Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিরাট মন্দায় ভারত, ৪ বছরে সর্বনিম্ন আইপিও তহবিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৪:০৭ পিএম

ভারতে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ফলে আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিংস) চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এদিকে, ভারতের অর্থনীতির সাম্প্রতিক নিম্নগতিকে ‘কোনো স্বাভাবিক মন্দা নয়’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামনিয়াম বলেছেন, ‘ভারতে বিরাট মন্দা চলছে।’

বুধবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতীয় আইপিও খাত থেকে এ বছর তহবিল সংগ্রহ কমে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮০ কোটি ডলার। রিফাইনিটির ডাটা অনুযায়ী, এই তহবিল চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০১৭ সালে এই তহবিল রেকর্ড ১১৭০ কোটি ডলারে উঠে গিয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে তার পতন ঘটে। ওই বছর সংগ্রহ হয় ৫৫০ কোটি ডলার।

ইওয়াই কনসালটেন্সির একজন অংশীদার সন্দীপ খেতান। তিনি বলেন, আইপিও মার্কেটে ভারতের জন্য সবচেয়ে বাজে বা খারাপ বছর ছিল ২০১৯ সাল। নানা রকম বিঘ্ন, যেমন করপোরেট ব্যর্থতা, ঋণখেলাপির মতো নানা ইস্যু এই খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং তহবিল সংগ্রহ তাতে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। আর্থিক ও শিল্পখাত আইপিও ইস্যু করা থেকে বিরত থেকেছে। ভারতের এনএসই নিফটি ৫০ সূচক এনএসইআই এ বছর ১৯ সেপ্টেম্বর ছিল শতকরা ১.৪ ভাগ। কিন্তু করপোরেট ট্যাক্সের হার কর্তন করার ঘোষণা দেয়ার পর বাজার বৃদ্ধি পায়। এতে অনেকটা আশা জেগে ওঠে। মঙ্গলবারের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে এনএসইর সূচক বেড়েছিল শতকরা ১২.৪ ভাগ।

এদিকে, ভারতের বেসরকারি টেলিভিশন এনডিটিভির প্রণয় রায়কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অরবিন্দ বলেন, ‘আমাদের হাতে রপ্তানি, ভোগ্যপণ্য ও রাজস্ব আয়ের যে তথ্য রয়েছে, তা যদি ২০০০-২০০২ সালের মন্দাকালীন সময়ের সঙ্গে তুলনা করি, তবে দেখা যাবে অর্থনীতির এই নির্দেশকগুলো হয় নেতিবাচক বা উল্লেখিত সময়ের তুলনায় কমই ইতিবাচক।’ সাক্ষাৎকারে সুব্রামনিয়াম মন্তব্য করেন, ‘এটা স্বাভাবিক মন্দা নয়...এটা ভারতের বিরাট মন্দা।’

চলতি বছরের শুরুতে মোদির সাবেক এই উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ মন্তব্য করেছিলেন, ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার আড়াই শতাংশের বেশি অনুমান করা হয়েছিল। অরবিন্দ বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সূচক হিসেবে জিডিপির তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই বৈশ্বিকভাবে এখন বলা হচ্ছে, জিডিপির সংখ্যাকে আরও একটু গুরুত্ব বা সর্তকতার সঙ্গে দেখা দরকার।

এনডিটিভির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অক্সফোর্ডের স্নাতক অরবিন্দ বলেন, তেল ছাড়া অন্যান্য পণ্য আমদানি ও রপ্তানির হার ৬ থেকে ১ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ কমেছে। ভোগ্যপণ্য উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার যেখানে দুবছর আগেও ৫ শতাংশে ছিল, সেটি এখন কমে নেমে এসেছে ১ শতাংশে। এসব সূচক থেকে আমরা ভারতের অর্থনীতির চিত্রটি ভালোভাবে বুঝতে পারি।

সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি পরপর সাত প্রান্তিকে অব্যাহতভাবে কমেছে। ২০১৮–১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা কমে নেমে এসেছে সাড়ে ৪ শতাংশে।

অরবিন্দ বলেন, প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, রপ্তানি এবং আমদানি এগুলোর ওপর মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভর করে। আবার রাজস্বের কতটা অংশ সরকার সামাজিক খাতে খরচ করছে, সেটাও অর্থনীতি বোঝার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয়। তিনি বলেন, অর্থনীতির মূল ক্ষেত্রগুলো যেমন মানুষের আয়, মজুরি, চাকরি, রাজস্ব আয় সবই এখন মন্দার মধ্যে পড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ