Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোশধারীদের হামলায় ভারতজুড়ে তোলপাড়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২০, ১:০৩ পিএম

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ক্যাম্পাসে মুখোশধারীদের হামলার ঘটনায় ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। কেবল চারজন ‘বহিরাগত’কে আটক করতে পেরেছে দিল্লি পুলিশ। এদিকে, পরিস্থিতি আঁচ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে তলব করেছেন মানব সম্পদ উন্নয়ন সচিব। আজ সোমবার তাঁদের দু’জনকে দেখা করতে বলা হয়েছে।
এর আগে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মুখোশ পরে কয়েকজন যুবক এ হামলা চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ গুরুতর আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা সুচরিতা সেন। এ ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আহতের সংখ্যাটা ২০-এর বেশি। সোমবার সকাল থেকেই অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামলাতে রয়েছে পুলিশও। পাশাপাশি আজই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
এদিকে, ওই ঘটনা নিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ। একই সঙ্গে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সংসদের সদস্যরা। রবিবার মাঝরাতের পর, ছাত্র সংসদের তরফে জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘যে হামলা আজ ঘটেছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং তার অন্তরঙ্গ বন্ধুদের হতাশার ফলাফল। কিন্তু, এই ঘটনাক্রম স্পষ্ট করে দিচ্ছে দিল্লি পুলিশের লজ্জাজনক কাহিনী যারা এবিভিপি (আরএসএসের ছাত্র সংগঠন)'র গুন্ডাদের নিরাপদে চলে যেতে সাহায্য করেছিল। প্রশাসন দিনের পর দিন চেষ্টা করেও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-আন্দোলন ভাঙতে পারেনি। তাই, গত ৪ জানুয়ারি থেকে এবিভিপি সমর্থকরা উপাচার্যের পোষা গুন্ডা হিসেবে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধর করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।’’
ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে চারটি দাবি পেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, জামিয়া মিলিয়া এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। তার মধ্যে রয়েছে জখম শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা এবং অভিযুক্তদের দ্রæত গ্রেফতারের দাবিও। যদিও, গতকাল হামলা নিয়ে অভিযোগের পাহাড় জমা হলেও সোমবার সকাল পর্যন্ত চারজনকে আটক করতে পেরেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই হামলার ঘটনায় বাড়ছে রাজনৈতিক চাপও। গতকালই ওই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের লজ্জা’ আখ্যা দিয়ে টুইটারে সোচ্চার হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে সেখানে প্রতিনিধি দলও পাঠাচ্ছে তৃণমূল। এই ঘটনা নিয়ে রাজপথে নামতে চলেছে কংগ্রেসও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুম্বাইয়ের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ‘ইন্ডিয়া গেট’-এ অবস্থান নিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ হামলায় ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) সমর্থিত এভিবিপি’কে দায়ী করেছেন অনেকে। হামলার সময় পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকে তাদের সহযোগিতা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ভিন্নমতের ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর নৃশংস হামলার অভিযোগে রোববার রাত থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত।
ভুক্তভোগী জেএনইউ শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে ও দোষীদের সাজার দাবিতে রাতে মোমবাতি মিছিল করেছেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী। তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেছেন হায়দ্রাবাদের শিক্ষার্থীরাও। পুনেতে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও কলকাতায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও শেষরাতে বিক্ষোভ করেছেন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ