মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে কমছে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার। ষাট বা সত্তরের দশকে দেশটিতে যে হারে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ত, এখন আর সে হারে বাড়ছে না। ভারতের আদমশুমারির তথ্যের বরাত দিয়ে এখবর দিয়েছে আনন্দবাজার।
ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নীতি আনতে মোদি সরকারকে জোর দিতে বলছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস। তবে তাদের লক্ষ্য মুসলিমদের দিকে। ক্ষমতাসীন বিজেপির কয়েকজন নেতাও মুসলিমদের সন্তান বেশি হওয়ার বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন।
কিন্তু ভারতে দশ বছর অন্তর যে আদমশুমারি হয়, তার পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি দশ বছরে মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধাপে ধাপে কমে আসছে।
গত ১৫ আগস্ট লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, প্রত্যেকের পরিবারকে ছোট রাখা উচিত। সকলের জন্য শিক্ষা-স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা না গেলে দেশ সুখী হতে পারে না। মোদী তার লালকেল্লার বক্তৃতায় বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের দিকে আঙুল তোলেননি। কিন্তু বলেছিলেন, সমাজের একটি অংশই পরিবারের জন্ম সংখ্যা কম রাখছে।
আরএসএস কোনো রাখঢাক না করেই জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য মুসলিমদের দায়ী করছে। আরএসএসের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ১৯৫১ থেকে ২০১১- দেশের মোট জনসংখ্যায় মুসলিমদের হার ৯.৮ শতাংশ থেকে ১৪.২৩ শতাংশে পৌঁছেছে।
কিন্তু দেশটির আদমশুমারির হিসেব বলছে, ২০০১ এর তুলনায় ২০১১ সালে মুসলিমদের সংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে তার আগের দশকে, অর্থাৎ ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০০১ সালে মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ২৯.৫ শতাংশ। আগের দশকগুলিকে এই হার ৩০ শতাংশের বেশি।
২০১১ আদমশুমারিতে ভারতের জনসংখ্যা : মোট ১২১.০৯ কোটি, হিন্দু ৯৬.৬৩ কোটি (জনসংখ্যার ৭৯.৮%), মুসলিম ১৭.২২ কোটি (জনসংখ্যার ১৪.২%)
জনসংখ্যা বৃদ্ধি কি আদৌ ভারতের চিন্তার কারণ? দ্বিতীয়বার মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গত জুলাইয়ে কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সমীক্ষা কিন্তু উল্টো কথাই বলেছিল। আর্থিক সমীক্ষা বলেছিল, গোটা দেশে জন্মের হার কমছে। তার ফলে দেশের জনসংখ্যায় বয়স্কদের হার বেড়ে যাচ্ছে।
নারীরা মাথাপিছু গড়ে যতজন সন্তানের জন্ম দেন, তাকেই জন্মের হার বলে। তথ্য মতে ভারতে জন্মের হার ২.১ হলে জনসংখ্যা একই থাকবে। কিন্তু আর্থিক সমীক্ষায় মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, ২০২১ সালে এই জন্মের হার ১.৮ শতাংশে নেমে আসবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বেশকিছু রাজ্যে এখনই জন্মহার ১.৬ থেকে ১.৭-এর ঘরে। ফলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এই সব রাজ্যের ২০ শতাংশ মানুষের বয়স হবে ৫৯ বছরের বেশি।
আরএসএস নেতাদের আশঙ্কা, ভারতে হিন্দুরা একসময় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। আরএসএসের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ১৯৫১ সালে মুসলিম ছাড়া বাকি ধর্মের মানুষেরা ছিলেন জনসংখ্যার ৮৮ শতাংশ। ২০১১ সালে তা ৮৩.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন দেশে আদমশুমারির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সেন্সাস কমিশনারের কর্তারা।
তাদের যুক্তি, ২০১১ সালের আদমশুমারিতে দেখা গিয়েছিল, তার আগের দশকে মুসলিমদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ২০০১ এর তুলনায় ২০১১তে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১৭.৭ শতাংশ। মুসলিমদের ২৪.৬ শতাংশ। কিন্তু হিন্দুদের বৃদ্ধির হারও ছিল ১৬.৮ শতাংশ। মুসলিমরা জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ হলে হিন্দুরা ৭৯.৮ শতাংশ। প্রতিটি আদমশুমারিতেই দেখা যাচ্ছে, হিন্দুদের মতোই মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমে আসছে। ফলে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
এদিকে ভারতে আদমশুমারি বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, শিক্ষার হার, আয় বাড়লেই পরিবার পরিকল্পনার প্রভাব দেখা যায়। পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের ভূমিকা বেড়ে যায়। মুসলিমদের পুরুষ-নারীর অনুপাতও বেড়েছে। ২০০১ সালে প্রতি হাজার জন মুসলিম পুরুষে নারীদের সংখ্যা ছিল ৯৩৬ জন। ২০১১ সালে তা বেড়ে ৯৫১ হয়েছে। হিন্দু-খ্রিস্টানদের মতো মুসলিমদের মধ্যেও শিক্ষার হার বেড়ে যাওয়ায় জন্মের হার কমতে শুরু করেছে। সূত্র : আনন্দবাজার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।