পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিম ভোটাররা এবার একটা ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছেন বলে মনে করছেন দেশটির রষ্ট্রাবিজ্ঞানীরা। এবারই প্রথম মুসলমানরা একটি গ্রুপ হিসাবে স্বতন্ত্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে আবির্ভূত হয়েছেন বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল ইকোনমি বিভাগের অধ্যাপক শারিন হেলোরান । গত বুধবার নিউ ইয়র্কস্থ ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি। ওদিকে, মুসলিম ভোটাররা সুইং স্টেইট তথা দোদল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে জয় পরাজয়ে ফ্যাক্টর হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন এমন খবর বেরিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা, এনবিসি নিউজ, ওয়ালস্ট্রীট জার্নালসহ আরো বেশ কয়েকটি শক্তিশালী গণমাধ্যমে। গত বুধবার ফরেন প্রেস সেন্টার আয়োজিত ওই ব্রিফিংয়ে নয়াদিগন্তের এ প্রতিনিধি জানতে চান, আপনি নিশ্চয়ই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য সম্পর্কে অবগত আছেন। এমনি বাস্তবতায় মুসলিম ভোটারদের ক্ষেত্রে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি। বিশেষ করে মুসলিম ভোটার উপস্থিতির ক্ষেত্রে এবং এ নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে। জবাবে অধ্যাপক শারিন বলেন, মুসলিম ভোটাররা এর আগে কখনো ব্লক ভোট হিসেবে উপস্থাপিত হননি। তাদেরকে কখনো বিবেচনা করা হতো এশিয়ান হিসেবে। কখনোবা অন্য কোন অঞ্চলের ভোটার হিসেবে। যারা বেশিরভাগই বিক্ষিপ্তভাবে বসবাস করতো। মুসলিম ভোটারদের বিষয়টি হিসপানিক কিংবা কালো বর্ণের ভোটারদের মতো নয়। আর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম ভোটারদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করাও কঠিন। কিন্তু এটিই প্রথম নির্বাচন যেখানে এ ধারণাটির পরিবর্তন হয়েছে। এটি হয়েছে এ জন্য নয় যে ব্যবসায়িক চুক্তি, শিক্ষানীতি কিংবা কর হ্রাস এ সংক্রান্ত কারণে। বরং এ পরিবর্তনটি হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (ডোনাল্ড ট্রাম্প) এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ব্যক্তিত্বের কারণে। আমি মনে করি পুরো দেশে না হলেও কিছু কিছু নির্বাচনী এলাকায় এ মুসলিম ভোটাররা জয় পরাজয়ে দারুণভাবে ভূমিকা রাখবেন। উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম প্রবেশাধিকার বন্ধ করবেন ঘোষণা দেবার পর পুরো যুক্তর্রা জুড়ে মুসলিমদের উপর হামলা বৃদ্ধিসহ বাড়তে থাকে নানা ধরনের ঘটনা। এমনি বাস্তবতায় ইউএস কাউন্সিল অন মুসলিম অর্গানাইজেশন পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১০ লাখ ভোটার নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়। যাতে সংগঠনটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হন। ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন অনুসারে সারা দেশে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা ৩৩ লাখের বেশি। তবে কাউন্সিল অন ইসলামিক রিলেসন (কেয়ার) এর তথ্য মতে রেজিস্টারে ভোটারের সংখ্যা ৮০ লাখের উপরে। মোট ভোটারের তুলনায় এটি নিতান্ত কম অংশ হলেও এবারের নির্বাচনে যেসব অঙ্গরাজ্যগুলোর ফলাফল আগের থেকে আঁচ করা যায় না সেসব এলাকায় মুসলিম ভোটারা ফ্যাক্টর হয়ে উঠবেন বলে মনে করে এ সংবাদ মাধ্যম। পিউ রিসার্চ সেন্টারের ভাষ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা মোট ভোটারের ২ শতাংশের বেশি নয়। কিন্তু এসব ভোটারদের বেশিরভাগই ফ্লোরিডা, ওহাইও, ভার্জিনিয়ার মতো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় বসবাস করেন। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক জন এসপোসিটো মনে করেন, যখন ভোট শেষ হয়ে যাবে তখন দেখা যাবে এসব এলাকার ভোটাররা নির্বাচনের জয় পরাজয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যদিও তারা কমিউনিটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। কাউন্সিল অন আমেরিকান রিলেশন (কেয়ারের) তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের তিনভাগের দুইভাগ ভোটারই ডেমোক্র্যাট সমর্থক। আর রিপাবলিকান সমর্থক ভোটারদের মাত্র ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ লোক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিবে। সুতরাং এতোসব পরিসংখ্যান ও জরিপ গবেষনা বিশ্লেষণে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন মুসলিম ভোটারের বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে দারুণভাবে উপস্থাপিত হবে। এনবিসি নিউজ, ওয়ালস্ট্রীট জার্নাল, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।