Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কালীগঞ্জে মাদরাসা ছাত্র হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধারে গিয়ে ৫ পিবিআই সদস্য আহত, দু’জন আটক

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১০:০১ এএম

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মাদরাসা ছাত্র আলামিন হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধারে গিয়ে আসামি পক্ষের লোকজনের হামলায় আহত হয়েছে ঝিনাইদহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পাঁচজন। আহতরা হলো মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল হোসেন, এসআই হুমায়ন, এএসআই হাফিজুর রহমান, এএসআই মোঃ জাফর ও এএসআই আব্দুল খালেক। আহতদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত ১০ দিকে কালীগঞ্জ পৌর শহরের আড়পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সাবেক পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজুর ভাই মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও মোস্তাক আহম্মেদ লাভলুকে আটক করেছে পুলিশ।
আহত পুলিশের দাবি তাদের ব্যপক মারধর করা হয়েছে কিন্তু আসামি পক্ষের ভাষ্য ভিন্ন। তারা বলছে, ছুরি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে অন্য একটি ছুরি ধরিয়ে জোর করে ছবি তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। এতে আমরা বাধা দিয়েছিলাম।
এর আগে বুধবার সকালে মাদরাসা ছাত্র আল-আমিন হত্যার সাথে জড়িত আটক সাব্বির ও হৃদয়কে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি ওই এলাকার একটি পুকুরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও অন্য আলামত উদ্ধারে যায় পিবিআই’র একটি দল। ডুবুরিরা দিনভর চেষ্টার পর ছুরি না পেয়ে বিকালে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগীতায় পুকুরের পানি নিষ্কাষনের কাজ শুরু করে। রাত ১০টার দিকে পুকুর থেকে ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় আটক আসামিদের নিয়ে ছুরিসহ ছবি তোলার সময় পিবিআই সদস্যদের উপর হামলা করে বেধড়ক মারপিট করে আসামি পক্ষের লোকজন। এসময় পিবিআই’র একজন সদস্যকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ পুলিশ সেখানে পৌছে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এছাড়া সেখান থেকে হত্যা মামলার আসামি সাব্বিরের বাবা মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও তার চাচা মোস্তাক আহম্মেদ লাভলুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

ঝিনাইদহ পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সকাল থেকেই এই মামলার আসামিদের নিয়ে আলামত উদ্ধারে আড়পাড়া এলাকায় অবস্থান করছিল পিবিআই। রাত ১০ টার দিকে ছুরি উদ্ধার হলে সাব্বিরকে ওই ছুরি দিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়ার সময় আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় সোহেল হোসেন ও হাফিজুর রহমান সহ পিবিআই পাঁচজন আহত হয়।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ পিবিআই সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তাদের বেশ মারধর করা হয়েছে। আহতদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গেল বছরের ৩০ নভেম্বর রাতে বাড়ির পাশে ওয়াজ শুনতে যাওয়ার পর আল আমিন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের চারদিন পর ওই এলাকায় নির্মাণাধীন একটি চারতলা ভবনের পেছন থেকে তার জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আল-আমিন আড়পাড়ার আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যবসায়ীর ছেলে। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান আল-আমিন শহরের সাওতুল হেরা হাফেজিয়া মাদরাসার ছাত্র ছিল। লাশ উদ্ধারের পর হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। আটক তারিক হাসান সাব্বির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজুর ভাই মুশফিকুর রহমান ডাবলুর ছেলে এবং ইয়াছিন আরাফাত হৃদয় একই এলাকার আব্দুস সামাদ ওরফে মিল্টনের ছেলে।

আটকের পর তারা আল-আমিন হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে। তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক পিবিআইয়ের সদস্যরা বুধবার সকাল থেকে আসামীদের দেখিয়ে দেয়া ওই গ্রামের রবিউল ইসলাম ঠান্ডু মিয়ার পুকুরের পানির মধ্যে চুরি উদ্ধারের কাজ শুরু করে। হত্যাকান্ডে ছয়জন অংশ নেয় বলেও তারা পুলিশ হেফাজতে জানিয়েছে।

ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর সোহেল আহমেদ জানান, আমরা তথ্য পেয়েছি। সেই মোতাবেক আসামিদের উপস্থিতিতে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। যে কোন সময় আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি সংবাদকর্মীদের জানানো হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আটক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ