Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবধান গড়ে দিলেন হাসান মাহমুদ

খুলনাকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

শেষ ১২ বলে প্রয়োজন ছিল ৩৬ রানের। বল হাতে ঢাকা প্লাটুনের হাসান মাহমুদ। নিজের স্পেলের প্রথম তিন ওভারে যার বোলিং ফিগার ৩-০-১৮-৩। ব্যাটিংয়ে ছিলেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক ও জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। লড়াই শেষে কার মুখে ফুটবে হাসি বলা ছিল দুষ্কর। প্রথম বলে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসলো একটি চার, দ্বিতীয় বলে দুই রান। তৃতীয় বলে ফাইন লেগের উপর দিয়ে বড় একটি ছয়। তখন ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছে ৯ বলে ২৪ রানে। কিন্তু এই রান নেয়ার মত সামর্থ্য ছিল শুধু মুশফিকেরই।

মাহমুদ ওভারের চতুর্থ বলটি করলেন অফ স্ট্যাম্পের বাইরে অনেকটা ইয়র্কার লেন্থে। ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটল না মুশফিকের। ডট বল। তখন প্রয়োজন ৮ বলে ২৪ রানের। পরের বলে নিশ্চিত করেই তুলে নিতে হবে বাউন্ডারি। মুশফিকের ভাবনা যখন এমন, ঠিক তখনই এটি ফুলটস বল সজোরেই মারলেন উড়িয়ে। কিন্তু ব্যাটে-বলে হলো না। উড়তে থাকা বলটি তালুবন্দী করলেন শাদাব খান। ম্যাচের সমাপ্তি কার্যত সেখানেই। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতা। শেষ বলে যখন জয়ের জন্য দরকার ১৩ রানের, ক্রিজে ছিলেন মোহাম্মদ আমির। থিসারা পেরেরার প্রথম শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। ঢাকা ম্যাচ হারল ১২ রানে। এই জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠল মাশরাফির দল।

গতকাল সিলেট আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথম ব্যাট করতে নামে ঢাকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭২ রান তোলে মাশরাফি মুর্তজার দল। জবাবে ১৬০ রান পর্যন্ত করতে পেরেছে খুলনা। শীতল আবহাওয়ায় বৃষ্টিতে প্রথমেই পিছিয়ে গিয়েছিল দিনের খেলা। ৪০ মিনিট পর গড়ায় দিনের প্রথম বল। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিজের নামে করে নিয়েছেন ঢাকা প্লাটুনের হাসান মাহমুদ। বল হাতে তার এই দুর্দান্ত পারফরমেন্সের দিনে সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটের বিবেচনায় রাজশাহী রয়্যালস ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে পেছনে ফেলল দলটি। রাজশাহী আছে দুইয়ে, চট্টগ্রামের অবস্থান তিনে। ম্যাচ হেরেও অপরিবর্তিতই থাকল খুলনা টাইগার্স। চারে থাকা দলটির পয়েন্ট ১০। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের অর্জন ৮ পয়েন্ট। গাণিতিক সূ² মারপ্যাচে খুলনার এই পরাজয়ে টিকে থাকল কুমিল্লার আশা।

রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় খুলনা। মাত্র ১১ রানের মাথায় ওপেনার ব্যাটসম্যান আমিনুল ইসলামকে (৪) ফেরান মাশরাফি। পরের ওভারে মাহমুদ তুলে নেন আরেক ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজকে (১৫)। এরপর শামসুর রহমান (৩) ও রিলে রুশোর (১৮) দ্রুত বিদায়ে পথ হারায় দলটি। স্কোরলাইন তখন দাঁড়ায় ৪৪-৪। কিন্তু এরপর নজিবুল্লাহ জাদরান ও মুশফিকের ব্যাটে আশার আলো দেখে খুলনা। ব্যাক্তিগত ৩১ রানে জাদরান ফিরলে ভাঙে ৫৬ রানের জুটি। এরপর রবি ফ্রাইলিঙ্কও (৬) খেলতে পারেননি দলের প্রয়োজন বুঝে। তারপর পুরো ইনিংসটিই মুশফিকময়। ৩৩ বলে ৬৪ রান করে যখন তিনি মাহমুদের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন, ম্যাচের ফল তখনই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল তখনই। ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পেয়েছেন মাহমুদ। এছাড়া মাশরাফি, শাদাব ও পেরেরা একটি করে উইকেটের দেখা পান।
এরআগে তামিম ্টকিবাল ও এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে দুর্দান্ত সূচনা করে ঢাকা। ব্যক্তিগত ২৫ রানে তামিমকে ফেরান আমির। এরপর বিজয়-মেহেদী হাসানও এগুতে পারেননি বেশিদূর। মুমিনুল হক ও আরিফুল ইসলামের ব্যাটে এরপর ঘুরে দাঁড়ায় ঢাকা। তবে রানের গতি ছিল বেশ শ্লথ। রানের চাকা ঘোরাতে গিয়ে মুমিনুল ফিরলেন ক্রিজে আসেন আসিফ আলি। তার ১৩ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ১৭২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় দলটি। মোহাম্মদ আমির দুটি উইকেট নেন। এছাড়া শফিউল ও শহিদুল পেয়েছেন একটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ঢাকা প্লাটুন : ২০ ওভারে ১৭৪/৪ (তামিম ২৫, বিজয় ১৫, মুমিনুল ৩৮, মেহেদি ১, আরিফুল ৩৭*, আসিফ ৩৯*; তানভির ০/৮, ফ্রাইলিঙ্ক ০/১৮, মিরাজ ০/১৫, আমির ২/২৭, শহিদুল ০/৪১, শফিউল ১/৪৪, বিপ্লব ১/১৫)।
খুলনা টাইগার্স : ২০ ওভারে ১৬০/৮ (মিরাজ ১৫, বিপ্লব ৪, রুশো ১৮, শামসুর ৩, মুশফিক ৬৪, নাজিবউল্লাহ ৩১, ফ্রাইলিঙ্ক ৬, শহিদুল ৬*, আমির ৫ ; মাশরাফি ১/২৬, ফাহিম ১/৩১, হাসান ৪/৩২, মেহেদি ০/৭, শাদাব ১/২৫, থিসারা ১/৩৬)।
ফল : ঢাকা প্লাটুন ১২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : হাসান মাহমুদ (ঢাকা)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিপিএল

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ