পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অসম্মানের তো প্রশ্নই উঠে না, বাকি জীবন আলেম ওলামাদের সম্মান ও ইসলামের খেদমত করে যেতে চাই। মানুষমাত্রই ভুল হয়। আমার ভুল হয়ে থাকলে এবং কেউ কষ্ট পেলে গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
গত মঙ্গলবার বাদ মাগরিব মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আযম ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কমপ্লেক্স মিলনায়তনে জমিয়াত নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের সাথে এক মতবিনিময় সভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় রাজধানীসহ ঢাকা ও অন্যান্য জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মতবিনিময় সভার মাধ্যমে মনে হয়, আমি যেন সারাদেশের বিপুল সংখ্যক আলেমদের সাথে কথা বলছি। ছোটবেলা থেকে আলেম সমাজ ও ধর্মীয় মুরুব্বীদের সম্মান করা আমার অভ্যাস। জীবনভর রাজনীতি করার পাশাপাশি আমি বড়দের সাথে শ্রদ্ধার সম্পর্ক বজায় রেখেছি। ধর্ম প্রমিন্ত্রী হওয়ার পর আন্তরিক নিষ্ঠা ও সততার প্রমাণ দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি কেউ দেখাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
তিনি উপস্থিত আলেমদের উদ্দেশ্যে বলেন, সামনে দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবো। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও পরকালের সম্বল সংগ্রহ করার জন্য বাকি জীবন কাজ করতে চাই। গত মাসখানেক আগে আমার দেয়া একটি বক্তব্যে রং লাগিয়ে একটি মহল প্রচার করেছে। অন্য জায়গার কথা এনে আরেক প্রোগ্রামের ছবিতে কৌশলে জুড়ে দিয়েছে। এখন তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারে দিনকে রাত করা যায়। এরপরও আমার নিজের বক্তব্যেও ভাষা ও শব্দ প্রয়োগে অনিচ্ছাকৃত কিংবা অসাবধানতাবশত যে কোনো ত্রুটির ফলে কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকেন তাহলে ক্ষমা চাইতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। আমি মন থেকে খারাপ উদ্দেশ্যে কিছু বলা বা কারো প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার লোক নই। দেশের সকল আলেম সমাজ ও সরকারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সাথে আমরাও আলেম ওলামাদের খেদমত করাকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে দেখি। সরকারের সকল মহলে ইসলামের খেদমত ও ইসলামী ভাবধারার সমাজ তৈরির চিন্তা থাকতে হবে। ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক আদব কায়দা এদেশের গণমানুষের প্রাণের বিষয়। এর সাথে সমন্বয় করে ক্ষমতায় থাকতে হবে। যদি সরকার আলেম ওলামাদের মাধ্যমে এই সমাজের সাথে সম্পৃক্ততা না থাকে তাহলে উগ্রবাদ বা গণবিরোধী শক্তি সমাজের নেতৃত্ব নিয়ে নেবে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, দাঁড়ি টুপিওয়ালা লোক মানুষ পছন্দ করে। নামাজী ব্যক্তি আমার পছন্দ। কেবিনেট সেক্রেটারির বিদায় অনুষ্ঠানে তিনি তার রুচি ও পছন্দের কথা তুলে ধরেন। নতুন কেবিনেট সেক্রেটারিও নামাজী পরহেজগার ও দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তি।
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য থেকে বাংলাদেশের মানুষের মনের কথাই ফুটে উঠে। ধর্মী প্রতিমন্ত্রীও একই ধারার লোক। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন এরকম মূল্যবোধ সম্পন্ন একটি সমাজ বিনির্মাণেই কাজ করে যাচ্ছে। মাদক বিশৃঙ্খলা উগ্রতা দুর্নীতি ও অস্থিরতা দূরীকরণে সরকারকে আলেম ওলামা পীর মাশায়েখের সাহায্য নিতে হবে। তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা ছাড়া সরকার সমাজের হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী বলেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্য নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল বোঝাবুঝি দূর করার সৎ উদ্দেশে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দের সাথে বসায় তাকে ধন্যবাদ জানাই। এটি তার উদারতার পরিচয়। এই মতবিনিময়ের মাধ্যমে তিনি মূলত কয়েক কোটি ধর্মপ্রাণ মানুষের সাথে বসেছেন বলে ভাবতে পারেন। সারাদেশে আমাদের ছাত্র শিক্ষক শুধু নন, অভিভাবকসহ বিভিন্ন দরবারের মধ্য দিয়ে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত। ভুল পারসেপশন মানুষের ক্ষতি করে। এটি দূর করার মহৎ উদ্দেশ্যেই আমরা ধর্ম প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে বসেছি। আশা করি, তার ব্যাপারে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি ও দ্বিধাসংশয় এ বৈঠকের পর সম্পূর্ণ দূর হয়ে যাবে। তিনি সব ঘরানার আলেম উলামাকে সম্মান করেন তাই এখানে কোনো অষ্পষ্টতা থাকা উচিত নয়। আমাদের সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে আগে তিনি যেমন ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন ভবিষ্যতেও আমাদের একজন অভিভাবক হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আল্লামা সৈয়দ মাহবুুবুর রহমান (জৌনপুরী), প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহ মো. মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস (বরগুনা), প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক (ঢাকা), প্রিন্সিপাল মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, প্রিন্সিপাল আ খ ম আবুবকর সিদ্দিক (ঢাকা), ড. প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. ইদ্রিস খান (ময়মনসিংহ), প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক (ঢাকা), প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাই (নারায়নগঞ্জ), প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. রেজাউল হক (ঢাকা), প্রিন্সিপাল মাওলানা এজহারুল হক (ঢাকা), প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাই বারী (বগুড়া), প্রিন্সিপাল মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার (ঢাকা), প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. ইসমাইল (চট্টগ্রাম), প্রিন্সিপাল আবু জাফর মো. ছাদেক হাসান (ঢাকা), প্রিন্সিপাল মাওলানা জহিরুল হক (গাজীপুর), প্রিন্সিপাল মাওলানা হারুনুর রশিদ (বরগুনা), প্রিন্সিপাল মাওলানা ফারুক আলম হাওলাদার (পিরোজপুর), প্রিন্সিপাল মাওলানা নোমান (নারায়নগঞ্জ), প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল জলিল মিয়া (নরসিংদী), মাওলানা মো. ছিদ্দিকুল্লাহ পাটোয়ারী (ঢাকা), মাওলানা শামছুর রহমান (ঢাকা), ড. মুহাম্মদ হায়দার আলী (ঢাকা), এইচ এম আমিনুর রহমান (ঢাকা), মো. মোজাম্মেল হক (বরগুনা), মাওলানা মো. নুরুল আমীন আমজাদী (ঢাকা)সহ বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।