Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে মুসলিমদের টার্গেট এবারই প্রথম নয়

আধুনিক ফ্যাসিবাদের দিকে এগিয়ে চলেছে ভারত-২

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে দেশটির মুসলিম জনসংখ্যাকে আরও কোণঠাসা করার পদক্ষেপ নিয়েছে। সমালোচকরা আসামে এনআরসি-র একচেটিয়া ব্যবহারকে ধর্মীয় উত্তেজনা থেকে মুক্ত করার উপায় হিসাবে উপহাস করেছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে আসামের জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ মুসলিম এবং রাজ্যের ৮টি জেলায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।

আগস্টে এই অঞ্চলের ১৯ লাখ মানুষকে কার্যকরভাবে তাদের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়ার কারণে নিবন্ধভুক্ত করা হয়নি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এনআরসির সমালোচনা করেছে এবং বলেছে যে, এটি অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করে ফেলেছে।

রয়টার্সের মতে, সেপ্টেম্বরে ভারত আসামের গোয়ালপাড়া জেলায় একটি বৃহৎ আকারের আটক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু করেছিল, যার বন্দি ধারণ ক্ষমতা কমপক্ষে ৩ হাজার।
এবং আগস্টে ভারত তার সংবিধানের এমন একটি অংশও প্রত্যাহার করে নিয়েছে যা জম্মু ও কাশ্মীরের বিতর্কিত অঞ্চলটিকে একটি বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল। গত চার মাস ধরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল কাশ্মীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অবরুদ্ধ এবং এখন সরাসরি নয়াদিল্লির ফেডারেল সরকারের শাসনাধীন।
যোগাযোগ বন্ধের অংশ হিসাবে কাশ্মীরের বাসিন্দারা ফোন লাইন এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস হারিয়ে ফেলেছে। অ্যাডভোকেসি গ্রæপগুলির মতে, এই অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ হচ্ছে গণতন্ত্রের উপর চাপানো দীর্ঘতম ক্র্যাকডাউন। চীন ও মিয়ানমারের মতো কেবল কর্তৃত্ববাদী দেশগুলিতে দীর্ঘকালীন ইন্টারনেট বন্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
চার মাসের ইন্টারনেট বন্ধ থাকা এতটাই মারাত্মক হয়েছে যে, এত দিন ধরে নিষ্কিয় থাকায় হোয়াটসঅ্যাপ অঞ্চলের বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলছে।

মুসলমানদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র-অনুমোদিত বৈষম্যের পরিণতি মারাত্মক
সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতি মোদি সরকারের মনোভাব ও নীতি জাতিগতভাবে অনুপ্রাণিত সংঘাতের জন্ম দিয়েছে এবং পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে, শাসক হিন্দু দল সহিংসতা মোকাবেলায় নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে দায়মুক্তির সংস্কৃতি জোরদার করেছে। নাগরিকত্ব বিলটি তৈরির কারিগর অমিত শাহ গত এপ্রিল মাসে প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত মুসলিম অভিবাসীদের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর আগে তিনি দেশের অবৈধ অভিবাসীদের ‘ইউপোকা’ হিসাবে উল্লেখ করেন।
সা¤প্রতিক মাসগুলিতেও ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারীর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, ২০১৫ মে থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের ১২টি রাজ্যে কমপক্ষে ৩৬ জন মুসলমান নিহত হয়েছেন। একই সময়ের মধ্যে ২০টি রাজ্য জুড়ে প্রায় ২৮০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রাইটস গ্রুপটি।

গতবছর একটি বিশেষভাবে ভয়াবহ ঘটনায়, জম্মু ও কাশ্মীরের মুসলিম যাযাবরদের সে অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যে একদল হিন্দু পুরুষ ৮ বছর বয়সী একটি মুসলিম শিশুকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা করেছিল।
দেশটি মুক্ত গণমাধ্যম ও প্রতিবাদের ওপর আক্রমণ দেখেছিল এবং ইতিহাসের বইগুলি হিন্দু কৃতিত্বের পক্ষে আবারও লেখা হয়েছে। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার। (চলবে)



 

Show all comments
  • Saiful Saif ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৭ এএম says : 0
    গাজওয়ায়ে হিন্দ অপেক্ষা করছে, ইনশাআল্লাহ মুসলমানেরই বিজয় হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mynuddin Joy ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৮ এএম says : 0
    যখন কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর যুলুম করল তখন অন্য রাজ্যের মুসলমানরা চুপ ছিল। আর আজ প্রায় সকল রাজ্যের মুসলমানরা বিপদগ্রস্ত। আর তা দেখে আমরা প্রতিবেশি মুসলিমরাও শীতের কম্বলের নিচে উষ্ণতা খুঁজছি। তবে সেই দিন আর বেশি দূরে নাই যেই দিন কম্বলের ভেতর থেকে বের হওয়ার সুযোগ আর থাকবে না। বর্তমান মুসলিমরা নামধারী মুসলিম যাদের মনে অন্য মুসলিমের রক্তের দাগ কাটে না। আমি থিক্কার দেই এইসমস্ত পেট পূজারি আর ধর্ম ব্যবসায়ী মুখোশ পরিহিত বোবা শয়তানদের...!!
    Total Reply(0) Reply
  • Md Moinuddin ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৮ এএম says : 0
    এই প্রথিবীতে মানবতা বলতে কিছুই নেই,,,। থাকলে মুসলিমরা কেন নির্যাতিত হয়। ভারত নিজের দেশের সজ্ঞালুদের অধিকার কেডে নিয়ে অন্যদেশের সজ্ঞালুদের নিজ দেশে বসবাস করাতে চাই। হয়তো নরেন্দ্র মোদি জানেন ইতিহাস মাত্র একশ বছরের হয়নায় হিন্দুরা ভারতে ক্ষমতায় আছে তাথে বুঝা জাচ্ছে হিন্দুরা কতটা উগ্রাবাদী।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rubel ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম says : 0
    যে দেশে হিন্দু রা কয়েক বছর ধরে শাসন করে মুসলিম হটাও আন্দোলন করতেছে ,আর মুসলিম রা হাজার বছর শাসন করে হিন্দু হটাও যদি আন্দোলন করতো ,এখন একটা হিন্দুও পাওয়া যেতো না ,
    Total Reply(0) Reply
  • Abir Ahmed ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম says : 0
    মোদি তার ক্ষমতাকে দীর্ঘজীবী করার জন্য এই দানবীয় চাল চালছে।এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব হবে ভয়ংকর
    Total Reply(0) Reply
  • Ziared Rahman ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম says : 0
    জতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক ভাবে কেন ভারতের সরকারের বিরুদ্ধে চুপ কিছু বুঝলাম না। এই ভাবে চোখের সামনে একটা জাতিকে শেষ করে দিবে সেটা দেখার জন্য কেউ নেই বা কথা বলার কেউ নেই এটা কেমন কথা হল? মুসলিম দেশ গুলা কেন চুপ কিছুই বুঝতে পারছি না!!! পৃথিবীতে মানবতা নামের অফিস গুলা ভেঙ্গে ফেলা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Pirates King ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪১ এএম says : 0
    ভারতবর্ষে যেসব মুসলিম শাসকরা, শাসন করেছেন তারা ইচ্ছে করলে সমস্ত হিন্দুদের মুসলিম বানাতে পারতেন। সম্রাট আকবর থেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজসভায় অনেক হিন্দু মন্ত্রী দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। আর বর্তমান ভারতে ধর্ম ব্যবসায়ীরা শাসন করছে এবং প্রতিনিয়ত মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। ইতিহাস সাক্ষী,, যেই দেশে ধর্মীয় গোঁড়ামি বেশি, সেই দেশে রক্তপাত হানাহানি দাঙ্গা হাঙ্গামা বেশি।
    Total Reply(0) Reply
  • ash ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৪:১৪ এএম says : 0
    MODI & AMIT SHAAA AKHON BANGLADESH KE FLOW KORCHE !
    Total Reply(0) Reply
  • Md amran Hossain ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৭:৩২ এএম says : 0
    আহ কিহবে মুসলমান জাতির
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ