মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের উত্তরপ্রদেশে চলছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভ। শনিবার উত্তপ্ত রাজপথে নেমে পুলিশের কাছে হেনস্তার শিকার হন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। গাড়ি আটকে দেয়া হয় তার। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই সাবেক আইপিএস অফিসার তথা সমাজকর্মী এসআর দারাপুরির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে উত্তরপ্রদেশে প্রেসিডেন্ট শাসনের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
শনিবার দারাপুরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তাকে আটকানোর জন্য পুলিশ গলা টিপে ধরে বলেও অভিযোগ। এরপরই রাজ্যে প্রেসিডেন্ট শাসন জারি করার দাবি তোলে কংগ্রেস। এই প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে পুলিশের কাছে। যেসব পুলিশকর্মী জড়িত ছিল, তাদের সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্তের দাবি করা হয়েছে। গতকাল রোববার তাকে হেনস্তার প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে দারাপুরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল কংগ্রেস নেত্রীর। কিন্তু, পুলিশ তাকে বাধা দেয়। এরপর গাড়ি ছেড়ে এক কর্মীর বাইকে চেপে গন্তব্যের দিকে রওনা হন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু, তাতেও আসে বাধা। শেষ পর্যন্ত, বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করেন নেত্রী। আর এভাবেই প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে দারাপুরীর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তারপরই সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘এটা কী ধরনের পুলিশি ব্যবস্থা! রাজ্যজুড়ে পুলিশি জোরজুলুম চালাচ্ছে যোগী সরকার। এমনকী সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশি সন্ত্রাসের জেরে রাজ্যজুড়ে চ‚ড়ান্ত আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’ এদিন পুলিশের বিরুদ্ধে তাকে হেনস্তার করারও অভিযোগ তুলেছেন প্রিয়াঙ্কা। প্রিয়াঙ্কার জানান, পুলিশ তার গলা টিপে দেয়। ঘাড়ধাক্কাও দেয়, যার জেরে তিনি মাটিতে পড়ে যান। যদিও বাধাদানের প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বক্তব্য, প্রিয়াঙ্কার যাত্রায় উত্তেজনা বাড়ত। আইনশৃঙ্খলার অবনতিও হতে পারত।
প্রথমে লখনউয়ের একটি স্থানে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় প্রিয়াঙ্কাকে। সেই বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার পর পলিটেকনিক স্কোয়ারের কাছে ফের তার গতি রোধ করে পুলিশ। জানায়, এর থেকে আগে আর এগোনো যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা পালটা জানতে চান, কেন তাকে আটকানো হচ্ছে? কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে নেত্রীর রীতিমতো উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়ে যায়। এরপরই গাড়ি থেকে নেমে পড়েন সোনিয়া-তনয়া। সোজা হাঁটা শুরু করেন দারাপুরীর বাড়ির দিকে। প্রিয়াঙ্কার এই কীর্তিতে সকলেই চমকে যান। পলিটেকনিক স্কোয়ার থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে শেষ পর্যন্ত দারাপুরীর বাড়িতে পৌঁছন প্রিয়াঙ্কা। কথা বলেন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।
এই ঘটনার পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে উত্তরপ্রদেশে প্রেসিডেন্ট শাসনের দাবি জানান সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী সুস্মিতা দেব। তিনি বলেন, ‘যেভাবে চলন্ত গাড়িতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটকানো হয়েছে, তাতে প্রাণহানিও হতে পারত। এক মহিলা পুলিশের ধাক্কায় হুমড়ি খেয়ে পড়েও যান নেত্রী। নেত্রী কখন, কোথায় যাবেন, তা আগে থেকে জানানো থাকলেও পুলিশ শনিবার সকালে এসে দাবি করে, সফরসূচি জানানো ছিল না। আসলে উত্তরপ্রদেশে এখন গুন্ডারাজ চলছে। গণতন্ত্র বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দিচ্ছে না যোগী সরকার। বিক্ষোভকারীদের উপর নির্যাতন করছে পুলিশ। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে কংগ্রেস। সেইসঙ্গে অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশে প্রেসিডেন্ট শাসন জারির দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ডিসেম্বর সিএএ বিরোধী আন্দোলন ঘিরে হিংসা ছড়ায় লখনউতে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন আইজি ও সমাজকর্মী ৭৩ বছরের এসআর দারাপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে যোগীর পুলিশ। তারপর থেকেই জেলবন্দি রয়েছেন তিনি। সূত্র : টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।