নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
হাতে আর খুব বেশি সময় নেই। প্রস্তুতিসহ আতিথেয়তার আনুসাঙ্গিকতা সারতে সময়ের প্রয়োজন পাকিস্তানের, চলছে বিপিএল মাঠের প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি সময় নেই বাংলাদেশের হাতেও। তবে এখনও আসছে জানুয়ারির শেষ দিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর নিয়ে কাটছে না ধোঁয়াশা। দুই বোর্ড তে আছেই, প্রতিদিনই সাবেক ক্রিকেটার এবং দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের নতুন নতুন মন্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ, দেখা দিচ্ছে অনিশ্চয়তা।
নিরাপত্তার অজুহাতে এই মুহূর্তে দীর্ঘ সময়রে জন্য পাকিস্তানে থাকতে চান না বাংলাদেশ দলের কোনো কোনো ক্রিকেটার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের দেয়া এমন বক্তব্যের পর থেকেই মূলত সংকীর্ণ হচ্ছে সফরের রাস্তা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে লেখা চিঠিতে পরে কিছুটা মত বদলে বিসিবি থেকে জানানো হয়, একসঙ্গে টানা সফর না করে প্রথমে টি-টোয়েন্টি সিরিজটা খেলে আসতে চায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজের জন্য প্রথমে নিরপেক্ষ ভেন্যুর প্রস্তাব দিলেও বিসিবি পরে অবস্থান কিছুটা পাল্টেছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের সময় দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি বোঝার পরই টেস্ট সিরিজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চায় তারা। বাংলাদেশ দলের এই পাকিস্তান সফর নিয়ে এমন অনীহার পেছনে ভারতের হাতও দেখে ফেলছেন কেউ কেউ!
পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশের অনীহার মূল কারণ দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি হলেও পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা বিষয়টিকে দেখছেন অন্যভাবে। রশিদ খানের যেমন সন্দেহ, এতে ভারতের হাত থাকতে পারে। পাকিস্তানের সাবেক এই ক্রিকেটার দেশটির দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যদি টেস্ট খেলতে পাকিস্তানে আসে, তাহলে ভারতের সমস্যা। কারণ, এই সিরিজে পাকিস্তানের জেতার সম্ভাবনা বেশি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় তখন ভারত ও পাকিস্তানের ব্যবধান কমে আসবে। এটা চায় না ভারত। আমি মনে করি আইসিসির উচিত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করা, যাতে সফরটা ঠিকভাবে হয়।’ পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ খেলতে না গেলে বাংলাদেশেরই ক্ষতি দেখছেন দেশটির সাবেক উইকেটরক্ষক ওয়াসিম বারি, ‘আমি বুঝতে পারছি না কেন বাংলাদেশ পাকিস্তানে এসে টেস্ট খেলতে চাচ্ছে না! এতে তারাই তো আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট খোয়াবে। এতে তাদেরই ক্ষতি। আশা করি বাংলাদেশ পাকিস্তান সফরে আসবে।’
এ ব্যপারে একটি টিভি টক শোতে পাকিস্তানের রশিদ লতিফ নিয়মটি সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। এ মুহূর্তে যদি পাকিস্তানে টেস্ট খেলতে না যায়, নিয়ম অনুযায়ী এখনই পয়েন্ট কাটা যাবে না বাংলাদেশের। না খেললে পয়েন্ট কাটা কিংবা পাওয়ার হিসাবটা ২০২১ সালের মার্চের আগে হবে না। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লিগ পর্ব শেষ হওয়ার কথা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। রশিদ তাই পিসিবিকে ধৈর্য ধরতে বলছেন, ‘পাকিস্তানের তাড়াহুড়া করা উচিত নয়। তাদের উচিত বাংলাদেশকে সময় দেওয়া। প্রত্যেক বোর্ডেরই নির্দিষ্ট কিছু কৌশল থাকে। বাংলাদেশ আসুক, টি-টোয়েন্টি খেলুক। এরপর বিসিবিকে সময় দেওয়া হোক সিদ্ধান্ত নেওয়ার যে কখন তারা খেলতে চায়। যদি বাংলাদেশ আমাদের এখানে খেলতে না আসে ২০২১ সালের মার্চের আগ পর্যন্ত পাকিস্তান কোনো পয়েন্ট পাবে না।’
একই টিভি শোতে পাকিস্তানের সাবেক গতিতারকা শোয়েব আক্তার অবশ্য স্বভাবসুলভ চাঁচাছোলা মন্তব্যে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানে টেস্ট খেলতে, ‘বাংলাদেশ মনে আছে, আমরা তোমাদের কীভাবে সাহায্য করেছিলাম? আমরা বাংলাদেশকে নিজেদের হাতে টেস্ট ক্রিকেটে এনেছি, খেলিয়েছি, এত দূর আসতে সাহায্য করেছি। বাংলাদেশ তো আমাদের অনেক ভালোবাসে। সহজ ভাষায় বলছি, কারও প্ররোচনায় আসার দরকার নেই। আপনারা আসুন, টেস্ট খেলুন। আপনাদের অনেক ভালোবাসা হবে, সম্মান দেওয়া হবে। আপনাদের আমাদের দরকার।’
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রায় ১০ বছর টেস্ট ক্রিকেট হয়নি পাকিস্তানে। এ মাসে সেই শ্রীলঙ্কাই গত এক দশকে প্রথম দল হিসেবে পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলেছে। রাওয়ালপিন্ডি ও করাচিতে কড়া নিরাপত্তাই দেওয়া হয়েছে তাদের। তবে বিসিবির আপত্তির জায়গাটা ভিন্ন। সৈন্য-সামন্ত পরিবেষ্টিত ক্রিকেটে আর যা-ই হোক খেলার মেজাজটাই যে থাকে না! গতকাল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলও যেমন দিতে পারেননি সফরের নিশ্চয়তা, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর এখনো নিশ্চিত নয়, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সকল নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই পাকিস্তানে পাঠানো হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে।’ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল পাকিস্তান ঘুরে এসেছে, তারা কী রিপোর্ট দিয়েছে? জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ রিপোর্টটার ব্যপারে এখনো আমি কিছু জানি না।’
হাতে খুব বেশি সময় নেই। বঙ্গবন্ধু বিপিএল শেষ হবে ১৭ জানুয়ারি। আইসিসি ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামে (এফটিপি) জানুয়ারির শেষভাগেই দুটি টেস্ট ও ৩টি টি-টোয়েন্টি খেলতে পাকিস্তান সফর করার কথা রয়েছে বাংলাদেশের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।