মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার একদিনের ম্যাচ উত্তাপ ছড়িয়েছিল আগেই। তারমধ্যেই শোনা গেল ‘নো এনআরসি, নো ক্যাব’ স্লোগান। নাগরিকত্ব আইনের আঁচ এসে পড়ল ২২ গজেও। মঙ্গলবার ম্যাচের আগে কালো রঙের পোশাকে স্টেডিয়ামে ঢোকা যাবে না বলে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের তরফে। নিরাপত্তারক্ষার খাতিরেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছিল স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। তা সত্তে¡ও এদিন ম্যাচ চলাকালীন দর্শক আসনে দেখা যায় ‘নো এনআরসি, নো ক্যাব’ লেখা টিশার্ট পরে বিক্ষোভ দেখান দর্শকদের একাংশ। তারা নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে স্লোগানও দিতে শুরু করেন। স্টেডিয়ামে পালটা মোদি সেøাগানও দিতে শুরু করেন কয়েকজন। এরপরেই ওই প্রতিবাদী দর্শকদের স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা।
এনআরসির বিপক্ষে ৭৭ শতাংশ
নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে জাতিসঙ্ঘ বা মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার পর্যবেক্ষণে গণভোটের দাবি তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে মন্তব্যের ব্যাখা করে তিনি জানিয়েছিলেন, জনমত যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভোটের কথা বলেছিলেন। কার্যত একই পথে হেঁটেই এনআরসি-সিএএ’ নিয়ে জনমত সমীক্ষার আয়োজন করেছে এক বেসরকারি সংস্থা।
‘আপনি কি এনআরসি-সিএএকে সমর্থন করেন?’ অনলাইনে নেটিজেনদের কাছে এমনই প্রশ্ন তুলে ধরেছে ইন্ডিয়াপোল ডটইন। আর উল্লেখযোগ্য সাড়াও পেয়েছে ওই ওয়েবসাইট। এই প্রতিবেদন পাবলিশের আগে পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ ভোট পড়েছে। আর যার মধ্যে ৭৭ শতাংশ অর্থাৎ, প্রায় ২২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৪৫ জনই সিএএ-এনআরিস-র বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। পক্ষে ভোট পড়েছে ২৩ শতাংশ অর্থাৎ ৬ লাখ ৭৭ হাজার ১০ (প্রায়)। আরও বেশি সংখ্যক ভোটের জন্যও ওই ওয়েবসাইটের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে নেটিজেনদের কাছে।
যারা সিএএ’র বিরোধিতা করছে তারা কি জানে তারা আসলে পাকিস্তানের ১৯৪৭ থেকে হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টনদের হত্যা, রেপ, ধর্ম পরিবর্তন করে সংখ্যা ২৮ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করাকে সমর্থন করছে?
প্রসঙ্গত, স¤প্রতি একই ধরনের সমীক্ষা করেছিল এক বাংলা ওয়েবসাইট। সেখানেও অধিকাংশই নাগরিক আইন-জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরোধিতায় মত দিয়েছিল। যদিও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে করা এই সমীক্ষায় গোটা দেশের উল্লেখযোগ্য তথ্য উঠে এসেছে।
সিএএ পাশের পর চার সপ্তাহের কাছাকাছি সময় কাটলেও দেশজুড়ে প্রতিবাদে ভাটা পড়েনি। সিএএ নিয়ে বিক্ষোভের জেরে বিজোপি শাসিত রাজ্যগুলির একাধিক শহরে প্রায়ই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রতিবাদ নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই সরকারের। তবে নেটপাড়ায় সিএএ-এনআরসি নিয়ে গণভোট থেকে যা ইঙ্গিত মিলছে, তাতে ভবিষ্যতে মাথাব্যথার আশঙ্কাই দেখছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
নিজের কেন্দ্রেই বিক্ষোভের মুখে বিজেপি এমপি
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ’র সমর্থনে প্রচার করতে গিয়ে বাধার মুখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরি। গতকাল সকাল থেকেই রায়গঞ্জের একাধিক ওয়ার্ডে ঘুরে প্রচার করছিলেন তিনি। অভিযোগ, এলাকার কাউন্সিলরের মদতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা মন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে গাফিলতির অভিযোগ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে গোটা রাজ্যজুড়ে প্রচার করছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। গতকাল পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দ্রা কলোনিতে যান তিনি। সেখানে সিএএ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বোঝান। এরপর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশান কলোনির বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে লিফলেট বিলি এবং প্রচার করছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেখান থেকে বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা দেয়ার জন্য গাড়িতে উঠে পড়েন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় মহিলা এবং যুব তৃণমূল কর্মীরা তার গাড়ি ঘিরে ধরে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরি বলেন, ‘তৃণমূল কাউন্সিলর অর্ণব মন্ডলের মদদে পরিকল্পনামাফিক আমাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। বিরোধীরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। চতুর্দিকে আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে বিরোধীরা। আমাকে ঘিরে বিক্ষোভ অপপ্রচারের ফলেই হয়েছে’। পুলিশও সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেনি বলেও অভিযোগ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। তার দাবি, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরাই প্রথম দফায় বিক্ষোভের আঁচ স্তিমিত করে। তারপর বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দেবশ্রী চৌধুরি ঘটনাস্থল ছেড়ে যাওয়ার পর ওই এলাকায় এসে পৌছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি বাড়ি বাড়ি ঘুরে সিএএবিরোধী প্রচার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতা রীতেশ তিওয়ারি। তিনিও অভিযোগ করেন, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা এই কান্ড ঘটিয়েছে। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল রায়গঞ্জে। এবার নিজের কেন্দ্রেই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রায়গঞ্জের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরি।
এনআইএ আইন বাতিল দাবিতে সুপ্রিম দ্বারে কংগ্রেস-শাসিত ছত্তিশগড় সরকার
২০০৮ সালের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা আইন অসাংবিধানিক ঘোষণা করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কংগ্রেসশাসিত ছত্তিশগড়ের সরকার। তারাই প্রথম এনআইএ আইনকে চ্যালেঞ্জ জানাল। মঙ্গলবারই সংবিধানের ১৩১ ধারা মেনে নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কেরালা সরকার। তার ঠিক পরদিনই সেই ১৩১ ধারাতেই এনআইএ আইনকে বাতিল করার দাবি জানিয়ে ছত্তিশগড় সরকার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনও বিষয় নিয়ে রাজ্যগুলিকে সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি আবেদন করার কথা বলা আছে ১৩১ নং ধারায়।
আবেদনে ছত্তিশগড় সরকার বলেছে, ‘শ্রদ্ধার সঙ্গে রাজ্য মনে করছে যে, এনআইএ আইন সংবিধানবিরোধী এবং সংসদের রীতির পরিপন্থী। কারণ এই আইন কেন্দ্রকে একটি তদন্তকারী সংস্থা গঠন করার ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী এটা রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয়’। রাজ্যের আইনজীবী সুমের লোধি এই আবেদন জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান এনআইএ আইন রাজ্যপুলিশের তদন্ত করার অধিকার কেড়ে নেয়ার পাশাপাশি, কেন্দ্রের হাতে স্বৈরাচারী ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছে। তার মতে, এই আইনে কোথাও তদন্তের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহাবস্থান বা অনুমতি নেয়ার প্রসঙ্গ নেই, যা কেন্দ্র-রাজ্যের সম্পর্কের ঐতিহ্যের পরিপন্থী। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন, নিউজ১৮, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।