মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধিতায় নজির গড়ল কেরালা। ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে বিধানসভায় ‘সিএএ’ বিরোধী প্রস্তাব পাশ করাল কেরালা বিধানসভা। গতকাল মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রস্তাবটি পেশ করেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। মুখ্যমন্ত্রীর আনা প্রস্তাবে একযোগে সমর্থন করে বিরোধীরাও। একমাত্র বিজেপি বিধায়ক রাজাগোপাল ছাড়া বাকি সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর আনা প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। এদিকে, সোমবার বিতর্কিত এই আইন নিয়ে বিজেপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে সেক্যুলার রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিম বঙ্গ ও পাঞ্জাব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
গতকাল মঙ্গলবার কেরালা বিধানসভার একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। মূলত তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণের মেয়াদ আরও এক দশক বাড়ানোর জন্য এদিন বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। সিএএ বিরোধিতার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে এই একদিনের অধিবেশনেই পাশ পেশ করা হয় প্রস্তাব। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী এই প্রস্তাবটি পেশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
প্রস্তাব পেশের সময় তিনি বলেন, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থী। এইভাবে ধর্মের ভিত্তিতে আইন তৈরি করলে তা গোটা দেশের ভাবম‚র্তির জন্য বড়সড় ধাক্কা হবে। আইনটি সংবিধানের মূল ধারণাকেই খন্ডন করছে। সাধারণ মানুষের মনোভাব বুঝে কেন্দ্রের উচিত এখনই এই আইন প্রত্যাহার করা।’ একই সঙ্গে বিজয়ন জানিয়ে দেন, কেরালায় কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না। পিনারাইয়ের বক্তব্যের পরই ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে যায় এই রেজোলিউশন। এর আগেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেরলার মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসিতে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি রাজ্যে এনপিআর করাও পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
কেরালার সিপিআই বিধায়ক জেমস্ ম্যাথিউ, সি দিবাকরণও এ দিন সিএএ-এর নিন্দায় মুখর হন। তাদের মতে, সিএএ বিরোধিতার এই প্রস্তাব পাশ করে কেরালা গোটা বিশ্বের কাছে বার্তা দিল। কংগ্রেস নেতা ভিডি সতীশন এ দিন বলেন, ‘সিএএ, এনআরসি একই মুদ্রার দুই পিঠ। সংবিধানের ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ধারাকে ক্ষুণœ করছে এই আইন।’
ভারতজুড়েই বিরোধীরা মোদি সরকারের আনা নতুন আইনের (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) বিরোধিতা করে চলেছে। তবে, কেরলায় এই বিক্ষোভের মাত্রা একটু বেশিই। কারণ, একমাত্রে সেখানেই শাসক ও বিরোধী দুই শিবির একযোগে নতুন আইনটির বিরোধিতা করছে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন ‘সিএএ’র বিরুদ্ধে একটি ধর্নার আয়োজন করেন। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন বিরোধী ইউডিএফের নেতারা।
এদিকে, বিজেপি’কে জনবিচ্ছিন্ন করতে ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে লড়াইয়ে নামতে গত সোমবার সেক্যুলার রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) অমরিন্দার সিং।
সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের (সিএএ) বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। সোমবার পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) এক বিক্ষোভ সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় বিজেপি সরকারের প্রতি অভিযোগ করে বলেছেন যে, সিএএ বিরোধী বিক্ষোভকারীদেরকে সরকার ‘দেশ-বিরোধী’ আখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলায় ন্যাশনাল পোপুলেশান রেজিস্টার (এনপিআর) আপডেট করার জন্য এবং প্রস্তাবিত ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’ হাতে হাত মিলিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এবং তাদেরকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলতে তিনি সকলের প্রতি আহŸান জানান। এদিন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রধান ক্যাপ্টেন (অব) অমরিন্দার সিংও বলেছেন, সর্বশক্তি ব্যবহার করে সেখানে সিএএ’র বাস্তবায়ন তিনি প্রতিহত করবেন। সূত্র: টিওআই, এনডিটিভি, টাইমস নাউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।