মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের ‘জনবিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নর (সিটিইউ) ডাকে গতকাল ভারতব্যাপী ২৪ ঘন্টার ধর্মঘট পালিত হয়েছে। সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিবাদে নাগরিক সমাজকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন শ্রমিকরা। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রায় ২৫ কোটি মানুষ সর্বভারতীয় ধর্মঘটে অংশ গ্রহণ করেন। পশ্চিমবঙ্গে কিছু বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছাড়া মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই এই ধর্মঘট পালিত হয়েছে।
আইএনটিইউসি, আইআইটিইউসি, এইচএমএস, সিটিইউ, এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, সেওয়া, আইসিসিটিউ, এলপিএফ, ইউটিইউসি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্বাধীন শ্রমিক সংগঠনগুলো গতকাল দেশব্যাপী ধর্মঘটে যাওয়ার জন্য গত সেপ্টেম্বরে একমত হয়েছিল। ধর্মঘট এবং ব্যাংকিং পরিষেবাগুলিতে এর প্রভাব সম্পর্কে বেশ কয়েকটি ব্যাংক স্টক এক্সচেঞ্জগুলিকে জানিয়েছিল। এআইবিইএ, অল ইন্ডিয়া ব্যাংক অফিসারসহ বিভিন্ন ব্যাংক কর্মচারী সমিতি এই ধর্মঘটে অংশ নিয়। এর মধ্যে ছিল অল ইন্ডিয়া ব্যাংক কর্মচারি সমিতি (আইআইবিইএ), আইআইবিওএ, বেফআই, আইএনবিইএফ, আইএনবিওসি এবং ব্যাংক কর্মচারী সেনা মহাসংঘ।
দশটি সেন্ট্রাল ট্রেড ইউনিয়নের দেয়া বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানায়, ‘আমরা আশা করছি ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারী আসন্ন জাতীয় সাধারণ ধর্মঘটে কমপক্ষে ২৫ কোটি মানুষ অংশগ্রহণ করবেন। সরকারের জনবিরোধী, দেশবিরোধী নীতিগুলির বিরুদ্ধেও বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করা হবে। ২ জানুয়ারী শ্রমিকদের ডাকা বৈঠকে যে দাবি রাখা হয়েছিল সরকারের কাছে সেই আশ্বাস প‚রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে শ্রম বিভাগ। সরকারের নীতি ও কর্মপদ্ধতিতে শ্রমিকদের প্রতি সরকারের অবজ্ঞার মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে।’
শ্রমিক ইউনিয়নের পাশাপাশি বর্ধিত ফি কাঠামো ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দেয় শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের ৬০টি সংগঠন। এছাড়াও ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে এবং নিজেদের দাবি তুলে ধরতে ১৭৫টিরও বেশি কৃষি শ্রমিক ইউনিয়ন গ্রামীণ ভারত বনধ হিসেবে পালন করে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে জেএনইউ-এর মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশ, এবিভিপির হামলার নিন্দা জানিয়ে তাদের লড়াইয়ের প্রতি সমর্থনও প্রকাশ করেছে ট্রেড ইউনিয়ন। এছাড়াও বেকারত্ব, অর্থনীতির হাল ফেরানো, শিল্প স্থাপন, নারী সুরক্ষা, এনআরসি, সিএএ, অবসরকালীন পেনশন এবং সমকাজে সমবেতনের দাবীতেও ধর্মঘটে নামে ইউনিয়নগুলো।
রেল, ব্যাঙ্ক, প্রতিরক্ষা ইউনিটের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছেন ইউনিয়নগুলি। বিবৃতিতে তারা জানান, ‘এখনও পর্যন্ত ১২টি বিমানবন্দরকে বেসরকারি হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ১০০ শতাংশই বিক্রি করার কথা ঠিক হয়ে গিয়েছে। এমনকী বিএসএনএলও বিক্রি হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ৯৩৬০০ হাজার টেলিকম কর্মীকে একপ্রকার জোর করেই ভিআরএস দিয়ে দেয়া হয়েছে।’ সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এলামারাম করিম বলেন, ‘জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন, সরকারি কর্মচারী, ব্যাঙ্ক, বীমা কর্মচারীদের সংগঠনগুলিকে নিয়েই জাতীয় ধর্মঘট পালিত হয়েছে। এটি মোদি সরকারের শ্রম বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। সকল শ্রমিকের ন্য‚নতম মজুরি প্রতি মাসে ২১ হাজার টাকার দাবি-সহ আরও অনেক দাবি উত্থাপন করেছি আমরা।’
এদিকে, ধর্মঘট কেন্দ্র করে সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মালদহ। সকালে শহরে একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায় ধর্মঘটের সমর্থকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসতে শুরু করে। বিশেষ করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কালিয়াচক। সকাল থেকেই কালিয়াচক, সুজাপুরে দোকান পাট বন্ধ ছিল। যানচলাচলও করছিল না রাস্তায়। সকাল ১০টা নাগাদ বাম এবং কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক সেখানে অবরোধ চলার পর পুলিস আসে ঘটনাস্থলে। ধর্মঘট সমর্থকদের ওঠানোর চেষ্টা করে পুলিস। তাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ ধর্মঘট সমর্থকদের অবরোধ তুলতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিস। কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। তারপরেই উত্তেজিত ধর্মঘট সমর্থক এবং সেখানকার জনতা চড়াও হয় পুলিসের উপর। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে উত্তেজিত জনতা। পুলিসের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। সূত্র : টিওআই, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।