদ্ধার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন আগে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এখন খানিক স্তিমিত। সেখানে নতুন করে সহিংসতা না ঘটলেও পরিস্তিতি ছিল থমথমে। গতকাল সহিংসতার শিকার আরও তিনটি লাশ গতকাল উদ্ধার করা হয়েছে। গোকুলপুরীর নর্দমা থেকে একটি ও ভাগীরথী খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি লাশ। এর ফলে দিল্লির সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হল ৪৬। আহত হয়েছেন ৩ শতাধিক মানুষ।

গতকাল উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এর আগে, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর অফিসার অংকিত শর্মার দেহও উদ্ধার হয়েছিল নর্দমা থেকে। তার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, হিংসাকারীরা নৃশংসভাবে ৪০০ বার কোপ মেরেছিল।

জানা গেছে, ভারতের রাজধানীর সহিংসতার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৬৭টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৮৮৫ জনকে। দিল্লি চেম্বার অফ কমার্স হিসেব করে দেখেছে, এই হিংসার ফলে প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। হিংসার আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে ৯২টি বাড়ি, ৫৭টি দোকান, ৫০০ গাড়ি, ৬টি গুদামঘর, দুটি স্কুল, চারটি কারখানা ও চারটি ধর্মীয় স্থান। এ দিকে, দিল্লির শাহীন বাগে আবার জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। রোববার সেখানে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ফের জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। শীর্ষ এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, শাহীন বাগ এলাকার জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার নিকর্টবর্তী স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যুগ্ম কমিশনার ডিসি শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ‘আগাম সতর্কতা নিতে অতিরিক্ত মাত্রায় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা এবং কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

হিন্দু সেনা ১ মার্চের মধ্যে শাহীন বাগ খালি করে দেয়ার ডাক দিয়েছিল। তবে পুলিশ এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করায়, শনিবারই তারা তাদের বিক্ষোভ কর্মসুচি প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেছে। তা সত্তে¡ও কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় দিল্লি পুলিশ। আগাম সতর্কতা নিতে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে শাহীন বাগকে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্ব দিল্লির প্রায় সর্বত্রই যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কাজে যাওয়া শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। কিছু কিছু দোকান খুলেছে। যদিও এখনও পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের চিহ্ন রয়ে গিয়েছে চারপাশে। নীল রঙের উর্দি পরিহিত র‌্যাফ মোতায়েন রয়েছে বহু জায়গায়। রয়েছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় আধা সেনা। উপদ্রুত অঞ্চলে ক্রেন ও বুলডোজারের সাহায্যে রাস্তা জুড়ে পড়ে থাকা পোড়া গাড়ি ও পথের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করা হচ্ছে।

তবে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি এখন একেবারে নির্জন। কেননা অধিকাংশ বাসিন্দাই এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ওই সব এলাকায় স্বাভাবিকতা ফিরতে কিছু দিন সময় লাগবে। আইপিএস কর্মকর্তা এসএন শ্রীবাস্তবকে অমূল্য পট্টনায়েকের পরিবর্তে দিল্লির পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাঁকে ওই দায়িত্বে রাখা হয়েছে।

বহু মানুষ অভিযোগ জানান, সিএএ সমর্থকদের সঙ্গে সিএএ বিরোধীদের সংঘর্ষ শুরু হলে সময় ন্য‚নতম পুলিশি ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। এমনকী, সহিংসতা শুরুর একদিন পরেও উত্তর-পূর্ব দিল্লির বহু স্থানেই অল্প সংখ্যক মোতায়েন পুলিশ মোতায়েন ছিল। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা সাম্প্রদায়িক ঐক্য বাড়াতে শান্তি বৈঠক করেছে। গঠন করা হয়েছে শান্তি কমিটি। সূত্র : টিওআই, এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ