শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
দিন বাড়ছে, মেলায় বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। বাড়ছে বইয়ের সংখ্যা। জমতে শুরু করেছে বইমেলা। গত কয়েক দিনের তুলনায় গতকালের বইমেলার চিত্র ছিল ভিন্ন। মেলায় দল বেঁধে বইপ্রেমীদের প্রবেশ বলে দিচ্ছিল কেমন হবে বিকেলের বইমেলা। সন্ধ্যার আগেই মেলার সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণ অনেকটা লোকারণ্য। অন্য দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তেমন সমাগম ছিল না। কারণ সেখানে বেশির ভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকায় মেলায় আগতদের বেশির ভাগ ছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। তাদের পছন্দের শীর্ষে উপন্যাস ও কবিতার বই। শিশুদের পছন্দ কার্টুন, ভ‚তের ও ছড়ার বই। এছাড়াও আঁক-আঁকির বইও কিনতে দেখা গেছে। সিসিমপুরের স্টলে সবসময় শিশুদের ভিড় লেগেই থাকে। প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলা শুরু হয় বেলা ১১টা থেকে। এই দুইদিন শিশুদের ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া অনেককে দেখা যায় লেকের পাড়ে বই পড়তে এবং আড্ডা দিতে।
এবারে বেড়েছে মেলার পরিসর ও অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। সঙ্গে বেড়েছে প্রবেশদ্বার। নতুন করে যুক্ত হয়েছে ফুডকোর্ট। পার্কের আবহ, বৃক্ষ ও প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্তি ঘটিয়ে নতুনত্ব আনা হয়েছে অঙ্গসজ্জায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবারের মেলা বঙ্গবন্ধুময়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা সম্প্রসারণের পর থেকে মেলার আয়তন ক্রমশ বেড়েছে। সে ধারাবাহিকতায় এবারও বেড়েছে বিস্তৃতি। বাংলা একাডেমির সামনে থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথ পর্যন্ত মেলার বিস্তৃতি। বাংলা একাডেমির সামনের প্রবেশ পথের সঙ্গে টিএসসি সংলগ্ন প্রবেশপথ যুক্ত হওয়ায় এবার মেলার উদ্যান অংশের প্রবেশপথ দুটি।
গত বছর যেখানে ছিল ৬১৯টি ইউনিট, এবার সেখানে ৭২৩টি ইউনিট। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণও বেড়েছে ৪০টি। গত বছর ছিল ৩৭০টি প্রতিষ্ঠান, এবার ৪১০টি। এর মধ্যে প্যাভিলিয়ন ২৩টির স্থলে এবার ৩৪টি। শিশু চত্বরের আয়তনও বেড়েছে। শুধু বইয়ের মেলা হিসেবে এই মেলা আয়োজন হলেও এবার যুক্ত হয়েছে ফুডকোর্ট। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের দুই প্রান্তে দুটি ফুডকোর্ট। প্রতিটি ফুডকোর্টে ২০টি করে খাবার দোকান রয়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের বইমেলা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করা হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চের আলোচনার বিষয়ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। মেলার উদ্বোধনী দিনে বাংলা একাডেমি থেকে বঙ্গবন্ধুর তৃতীয় গ্রন্থ ‘আমার দেখা নয়া চীন’ প্রকাশিত হয়। মোড়ক উন্মোচন করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেট্রো রেলের কাজের কারণে শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। এ কারণে মেলার বাংলা একাডেমি অংশ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের মধ্যে যে বিস্তৃত ফাঁকা জায়গা থাকত এবার তা না থাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে মেলার পরিসর বাড়ানো হয়।
গতকাল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ঢুকে দেখা যায়, স্টলগুলোর সামনে ভিড়। বই নেড়েচেড়ে দেখছেন, পছন্দ হলে কিনছেন। রাজধানীর টিকাটুলি থেকে সপরিবারে এসেছিলেন চাকরিজীবী তানিয়া। সঙ্গে তার ছোট বোন ও প্লে শ্রেণিতে পড়া ছেলের জন্য কিনেছেন বই। ছেলের জন্য ভ‚তের বই কিনেছেন অনেকগুলো। আরও কিনেছেন ছড়ার বই। মেলার আয়োজন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এবার স্পেস বেড়েছে। ভিড় এড়িয়ে চলাচল করা যাচ্ছে। এবারের সার্বিক ব্যবস্থাপনাও বেশ ভালো।
বই বিক্রেতারা জানান, এখন পর্যন্ত উপন্যাসের ক্রেতাই বেশি। এর মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন ও আনিসুল হকের বইয়ের পাঠকই বেশি।
পাঠক সমাবেশের এক বিক্রেতা জানান, এবারের মেলায় তাদের যত বই প্রকাশ হয়েছে তার মধ্যে অনুবাদ বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। সময় প্রকাশনের বিক্রেতা জানান, এবারে তারা বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, প্রবন্ধ ও গবেষণা বিষয়ে একাধিক বই প্রকাশ করেছেন। তবে অপাতত তাদের স্টলে হুমায়ূন আহমেদ ও জাফর ইকবালের বইয়ের ক্রেতা বেশি।
প্রথমা প্রকাশনের এক বিক্রেতা জানান, তাদের অনেক বই এলেও আজিজুর রহমানের ‘আমার সমাজতন্ত্র’ বই ভালো চলছে। এ ছাড়া পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্সের এক বিক্রেতা জানান, তাদের স্টলে শিশুদের বইয়ের চাহিদা বেশি।
সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের ছোটদের বই ‘ইলিয়ড ও ওডিসি হোমার’ এখন মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। মূল্য ২০০ টাকা। স্বরবৃত্ত প্রকাশনি থেকে মুদ্রিত। স্টল নং-৫৫০-৫১।
যতই দিন গড়াচ্ছে মেলায় বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।