নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
লক্ষ্য বিশাল- ১৯০। এবারের বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সর্বোচ্চ (গতকাল সন্ধ্যার ম্যাচ বাদে)। সেই লক্ষ্যের শুরুতেই জোড়া হোঁটচ। রানের বোঝা মাথায় উইকেটে এলেন মুশফিকুর রহিম। দুর্দান্ত সব সুইপে যখন বল আছড়ে ফেলেছেন বাউন্ডারির ওপারে, পাহাড়সম চাপকেও তার সঙ্গে উড়িয়ে দিলেন খুলনা টাইগার্স অধিনায়ক। তাকে আটকাতে ৯ জন বোলারকে হাত ঘুরিয়েও লাভ হয়নি রাজশাহী রয়্যালসের। দমানো যায়নি ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’কে। এগিয়ে চলেছিলেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম শতকের দিকে। তবে জয়ের জন্য যখন দরকার মাত্র দুই রান ঠিক তখনই মাইলফলকের আশায় খেলতে চেয়েছিলেন বড় শট। রবি বোপারার বলে সেই সোয়েব মালিকের হাতেই ধরা পড়েন সীমানায়, যার ঝড়ে বড় সংগ্রহ পায় রাহশাহী।
তবে তার আগে মুশফিকের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ভর করেই উড়তে থাকা রাজশাহীকে থামিয়ে খুলনা পেল দারুণ এক জয়। টি-টোয়েন্টিতে আগের সেরা ৮৬ ছাড়িয়ে থামেন ৯৬ রান করে। তার ৫১ বলের দুর্দান্ত ইনিংসটি গড়া ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায়। সবমিলিয়ে টিটোয়েন্টিতে এটি তার ২১তম ফিফটি আর বিপিএলে দ্বাদশ। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে টাইগার্স। ১৯০ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে দুই বল বাকি থাকতে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শোয়েবের ৮৭ ও রবি বোপারার ৪০ রানে ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছিল রাজশাহী। শেষ ৬ ওভারেই ৮১ রান তুলেছে দলটি। এর মাঝে আমিনুল ইসলামের লেগ স্পিনে তিন ছক্কা হাঁকিয়েছেন শোয়েব। এই অলরাউন্ডার ৫০ বলের ইনিংসে আরও একটি ছক্কা ও ৮টি চার ছিল।
১৯০ রানের লক্ষ্য সব সময়ই কঠিন। সেটাকে আরও কঠিন করে ফেলেছিলেন নাজমুল হোসেন। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আন্দ্রে রাসেলের দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন এই ওপেনার। তাঁর সঙ্গী রহমানউল্লাহ গুরবাজও বিদায় নিয়েছেন তৃতীয় ওভারে। তাতে খুলনার অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি। প্রথম দুই ওভারেই চারটি চার মারা রাইলি রুশোর সঙ্গী হিসেবে নেমেছেন মুশফিক। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য রানে রুশোর সঙ্গে পাল্লা দিয়েছেন মুশফিক। এমনকি রুশো আউট হওয়ার আগেই তাঁকে টপকে গেছেন মুশফিক। দ্বাদশ ওভারে কামরুল ইসলামের বলে ৩৫ বলে ৪২ রান করা রুশো বিদায় নিয়েছেন।
এর পর দারুণ এক জুটি গড়েছেন শামসুর রহমান শুভ ও মুশফিক। মাত্র ২২ বলে ৫৭ রান তুলে ফেলেছিলেন এ দুজন। এর মাঝে ৩০ বলে পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছেন মুশফিক। আর তাইজুল ইসলামকে বিপিএলের সবচেয়ে বড় ছক্কা মেরেছেন শামসুর (১০৬ মিটার দূরে)। শেষ ৪ ওভারে ৩৬ রান দরকার ছিল খুলনার। আন্দ্রে রাসেলের ওভারের প্রথম ৫ বলে মাত্র চার রান তুলেছিল খুলনা। শেষ বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হয়ে গেছেন শামসুর (২৯)।
১৮তম ওভারে তাঁর হাতে বল দেওয়া যে কত বড় ভুল ছিল সেটা ১৪ রান দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন ফরহাদ রেজা। শেষ দুই ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল খুলনার। ১৯তম ওভারে রাসেলের প্রথম তিন বলে মাত্র ৩ রান এসেছিল। চতুর্থ বলেই ছক্কা মেরে চাপ কমিয়ে দিয়েছেন মুশফিক, পরের বলেই চার।
শেষ ওভারে মাত্র ৪ রান দরকার ছিল। ম্যাচ যে খুলনা জিতছে তাতে কারও সন্দেহ ছিল না, বরং আগ্রহ মুশফিকের সেঞ্চুরি হবে কি না তা নিয়ে। দলের ৪ দরকার হলেও মুশফিকের দরকার ছিল পাঁচ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে অন্যপ্রান্তে এলেন মুশফিক। পরের বলে ফ্রাইলিং নিলেন এক রান। ৪ বলে দরকার ২, মুশফিকের ৪। কিন্তু তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়লেন মুশফিক। ৫১ বলে ৯৬ রানের ইনিংস খেলেই সন্তুষ্ট হতে হলো মুশফিককে। পরের বলেই চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দিয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী রয়্যালস : ২০ ওভারে ১৮৯/৪ (লিটন ১৯, জাজাই ১, আফিফ ১৯, মালিক ৮৭, বোপারা ৪০*, রাসেল ১৩*; মিরাজ ০/১৭, আমির ২/৩৬, ফ্রাইলিঙ্ক ১/২৯, শহিদুল ১/৩৫, আমিনুল ০/৩০)।
খুলনা টাইগার্স : ১৯.৪ ওভারে ১৯২/৫ (শান্ত ০, গুরবাজ ৭, রুশো ৪২, মুশফিক ৯৬, শামসুর ২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ১৪*; রাসেল ২/৪১, রাব্বি ১/১৮, আফিফ ১/২৪, আবু জায়েদ ০/৭, মালিক ০/১৪, বোপারা ০/৩২, কাপালী ০/৩১, তাইজুল ০/১১, ফরহাদ ০/১৪)।
ফল : খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মুশফিকুর রহিম (খুলনা)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।