নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এবার জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডের একমাত্র ইনিংস আর দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ইনিংস- দুটিতেই মাহমুদউল্লাহ আউট হয়েছিলেন ৬৩ রান করে। সামনেই ভারত সফর। রানে ফেরার যে তাড়না সেটি মিটলেও, বড় ইনিংসের আক্ষেপ যেন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। অবশেষে মিটেছে তা, সফরের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের শেষ ইনিংসে সেরে নিলেন সেরা প্রস্তুতি। তবে সেঞ্চুরি পেরেও দলকে বাঁচাতে পারেন নি হারের যন্ত্রনা থেকে।
ঢাকা মেট্রোর হয়ে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ৯৫ রানে। গতকাল সকালে ৯৯ থেকে আবু জায়েদকে বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ২১৪ বলে। সেঞ্চুরিতে চার ছিল কেবল ৬টি, ছক্কা ১টি। এটিই বলে দিচ্ছে, কতটা খাটতে হয়েছে তাকে রান করতে।
টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার সবশেষ সেঞ্চুরি ছিল ২০১৫ সালের অক্টোবরে। জাতীয় লিগে ঢাকা মেট্রোর হয়েই খুলনা বিভাগের বিপক্ষে ফতুল্লায় করেছিলেন ১৩২। তবে পরের এই চার বছরে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচই খেলেছেন তিনটি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের এটি দ্বাদশ সেঞ্চুরি। ঢাকা মেট্রোর হয়ে সেঞ্চুরি হলো দুটি। ঢাকা বিভাগের হয়ে ও বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে করেছেন চারটি করে। মধ্যাঞ্চলের হয়ে বিসিএলে করেছেন দুটি।
মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল ঢাকা মেট্রো। তবে প্রথম রাউন্ডে বরিশালের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হারা সিলেট জ্বলে উঠলো ইমতিয়াজ হোসেনের ব্যাটে। অভিজ্ঞ এই ওপেনারের অপরাজিত সেঞ্চুরি ও জাকির হাসানের ফিফটিতে রান তাড়ায় দারুণ এক জয় পেয়েছে সিলেট। ২০১ রান তাড়ায় সিলেট জিতেছে ৮ উইকেটে। ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১১০ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়েছেন সিলেটের অনেক লড়াইয়ের সৈনিক ইমতিয়াজ। জাকির করেছেন ৭২ রান। প্রথম ইনিংসেও ৭১ রান করায় ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তরুণ এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের হাতে।
এদিকে আগের দিন বৃষ্টিতে অনেকখানি সময় নষ্ট হওয়ায় জেতার পথটা কঠিন হয়ে পড়েছিল চট্টগ্রামের। শেষ দিনে নেমে দ্রুত কিছু রান তোলে ইনিংস ছেড়ে দেওয়ার পর চেষ্টা চালিয়েছে বরিশালকে গুটিয়ে দিতে। নাঈম হাসানের তোপে সে চেষ্টায় অনেক দূর এগিয়েও গিয়েছিল তারা। তবে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল আর শাহরিয়ার নাফিসের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেছে বরিশাল।
ফতুল্লায় দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে বরিশালকে ৩৩৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল চট্টগ্রাম। দুই সেশনে ওই রান তোলার অসম্ভব পথের কথা কেউ ভাবেইনি। তবে শেষ দিনের উইকেটে দুই সেশনে অলআউট হতেই পারত কোন দল। সেরকম পরিস্থিতির শঙ্কাও জেগেছিল এক সময়। কিন্তু আশরাফুলের ৬০ আর নাফীসের ৪২ রানে বরিশাল ৭ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে দিন পার করে দিয়েছে।
এছাড়া, পাটা উইকেটে টিকতে পারলেই মিলছে ভুরি ভুরি রান। প্রথম ইনিংসে সাইফ হাসানের ডাবল সেঞ্চুরিতে ঢাকা চড়ল রানের পাহাড়ে। লিটন দাস, নাঈম ইসলামের দুই সেঞ্চুরি আর সোহরাওয়ার্দি শুভর প্রায় সেঞ্চুরিতে তেমনটা করল রংপুরও। তাতে চারদিনের ম্যাচের ফল হওয়ার মতো সময় কিছু বাকি থাকল না। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকার ৫৫৬ রানের জবাবে ৫০৮ রান করে রংপুরও। এই দুই ইনিংস শেষ হতেই পেরিয়ে গেছে চারদিন। শেষ বিকেলে ঢাকা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেও খেলতে পেরেছে কেবল ৩ ওভার।
তবে, দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচের চতুর্থ ও শেষ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১২৩ রান তুলে জয় নিশ্চিত করেছে খুলনা। পুরো ৯০ ওভারের খেলা বাকি। হাতে ৯ উইকেট নিয়ে আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন দলটির দরকার ছিল ১০৮ রান। সহজ লক্ষ্যই বটে। তবে আগের দিন ১৫ উইকেটের পতন হওয়ায় প্রত্যাশা ছিল রোমাঞ্চের। শেষ দিনে খেলা গড়ায়নি সে পথে। সৌম্য সরকারের হাফসেঞ্চুরিতে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে ৭ উইকেটের দারুণ জয় তুলে নিয়েছে খুলনা। সৌম্য ৫৯ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল সমান ৩টি করে ছয় ও চার। চলতি জাতীয় লিগে এটিই খুলনার প্রথম জয়। প্রথম রাউন্ডে তারা ড্র করেছিল রংপুর বিভাগের সঙ্গে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা মেট্রো-সিলেট, বগুড়া
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস : ২৪৬। সিলেট ১ম ইনিংস : ৩১৯। ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস : (আগের দিন ২২৫/৬) ১১৯ ওভারে ২৭৩ (মাহমুদউল্লাহ ১১১, শহিদুল ৪২; আবু জায়েদ ৪/৪৯, রেজাউর ১/৪৭, রাহাতুল ১/২৪, ইমরান ২/৩৫, এনামুল জুনি. ২/৮৮)। সিলেট ২য় ইনিংস : ৫২.৩ ওভারে ২০৪/২ (ইমতিয়াজ ১১০*, জাকির ৭২, আফিফ ৮*; আবু হায়দার ০/৩৯, সানি ১/৩৫, মানিক ১/২৫)। ফল : সিলেট ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : জাকির হাসান (সিলেট)।
চট্টগ্রাম-বরিশাল, ফতুল্লা
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস : ৩৫৬। বরিশাল ১ম ইনিংস : ২১৬। চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস : ৪৭ ওভারে ১৯৫/৬ ডিক্লে. (পিনাক ৫৪, মমিনুল ৩০, মাহিদুল ৪৩, মাসুম ২৭*, নাঈম ১১*; রাব্বি ২/৪৩, আশরাফুল ১/৩৮, নুরুজ্জামান ১/১৯, মনির ১/৬৮, তানভীর ১/২১)। বরিশাল ২য় ইনিংস : ৬৫ ওভারে ১৭৪/৭ (শাহরিয়ার ৪২, আশরাফুল ৬০, মোসাদ্দেক ৩৫, শামসুল ১৫*; নাঈম ৪/৫৪, নোমান ২/৩৪, মাসুম ১/৬)। ফল : ম্যাচ ড্র।
ঢাকা-রংপুর, চট্টগ্রাম
ঢাকা ১ম ইনিংস : ৫৫৬/৮ ডিক্লে.। রংপুর ১ম ইনিংস : ১৮০.৫ ওভারে ৫০৮ (লিটন ১২২, নাঈম ১৩৫, তানবীর ৭৩, শুভ ৯২*, রবিউল ৩৪; সুমন ২/৯২, শাকিল ৩/৮৫, নাজমুল অপু ৩/১৪৬, শুভাগত ১/১১৬)। ঢাকা ২য় ইনিংস : ১০/০ (নাজমুল ৯*, মজিদ ১*; সাজেদুল ০/২, নাঈম ০/৮)। ফল : ম্যাচ ড্র।
খুলনা-রাজশাহী, খুলনা
রাজশাহী ১ম ইনিংস : ২৬১। খুলনা ১ম ইনিংস : ৩০৯। রাজশাহী ২য় ইনিংস : ১৭০। খুলনা ২য় ইনিংস : ২২.১ ওভারে ১২৩/৩ (এনামুল ৪, সৌম্য ৫০*, ইমরুল ২২, মিঠুন ২৭, মিরাজ ১৪*; শফিউল ১/১৫, ফরহাদ রেজা ০/৪, মোহর ১/৩০, তাইজুল ০/৪০, সানজামুল ১/২০)। ফল : খুলনা ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : নুরুল হাসান (খুলনা)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।