পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
পক্ষান্তরে যারা যোগদানে ইচ্ছুক নন তাদের রাজ্য জোর করে দখল করে নেয়ার কথা বলা হয়। এতেও কাজ হয়, অনেকে যোগদান করেন। একেবারে অনিচ্ছুকদের রাজ্য জোর করে দখল করে নেয়া হয়। স্মরণ করা যেতে পারে, তিনটি স্টেট স্বাধীন থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করে। এগুলো হলো, হায়দারাবাদ, জুনাগড় এবং জম্মু কাশ্মীর। হায়দারাবাদ ও জুনাগড়ের শাসক বা প্রিন্স ছিলেন মুসলমান। কিন্তু এ দু’রাজ্যে অধিবাসীদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু রাজ্য দুটি স্বাধীন থাকতে চাইলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা পক্ষপাতি ছিল ভারতে যোগদিতে। এ ধরনের বাস্তবতায় ভারত রাজ্য দুটি জোর করে দখল করে নেয়। পরে গণভোটের মাধ্যমে এই দখল বৈধ করা হয়। কাশ্মীরের অবস্থা ছিল ভিন্ন। এর জনগণের অধিকাংশ ছিল মুসলমান এবং রাজা ছিলেন হিন্দু। মহারাজ হরিসিং স্বাধীন থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে নেহেরু তাকে ভারতে যোগদানের জন্য যথেষ্ট তৎপর হয়ে ওঠেন নেহেরু মহারাজাকে রাজি করানোর জনস্য মাউন্টব্যাটেন ও গান্ধীজিকে পর্যন্ত কাজে লাগান। অনেকেই ধারণা করেন, শেষ পর্যন্ত, মহারাজা ভারতেই যোগদান করবেন। কারণ সিং ছিলেন ঘোর হিন্দুত্ববাদী। ওদিকে এই আশঙ্কার প্রেক্ষিতে মুসলমানরা পাকিস্তানে যোগদান করার জন্য সক্রিয় ও তৎপর হয়ে উঠে। বাস্তবতার এই পটভূমিতে শেষাবধি মহারাজা হরিসিং ভারতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন এবং নেহেরুর সঙ্গে অ্যাকসেশন চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এভাবেই এই অ্যাকসেশন চুক্তি কাশ্মীরকে আজকের অবস্থায় টেনে আনে। নেহেরু ভালোভাবেই জানতেন, কাশ্মীর ভারতের অংশ নয়, কখনোই ছিল না। এটা আনার পথ চেনা করে। তখনকার অন্যান্য হিন্দু নেতা যেমন এটা জানতেন, মাউন্ট ব্যাটেনরাও তেমনি জানতেন। এখন অ্যাকসেশন চুক্তিতেই এটা বুঝা যায়, কাশ্মীরের স্বাতন্ত্র্য ও সার্বভৌম সত্ত্বাকে চুক্তিতে সম্মান দেখানো হয়েছে। এই স্বাতন্ত্র্য ও সার্বভৌম সত্ত্বাকে বিজেপি সরকার অস্বীকার করেছে সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-ক ধারা বাতিল করে দিয়ে। সরকার এটা করতে পারে কি না। সেটা একটা বড় প্রশ্ন। এ নিয়ে একটা আইনী লড়াইও আছে। সংবিধান সংরক্ষণ ও ব্যাখ্যার এখতিয়ার সর্বোচ্চ আদালতের। তার অভিমত এখন জরুরি। এ প্রসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের একটি রায় প্রতিধানযোগ্য। বছর দুয়েক আগে দেয়া ওই রায়ে হাইকোর্ট বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর কখনোই ভারতের অংশ ছিল না এবং এখনো এর অংশ নয়। হাইকোর্ট আরো বলেন, ভারতের সংবিধানে জস্মু ও কাশ্মীরকে সার্বভৌম ভূখণ্ডের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। বিচারপতি হাসনাইন মাসুদী ও বিচারপতি জনকরাজ কতোয়ালের ডিভিশন বেঞ্চের দেয়া ৬০ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারার এই, রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে, যা সংশোধন, বাতিল বা রদ করা যাবে না। আরও বলা হয়, সংবিধানের ৩৭-ক ধারা বিদ্যমান আইনে কাশ্মীরকে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের রায় মোতাবেক আইন সভায় ৩৭০ ধারা একবিংশ ধারাই স্থায়ী অপরিবর্তনীয় রূপ দেয়া হয়েছে, আইন সভায় তা সংশোধন বাতিল বা রদ করা যাবে না।
চতুর্থ কিস্তির নিচে আগের কিস্তির লিঙ্ক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।