Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্যান্ডার্স বনাম ট্রাম্পেই ঘুরপাক খাচ্ছে আলোচনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

নিউ হ্যাম্পশায়ারের প্রাইমারিতে জেতার পর এই মুহূর্তে ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সকেই যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, নভেম্বরের নির্বাচনে তিনিই হয়তো রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে পারবেন। বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেবেন, তা তো ভোটেই নির্ধারিত হবে। কিন্ত ৭৮ বছর বয়সী, স্বঘোষিত ‘সোশাল ডেমোক্রেট’ স্যান্ডার্সকে মনোনয়ন দিতে তার নিজের দলই প্রস্তুত কি না, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন জোরেশোরেই এ প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। ভারমন্টের সিনেটর নিজের নির্বাচনী প্রচারণাকে অ্যাখ্যা দিচ্ছেন ‘বিপ্লব’ হিসেবে; এবং এই মুহুর্তে, এটি যেন রক দলগুলোর ঘুরে ঘুরে কনসার্ট করার অনুভ‚তিই দিচ্ছে। স্যান্ডার্সকে এখন ভ্যাম্পায়ার উইকএন্ড কিংবা দ্য স্ট্রোকসের মতো ব্যান্ডগুলোর ‘অদ্ভ‚তগোছের শীর্ষ নেতা’ মনে হচ্ছে। দুটো ব্যান্ডই সম্প্রতি স্যান্ডার্সের বিভিন্ন প্রচারণায়, সভা-সমাবেশে বাজিয়েছে। যদিও উপস্থিত হাজার হাজার জনতা তাদের উল্লাস আর সজোরে চিৎকারগুলো সবসময় রেখে দিয়েছিল ব্রুকলিন অঞ্চলের উচ্চারণে কথা বলা পাকা চুলের ডেমোক্রেট সিনেটরের জন্য। প্রায় বছরখানেক ধরে চলা একের পর এক সমাবেশ, বৈঠক, বিতর্ক আর মাঠ পর্যায়ের কাজের পর তার প্রচারণা এখন প্রবেশ করছে লাগামহীন দৌড়ে; এখন থেকে একটার পর একটা অঙ্গরাজ্যে ককাস কিংবা প্রাইমারি হবে। সুপার টুইসডের মতো কিছু কিছু দিনে তো একসঙ্গে হবে কয়েকটি লড়াই। মাত্র কয়েক মাস আগেও হৃদরোগের সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৭৮ বছর বয়সী সিনেটরের জন্য যা হবে সত্যিকারের এক অগ্নিপরীক্ষা। “বার্নি স্যান্ডার্সই একমাত্র প্রার্থী যিনি আমাকে এটা বিশ্বাস করার সাহস যুগিয়েছেন যে কেবল সত্যিকারের পরিবর্তনের দাবি জোরে উত্থাপন করাই নয়, সেটা বাস্তবায়ন করাও সম্ভব। যদি জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে আমরা ফের জনগণের হাতেই ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে পারবো,” বলেছেন লং আইল্যান্ড থেকে নিউ হ্যাম্পশায়ারে এসে স্যান্ডার্সের প্রচারণায় সহযোগিতা করা আলেথা শাপিরো। সমর্থক ও স্বেচ্ছাসেবকদের এমন চেষ্টার পরও আইওয়াতে কাক্সিক্ষত ফল মেলেনি। স্যান্ডার্স সেখানে সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেও ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সাউথ বেন্ডের সাবেক মেয়র পিট বুটিগিগ জিতে নিয়েছেন বেশি প্রতিনিধি বা ‘ডেলিগেট’। এমনকী নিউ হ্যাম্পশায়ারের প্রাইমারিতে জেতার পর সেখানেও বুটিগিগ ও স্যান্ডার্সের মুঠোয় সমান সংখ্যক ডেলিগেটই জুটেছে। দুই অঙ্গরাজ্যেই ভোট বেশি পেয়েছেন স্যান্ডার্স; কিন্তু ডেলিগেটে সামান্য এগিয়ে সাউথ বেন্ডের সাবেক মেয়র। ভারমন্টের সিনেটর অবশ্য এই হিসাবকে গণায়ই ধরছেন না। দুই অঙ্গরাজ্যেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন তিনি; থামেননি এখানে, তার লক্ষ্য যে আরও সামনে। “যে কারণে আমরা আজ নিউ হ্যাম্পশায়ারে জিতেছি, গত সপ্তাহে আইওয়াতে জিতেছিলাম, তা হচ্ছে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবকের কঠোর পরিশ্রম। আমি বলছি, আজকের এই জয় দিয়েই ডনাল্ড ট্রাম্পের শেষের শুরু হল,” নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাইমারির ফল ঘোষণার পর বলেছিলেন স্যান্ডার্স। তার ওই কথার পর কলেজ জিমনেসিয়ামের ভিড় যেন গর্জে উঠেছিল। সমর্থকদের উল্লাসে এত জোর ছিল, যেন তারা মনে করছিলেন, তাদের চিৎকারের শক্তিই ‘সোশাল ডেমোক্রেট’ স্যান্ডার্সকে সামনের ককাস ও প্রাইমারিগুলোতে জেতাতে সাহায্য করবে। “এটা ছিল রোমাঞ্চকর। আমার মনে হয়েছিল নির্বাচনের নখ কামড়ানো উত্তেজনার পর যেন স্বস্তি এল,” বলেছেন বোস্টনের এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীত শিক্ষক স্কট স্যান্ডভিক। বোঝাই যাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত ভারমন্টের সিনেটর যদি ডেমোক্রেট সনাতনী কাঠামোর বিপরীতে দাঁড়িয়ে তার ‘বিপ্লবকে’ এগিয়ে নিতে পারেন, তাহলে নিউ হ্যাম্পশায়ার ওই অগ্রযাত্রার স‚চনাবিন্দু হিসেবে গর্ব করতে পারবে। চার বছর আগেও আইওয়াতে হিলারির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল স্যান্ডার্সের; সেবারও নিউ হ্যাম্পশায়ারে জিতেছিলেন তিনি। এখনকার চেয়ে সেবারের জয়টা তুলনামূলক বড়ই ছিল। এরপর নেভাদা আর সাউথ ক্যারোলাইনার মতো কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত অঙ্গরাজ্যগুলোতে পরাজয়ের পর স্যান্ডার্সের জয় এসেছিল তুলনাম‚লক বেশি শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত নিউ ইংল্যান্ডে। মিশিগান ও উইসকনসিনে ধরাশায়ী হওয়া হিলারিকে অবশ্য এর পরও কয়েক মাসের মনোনয়ন দৌড়ে স্যান্ডার্সের চাপই মোকাবেলা করতে হয়েছে। ২০১৬ সালে লড়াইটা ছিল মূলত এ দু’জনের। তুলনায় এখন স্যান্ডার্স বেশ শক্ত অবস্থানে। কেননা, তার বিরোধীরা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে

১৪ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ