নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো বলে একটা কথা আছে। রাসেল ডমিঙ্গো ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) কেন্দ্র করে যে নাটকের অবতারণা। সেটিও প্রতি মুহূর্তে পাচ্ছে নতুন মোড়। ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। সেদিন বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন সংবাদমাধ্যমে ঘোষণা দেন আসন্ন এশিয়া কাপ খেলতে ডমিঙ্গোকে ছাড়াই ক্রিকেট দল আরব আমিরাতে যাচ্ছে, তবে টেস্ট ও ওয়ানডের দায়িত্বে সামনেও তিনি বহাল থাকবেন। বেশ কয়েক দিন ধরেই এই ব্যাপারটির গুঞ্জন মিলছিল। এসবের মাঝে গত পরশু বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে ডমিঙ্গো দেন বিষ্ফোরক ইন্টারভিউ। যাতে উঠে আসে বিসিবির নানা স্বৈরতান্ত্রিকতার এক ছবি।
এরপর গতকাল বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম দাবি করে প্রোটিয়া কোচ আর ফিরছেন না টাইগারদের দায়িত্বে। এই যখন পরিস্থিতি। তখন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস ও বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন সুজন উড়িয়ে দেন ডমিঙ্গোর পদত্যাগের আলাপ। পরিস্থিতি যাইহোক চরম অনিশ্চয়তায় মাঝে রয়েছে জাতীয় দলকে কেন্দ্র করে বিসিবির ভবিষ্যত পরিকল্পনা।
গত সোমবার বিসিবি প্রেসিডেন্ট পাপন বলেন, ‘হেড কোচ যাচ্ছে না (এশিয়া কাপে)। আমাদের ব্যাটিং, বোলিং, স্পিন বোলিং ও ফিল্ডিং কোচ আছেন। অধিনায়কতো আছেই। টি-টোয়েন্টির ট্যাকনিক্যাল কনসালটেন্টও আছেন। সাথে টিম ডিরেক্টর (খালেদ মাহমুদ সুজন), জালাল ভাই আর আমিতো আছিই। আর কাকে লাগবে?’ বিশেষজ্ঞদের কাতারে বোর্ড সভাপতি নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করাতে ব্যাপারটা যতই বেখাপ্পা হোক না কেন, তিনি সত্যই বলেছেন। কারণ ২০১৬ সালের পর থেকে নির্বাচকদের দল দিতে হয় তার পরামর্শ মেনেই। শুধু তাই নয়, পাপন অবস্থান করেন গুরুত্বপূর্ণ সব টিম মিটিংয়ে। ব্যাটিং অর্ডার ঠিক হয় তার সিদ্ধান্তে। এমনকি কার কি সমস্যা সেই ক্রিকেটীয় ব্যাখাও বিসিবি সভাপতি দেন গনমাধ্যমের সামনে। ডমিঙ্গো তার ইন্টারভিউতে এই ব্যাপারগুলো আরও স্পষ্টভাবে সামনে নিয়ে আসেন।
এই প্রোটিয়া কোচ ডমিঙ্গো গত তার ইন্টারভিউতে তুলে ধরেন জাতীয় দল নিয়ে বোর্ডের নানা অসঙ্গতি। এই প্রোটিয়া কোচ বলেন, ‘ক্রিকেটাররা ভুল করবে, তাদের সেটা থেকে শিখতে হবে। সে জন্য নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। কিন্তু তারা সেটা করতে পারে না। কারণ, তাদের সারাক্ষণ পরামর্শের ওপর রাখা হয়, ধমক দেওয়া হয়। এটা চারদিক থেকেই আসে।’ ডমিঙ্গোর এই যুক্তি অকাট্য। বিভিন্ন সিরিজের আগে, মাঝে ও পরে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বোর্ড সংশ্লিষ্ট সকলে গণমাধ্যমের সামনে যেভাবে কাটাছেড়া করে তা খুবই দৃষ্টিকুটু। এই প্রোটিয়া কোচ আরও বলেন ক্রিকেটারদের সব সময় রাখা হয় অসম্ভব চাপে। এটাও নিখাদ সত্য। বেশি দূরের কথা নয়। সদ্য সমাপ্ত জিম্বাবুয়ে সফর ছিল এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতির মঞ্চ। সেখানে হঠাৎ করেই অধিনায়কসহ সব সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিশ্রামে দেয় বোর্ড। তবে দাবি করা হয় ফলাফল যাইহোক বোর্ড ক্রিকেটারদের পাশে থাকবে। কিন্তু সিরিজ শেষ হবার পর বোর্ড সংশ্লিষ্ট কেউই সেই কথা রাখেননি। গনমাধ্যমের সামনে বাজেভাবে জাতীয় দলের সমালচনা করেন টিম ডিরেক্টর সুজনসহ আরও অনেকেই।
অন্যদিকে ডমিঙ্গোকে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার সঙ্গে বিসিবির চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ২০২১ সালের ২০ আগস্ট। গত বছর টি-২০ বিশ্বকাপের পূর্বে ডমিঙ্গো বিসিবিকে বলে তার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে না গেলে তিনি অন্য প্রস্তাব লুফে নিবেন। বাধ্য হয়ে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই প্রোটিয়ার মেয়াদ বাড়ায় বোর্ড। একই সাথে চুক্তিতে আছে যদি বহিষ্কার করা হয় সেক্ষেত্রে তাকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পূর্ণ বেতন পরিশোধ করতে হবে। আর বিসিবি থেকে শর্ত ছিল এই বছরের নভেম্বরের আগে তিনি পদত্যাগ করতে পারবেন না। এদিকে অক্টোবরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে নিয়ে এই প্রোটিয়া কোচের দুবাইয়ে ক্যাম্প করার কথা। এই কোচের পদত্যাগের যে সংবাদ এসেছে সেই সূত্রে জালাল ইউনুস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ডমিঙ্গো কোন চিঠি বা পদত্যাগপত্র দেননি। মৌখিকভাবেও জানাননি কিছু। অক্টোবরে ‘এ’ দলের সঙ্গে দুবাইয়ে যাবেন তেমনটি কথা রয়েছে। তার সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে আমাদের। একইদিনে বিসিবি প্রধান নির্বাহী সুজন বলেন, ‘কথাগুলো যেভাবে মিডিয়াতে আসছে তাতে ডমিঙ্গো নিজেও খুব বিব্রত। সে আমাদের এখানে চাকরি করছে, এভাবে কথা হলে নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হবে।’ বিসিবি ও ডমিঙ্গো নাটকের শেষ কোথায় তা বলা মশকিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।