পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
মোদিকে এ কথাও বলা হয়, ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে রুশ বাহিনী প্রত্যাহারের পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। আশঙ্কা হচ্ছে, ২০১৯ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর কাশ্মীরের বিষয়টি আবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়াবে। আশঙ্কার এমন পটভূমিতে গোয়েন্দাদের অভিমত, কাশ্মীরের ওপর ভারতের দখলদারিত্ব জোরদার করার পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। অতএব, আমেরিকা-আফগান তালেবান শান্তিচুক্তির সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া মোকাবেলার লক্ষ্যে মোদি সরকার তড়িঘড়ি করে সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-ক ধারা বাতিল করে। উল্লেখ করা যেতে পারে। আমেরিকা ও আফগান তালেবানের মধ্যে কাতারে যে আলোচনায় (অষ্টম রাউন্ড) চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল সেই আলোচনাটি সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। পরবর্তী রাউন্ডের আলোচনায় সেটি হতে পারে অথবা আরো পিছিয়ে যেতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ওপর ভরসা করে এহেন অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়ে মোদি সরকার কার্যত ফেঁসে গেছে, এ প্রসঙ্গে আফগান তালেবানদের পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আফগান সমঝোতা কার্যক্রমকে কাশ্মীর পরিস্থিতির সাথে মেলানো ঠিক হবে না। অথচ মোদি সরকার তো সেটা মিলিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সব সময় যখন গোয়েন্দা সংস্থার ওপর নির্ভরতা যে সমীচীন নয়, মোদি এখন সম্ভবত সেটা বুঝতে পারছেন।
গ্লোবাল টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে কিছু কথা বলা হয়েছে, যা অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য। বলা হয়েছে, আঞ্চলিক, জাতিগত এবং ধর্মীয় বিরোধগুলো কাশ্মীরে এখন ঘনীভূত। এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ অঞ্চর নয়। জাতিসংঘ কাশ্মীরের মর্যাদার বিষয়ে প্রস্তাব পাস করেছিল। আঞ্চলিক প্রকৃতি পরিবর্তন করতে ভারতের বলপূর্বক পদক্ষেপটি সহজেই এগিয়ে যেতে পারার সম্ভাবনা নেই। নয়াদিল্লীর একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতি নতুন ও পুরাতন ঘৃণা সামনে দেশটিকে কঠিন ফাঁদে ফেলবে। নয়াদিল্লী যদি বেপরোয়া কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলোকে সমর্থন করার জন্য জাতীয়তাবাদকে ব্যবহার করে তবে একটি অত্যন্ত মন্দ স্ফুলিঙ্গের সূচনা হবে। আর একটি অতি জাতীয়তাবাদী ভারতের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
কথাগুলো খুবই কঠোর ও দ্বর্থ্যহীন। কিন্তু এসব কথা শোনার বা অনুধাবন করার লোক ভারতের ক্ষমতাসীনদের মধ্যে ক’জন আছেন, সেটাই প্রশ্ন। কাশ্মীর ইস্যু সব বিচারে একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু, যেমন ফিলিস্তিন ইস্যু। একে একতরফা সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের মাধ্যমে উল্টাপাল্টা করে দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মহলকে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। ভারতের ওপর যথাযথ চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে সে তার গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য হয়। মনে রাখতে হবে, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-ক ধারা থাকার অর্থ কাশ্মীরের সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন থাকা, যা ভারত অস্বীকার বা লঙ্ঘন করতে পারে না। আর না থাকার অর্থ হচ্ছে, ভারতের পররাজ্য দখল ও আগ্রাসন এবং তা স্বীকার করে নেয়া। এ নজির যদি তৈরি হয়ে যায়, তবে ভারতসহ বড় দেশের কাছে প্রতিবেশী ছোট দেশের স্বাধীনতা ও সার্বসৌমত্ব আর থাকবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।