নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অপেক্ষাটা শেষ বলের। প্রয়োজন ৩ রান। ডেভিড মালান রান আউটে ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে যাচ্ছিলেন সানজামুল ইসলাম। কিন্তু মাঠে ঢোকার পরও ফিরিয়ে আনা হলো তাকে, পাঠানো হলো মুজিব-উর-রহমানকে। শেষ বলটি লিয়াম প্লাঙ্কেটের লো-ফুল টস। মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে মুজিবই কুমিল্লাকে এনে দিলেন রোমাঞ্চকর জয়।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২ উইকেটে হারাল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল উদ্বোধনী জুটিতে শতরানের পরও চট্টগ্রাম আটকে যায় ১৫৯ রানে। কুমিল্লা জিতেছে শেষ বলের নাটকীয়তায়।
ম্যাচটি অবশ্য আরও সহজেই জেতার কথা ছিল কুমিল্লার। মালানের দারুণ ইনিংসে এক পর্যায়ে তাদের প্রয়োজন ছিল ২৪ বলে ২৬ রান। উইকেট তখনও বাকি ৭টি। সেখান থেকে নিজেদের আত্মঘাতী ব্যাটিং আর প্রতিপক্ষের দারুণ বোলিং মিলিয়ে পথ হারায় কুমিল্লা। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রান।
সেই সমীকরণে কুমিল্লাকে এগিয়ে দেন আবু হায়দার। প্রথম বলে মালান নেন সিঙ্গেল। পরের বলে আবু হায়দার তুলে মেরেছিলেন। সীমানায় নাসুম ক্যাচ নিতে পারেননি, বাঁচাতে পারেননি চার। পরের বলে দুর্দান্ত শটে লং অন দিয়ে ছক্কা। পঞ্চম বলে বাই থেকে আসে সিঙ্গেল। পঞ্চম বলে দুই রানের চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান মালান। ৫১ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে কুমিল্লা অধিনায়ক ফেরেন দলকে শেষের অনিশ্চয়তায় রেখে। শেষ বলে সেই শটে দলকে জিতিয়ে বাঁধনহারা উল্লাসে মাতেন মুজিব।
অথচ ম্যাচের শুরুটা ছিল পুরোপুরি চট্টগ্রামের। নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এদিনও ফিরতে পারেননি চোট কাটিয়ে। পরিবর্ত অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও ছিলেন না চোটের কারণে। নেতৃত্ব দেন নুরুল হাসান সোহান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে উদ্বোধনী জুটিতে ১০৩ রান এনে দেন লেন্ডল সিমন্স ও জুনায়েদ সিদ্দিক। জুনায়েদ ও সিমন্স শুরু থেকে এগিয়েছেন প্রায় সমান গতিতে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তারা তোলেন ৫৪ রান। সিমন্স আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন ২৮ বলে। ১০.৩ ওভারে জুটি স্পর্শ করে শতরান। ৩৪ বলে ৫৪ রান করে সিমন্সের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। পরের ওভারেই মুজিবের সরাসরি থ্রোয়ে জুনায়েদ রান আউট ৩৭ বলে ৪৫ রান করে।
এরপর কোনো ব্যাটসম্যানই পারছিলেন না উইকেটে টিকে থাকতে। চট্টগ্রামের রানের গতিও যায় প্রায় থমকে। শেষ দিকে ঝড় তুলেছেন আসরে প্রথমবার খেলতে নামা জিয়াউর রহমান। দিন দুয়েক আগে স্কোয়াডে যুক্ত করা অলরাউন্ডার চার ছক্কায় ২১ বলে করেন অপরাজিত ৩৪। মূল তার সৌজন্যেই দেড়শ পেরোয় চট্টগ্রাম।
এরপর কুমিল্লার রান তাড়ার শুরুটা ছিল স্টিয়ান ফন জিলের স্ট্রোকের ঝলক দিয়ে। মেহেদি হাসান রানার এক ওভারে ফন জিল মারেন চারটি চার। তবে ১২ বলে ২২ করে তিনি বিদায় নেন প্লাঙ্কেটের বলে। আরেক ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি (১৭ বলে ১৯) আউট হয়েছেন বিস্ময়রকর ভুলে। আগের ম্যাচের নায়ক সৌম্য সরকার ব্যর্থ। দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন কেবল মালানই। সাব্বির রহমান অবশ্য সঙ্গ দিয়েছেন কিছুটা। গড়ে উঠেছে ৬৪ রানের জুটি। তবে সাব্বির নিজে ১৮ রান করতে খেলেছেন ১৫ বল।
শেষ ওভারে ছক পাল্টে দিলেন আবু হায়দার। মাঠে ঢুকেও বেরিয়ে আসায় রিটায়ার্ড আউট হলেন সানজামুল। কুমিল্লার অবশ্য তাতে আক্ষেপের কারণ নেই। সানজামুলের বদলে নেমে মুজিবই তো হয়ে গেলেন শেষ বলের নায়ক!
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ২০ ওভারে ১৫৯/৬ (সিমন্স ৫৪, জুনায়েদ ৪৫, ওয়ালটন ৯, বার্ল ২, সোহান ৪, জিয়াউর ৩৪*, প্লাঙ্কেট ৪, পিনাক ০*; মুজিব ০/১৮, আবু হায়দার ০/১৭, আল আমিন ১/৪০, ভিসা ১/২৮, সানজামুল ১/৩৩, সৌম্য ২/২০)।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স : ২০ ওভারে ১৬১/৮ (রবি ১৭, ফন জিল ২২, মালান ৭৪, সৌম্য ৬, সাব্বির ১৮, ভিসা ১, অঙ্কন ০, আবু হায়দার ১২*, মুজিব ৪*; রুবেল ২/১৬, মেহেদি রানা ১/৩১ নাসুম ০/১৮, প্লাঙ্কেট ১/৪৬, জিয়াউর ১/৩৬, বার্ল ১/৯)।
ফল : কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : ডেভিড মালান (কুমিল্লা)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।