Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমরা কি সবাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছি?

তৈমূর আলম খন্দকার | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

সত্য, ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে এবং অত্যাচার, অবিচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে কলম। কলমের এই শক্তির কথা বিবেচনায় নিয়েই ৪০-৪৫ বছর আগে শক্ত হাতে কলম ধরার চেষ্টা করেছিলাম। সে চেষ্টা এখনো রয়েছে অব্যাহত। স্কুল-কলেজের দেয়াল পত্রিকা থেকে শুরু করে ‘গণডাক’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদনার আগেও আমার লেখা জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীকালে রাজনীতিতে ব্যাপক সম্পৃক্ততা, প্রায় প্রতিনিয়ত জেলহাজত, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিআরটিসির চেয়ারম্যানসহ সরকারি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন, ২০০৭-২০০৯ সালে ‘১/১১’ সরকার কর্তৃক ২৬ মাস কারাবরণ, পরবর্তীকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রায় বছরকাল ধরে নির্বাচনী কাজে মাঠপর্যায়ে ব্যস্ত থাকায় কলম চালানোর বিষয়ে ভাটা পড়ে। ২০১১ সালের পর বিবেকের তাড়নায় আবার কলম ধরেছি। শক্ত হাতে চোখ বন্ধ করে সত্য প্রকাশের দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়ার বাসনার সৃষ্টিকর্তার সাহায্য কামনা করেছি। ইতোমধ্যে ছয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে, আরো বই শিগগিরই প্রকাশের অপেক্ষায়। কিন্তু আমার কলম আর চলতে চায় না, বারবার থমকে দাঁড়ায়।

যখন পত্রিকায় দেখি, প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য আপন পিতা ও চাচা নিষ্পাপ শিশু তুহিনকে পরিকল্পিতভাবে ঠা-ামাথায় হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে, তখন কলম চলতে চায় না। যখন পত্রিকায় দেখি ভিন্নমত প্রকাশের দায়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করার পর আরো পেটানোর জন্য পেইন কিলার খাইয়ে নির্যাতনের পর নির্যাতন করে সহপাঠীরা মেধাবী আবরারকে খুন করে; একটু পানি চেয়েও সহপাঠীদের থেকে পানি পায়নি সে। যখন চিন্তা করি, হত্যাকারী সহপাঠীরাও এ দেশের মেধাবী সন্তান, যাদের বুয়েটের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াতে পিতা-মাতার মাথার ঘাম পায়ে পড়ে, ওদের কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের নেয়া জবানবন্দী পাঠ করার পর দেশ, জাতি, রাষ্ট্র ও সমাজ নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার কলম চলে না। কারণ, যতই লিখি, এর সমাধান আর দেখছি না। তাহলে সময় ব্যয় ও পরিশ্রম করে কলম চালিয়ে লাভ কী? ডিএমপি উপকমিশনারের বক্তব্যে আরো বিস্মিত হয়েছি। তিনি বলেছেন, ‘আবরারকে হত্যার উদ্দেশ্যে পেটানো হয়েছে, নাকি পেটানোর জন্য পেটানো হয়েছে, এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এ মন্তব্য শুধু হতাশার কথা নয়, বরং বিশ্বজিৎ হত্যার আসামিদের (যারা ক্ষমতাসীন ঘরানার লোক) মতো খালাস দেয়ার কোনো বীজ বপন করা হচ্ছে কি না, এ ধারণা থেকেও আমার কলম থমকে দাঁড়ায়। তোষামোদিতে আমলারা অদ্বিতীয়, কোনো অপরাধকে আড়াল করার জন্য তাদের কারসাজিতে যেকোনো নাটক, এমনকি তাদের সাজানো ‘জজ মিয়া নাটক’ও নিন্দনীয়। এ ধরনের নাটকের যবনিকা টানতে পারি না বলেই কলম ধরতে আর মন চায় না। আমলারা যখন যেমন তখন তেমন। এ ধরনের নাটক আগেও সমর্থন করিনি, এখনো করি না। এ দোষে দুষ্ট কি শুধু পুলিশ, শপথ নিয়ে সাংবিধানিক আসনে (যেমন নির্বাচন কমিশন) বসে জনগণের রক্ত নিংড়ানো টাকায় বেতন খেয়ে গদি রক্ষার জন্য শপথ গ্রহণকারী আমলারা যখন মিথ্যার পর মিথ্যা বলে যায়, তখন তাদের কুৎসিত চেহারা স্মৃতিপটে ভেসে আসে বিধায় আর লিখতে মন চায় না। যখন দেখি, মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করার জন্য বুদ্ধিজীবীরা গলা ফাটাচ্ছেন, মন্ত্রীরা অপকৌশল হিসেবে খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলররা দুর্নীতি, এমনকি কেউ কেউ যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত, তখন আর লিখতে মন চায় না।

তবে আশান্বিত হই যখন কেউ কেউ সত্য বলতে পিছপা হন না; যেমন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘এ দেশে বুদ্ধিজীবীরা সরকারের চামচাগিরি করে’। রাশেদ খান মেনন বিলম্বে হলেও বলেছেন, ‘আমাকে কেউ ভোট দেয় নাই’ এবং আরো বলেছেন যে, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, গত নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি।’ এ সত্য প্রকাশের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলছি, অনির্বাচিত সংসদের সদস্য পদে কেন তিনি শপথ নিলেন? এতদিনে সুর পাল্টিয়ে বলছেন ভিন্ন কথা। সুর পাল্টানো কি তার মতো রাজনীতিবিদদের মুখে শোভা পায়? সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে ‘সত্য’ প্রকাশ করেছেন বিবেকের তাড়নায়। এখন সুর পাল্টাচ্ছেন রাজনৈতিক কারণে, কারণ এমপি পদ রক্ষার বিষয়টিও জড়িত। তিনিই তো বীরদর্পে বলেছিলেন, এ দেশ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এ জন্যও তাকে সালাম। এখন তার ভিন্ন সুর তাকে আগের অবস্থায় নিয়ে গেছে। তবুও তাকে অভিনন্দন, কারণ কারাবন্দী ‘সত্যের’ মুখ তিনি খুলেছেন। অবশ্যই কোনো-না-কোনো দিন জনমনে ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রশ্ন প্রকট আকার ধারণ করবে এবং জবাবদিহিতার কাঠগড়া থেকে অনেকেই রেহাই পাবেন না। এখন দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চলছে। সরকারি তরফে এ নিয়ে গর্বেও শেষ নেই। অথচ, ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোটাধিকারের প্রশ্নে জাতির সাথে যে চরম দুর্নীতি করা হয়েছে, এর চেয়ে বড় দুর্নীতি আর কী হতে পারে?

বেসিক ব্যাংক লুট হয়ে গেল, অথচ দুদক টাকার হদিস খুঁজে পেল না আজো। প্রায় দু’ডজন মামলা হলো, কিন্তু ব্যাংকের চেয়ারম্যান আসামি হননি। এটাই কি দুর্নীতি দমনের নমুনা? এ প্রেক্ষাপটে ধারণাটি আমার এমনই যে, দেশটি এখন শুধু শাসক দলের। এ দেশের সব সম্পদ ও সুযোগ সুবিধা সে দলই ভোগ করবে, বাকি সব নাগরিক অপাঙক্তেয়। বর্তমান সরকারি দলের দুর্নীতি শেষ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের স্তর অতিক্রম করে এখন পরীক্ষার খাতা বদল নয়, পরীক্ষার্থী বদল পর্যন্ত চলে গেছে। দলের সংরক্ষিত আসনের একজন মহিলা এমপি অন্যজনকে দিয়ে বিএ পরীক্ষা দিইয়েছেন। এ ক্ষেত্রে মহিলা এমপির মতোই দায়ী ওই সব দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, অধ্যক্ষ, কেন্দ্র নিয়ন্ত্রক; যারা এ জঘন্য অপরাধকে নগ্নভাবে প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং মহিলা এমপিকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা দরকার। সব কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি শুরু হয়েছে দলীয় অযোগ্য নীতিহীন লোকদের নিয়োগের মাধ্যমে। পত্রিকান্তরে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি যুবলীগ সভাপতির পদপ্রার্থী হতে চেয়েছেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দিনে দিনে রংপুর থেকে চলে আসেন ঢাকায় টকশোতে অংশগ্রহণ করে সরকারি দলের কীর্ত্তন গাওয়ার জন্য। নিরপেক্ষতার ভান করে যখন তারা ক্ষমতাসীন দলের সাফাই গাইতে থাকেন, দৃশ্যত মনে হয়, তাদের ধারণা বাংলাদেশের জনগণ খুব বোকা। নতুবা জনগণের বেতন খেয়ে সরকারের সাফাই গাইতে এমন নিরপেক্ষতার ভান করা যায় কিভাবে? আগেও এ ধরনের ভণিতা করা হয়েছে। তবে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, সরকার যখন বিপদগ্রস্ত হয় তখন আর এদের খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন কেউ কেউ নিজেকে জাহির করার জন্য বরং অন্য প্ল্যাটফর্ম খোঁজেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর অসৎ উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় পিতা ও চাচা কর্তৃক নির্মমভাবে ঘুমন্ত শিশু তুহিনকে হত্যা করে তার কান ও অঙ্গ কেটে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখার নৃশংস ঘটনার কারণ গভীরভাবে চিন্তা করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। এমন আরো ঘটনা। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, ‘লক্ষ্মীপুরে ১০ টাকা চাওয়ায় আট বছরের শিশুকে তার মা গলা টিপে হত্যা করেছে। মাত্র গত ৯ মাসে হত্যা করা হয়েছে ৩২০টি শিশুকে। মাদারীপুর কালকিনিতে ১৪ দিন বয়সের নবজাতককে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে তার মা।’

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গত ৯ মাসে আপন মায়ের হাতে নিহত হয়েছে ২৮টি শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে ২৯টি শিশুকে এবং ২৩টি শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এ দেশে এক হাজার ৬৩৪টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। ২২ অক্টোবর টাকার জন্য পঙ্গু স্কুলশিক্ষককে (গাজীপুর জেলার শ্রীপুর) রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া পুত্র। বাগেরহাট শহরে মোবাইল কিনে না দেয়ায় এক নারীকে (মা) ২০ সেপ্টেম্বরে গলা কেটে হত্যা করেছে নিজের মাদকাসক্ত ছেলে। এসব অভাবনীয় অপরাধ কেন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর সমাধান জাতি পাবে কোথায়? পিতা-মাতার হাতে সন্তান খুন এবং সন্তানের হাতে পিতা-মাতা খুন ছাড়াও এই ৯ মাসে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৪৮ জন। এর মধ্যে কয়েদি ১৮ জন এবং হাজতি ৩০ জন। এ বছর জুলাই-আগস্টের দিকে ছেলেধরা গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে গণপিটুনির ঘটনা বৃদ্ধি পায়। গত ৯ মাসে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬০ জন। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই মারা গেছে ১৭ জন। গত ৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১৬০টি। এতে নিহত হয়েছে ৩৪ জন এবং আহত এক হাজার ৮৬৭ জন। এ সময়কালে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপসহ নারী নির্যাতনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ মাসে যৌন হয়রানির শিকার ২০৩ জন নারী। এর মধ্যে যৌন হয়রানির কারণে ১২ জন আত্মহত্যা করেছেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটে কর্তৃক খুন হয়েছেন চারজন নারী ও ছয়জন পুরুষ এবং হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে ১৯৬ জন নারী-পুরুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক হাজার ১১৫ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৫৭ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে আটজন নারী। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে ১৭৮ নারীর ওপর। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার ২৯৭ নারী। এর মধ্যে ২১৮ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছে ৪২ জন নারী। শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩৭ জন নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১২১ জন নারী। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৪৪ জন। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৭০ জনকে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে তিনজন নারী। এ ছাড়া স্বামীর গৃহ থেকে বিতাড়িত হয়েছে চারজন। ২৯ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এ সময়কালে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ১২ জন নারী। দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশুদের হত্যা এবং নির্যাতনের মাত্রা আশঙ্কাজনক। গত ৯ মাসে মোট এক হাজার ৬৪৪ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ১৮২ শিশু, আত্মহত্যা করেছে ৬০ শিশু, বিভিন্ন সময় মোট ৩৮টি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে ৫২টি শিশুর। গত ৯ মাসে ৮৬ জন সাংবাদিক নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা এবং পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছে। একজন সাংবাদিকের রহস্যজনক মৃত্যু ছাড়াও একজন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতন ও গুলিতে নিহত ২৯ জন। এর মধ্যে ২৫ জন গুলিতে এবং শারীরিক নির্যাতনে চারজন নিহত। এ ছাড়া আহত ৩২ জন ও অপহরণের শিকার ২৫ জন। এসব তথ্য জাতীয় পত্রিকা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন সূত্রে উল্লেখ করা হলো।

সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করলে এটাই কি বিবেচনায় আসে না যে, আমাদের সমাজ, দেশ, সরকার সবাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছি, সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইট-সিমেন্টের উন্নয়নের চেয়ে মানসিক ভারসাম্য রক্ষার পরিবেশ অনেক বেশি জরুরি, নতুবা আমাদের বিকারগ্রস্ততা রোধ করা যাবে না।
লেখক: কলামিস্ট ও আইনজীবী



 

Show all comments
  • দীনমজুর কহে ২৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৫০ পিএম says : 0
    লিখতে আপনাকে হবেই।আপনার লেখাটা পড়লাম।আমার চোখঁ বেয়ে পানি ঝড়লো।তাইতো কমেন্ট করার লোভ সামলাতে পারলাম না।লিখক দেয়ালে পোষ্টার লাগানো রাজপথে মিছিল মন্চে বক্তূতাকরে৩০/৩৫ বছর পার করেছি। আজ দীন মজুরী করে জীবিকা নির্বাহ করি ।তবুও শান্তনা অসৎ পথ অবলম্বন করি নাই। কাজের ফাকে ইনকিলাব পড়ি।কমেন্ট করি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানসিক

৩ ডিসেম্বর, ২০২১
২২ আগস্ট, ২০২১
বিয়ের পর থেকেই দেখে আসছি আমার স্বামী তার পরিবারের কথায় আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেয়, অযথা সন্দেহ করে, আজ ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো পরিবর্তন হয়নি, বরং বেড়েছে। সে নিজে নামাজ পড়ে না কিন্তু আমার নামাজ নিয়ে খোটা দেয়। গালমন্দ করে, বাচ্চাদের নামাজ, আরবি শিখাতে গেলেও টিটকারি করে। আমাকে বাবার বাড়ি যেতে দেয় না, কিন্তু সে নিজে যায়। আজেবাজে বন্ধুদের সাথে বেশি মিশে কিন্তু আমাকে কোনো আত্মীয় বা বান্ধবীর বাসায় যেতে দেয় না। সংসারে কোনো উন্নতি নেই, কিন্তু এগুলা নিয়ে কিছু বলতে গেলে বাপ মা তুলে গালি দেয়। লোভী বলে, ভাতের খোটা দেয়। আমার নামাজ হয় না বলে তিরস্কার করে, চরিত্র তুলে কথা বলে। প্রতি ঈদ বা দাওয়াত এর আগে হটাৎ ছোটো খাটো জিনিস নিয়ে ঝগড়া শুরু করে এবং পরবর্তী তিন চার মাস পর্যন্ত মুখ কালো করে থাকে ও আলাদা ঘরে ঘুমায়। সে একদিন রাগ করে কুরআন পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলেছে। আমি একজন শিক্ষিত মেয়ে কিন্তু চাকরিও করতে দেয় না। এই মানসিক অত্যাচার এর মধ্যে থাকতে থাকতে আমি বাচ্চাদের নিয়ে অতিষ্ট হয়ে গেছি। কিন্তু সে সংসার ভাঙতে চায় না। এমতাবস্থায় আমি তাকে ডিভোর্স দিতে চাই, নিজে বাঁচার জন্য, গুনাহ হবে কি?

আরও
আরও পড়ুন