পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা জাতীয় দিবস আর ২২ জুলাই হলো দেশটির জাতীয় পতাকার জন্মদিন। বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ভারতের যে জাতীয় পতাকাটি রয়েছে তার ডিজাইনার কে এটি ভারতের ইতিহাস থেকে বিস্মৃত হয়ে গেছে। নানাভাবে ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে গোপন করে ফেলা হয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকার ডিজাইনারের নাম। তবে ইংলিশ ইতিহাসবিদ ট্রেভোর রয়েল তাঁর লেখা ফেরদৌসি বীকন বইয়ে ‘ভারতের ইতিহাস বিকৃতি ও সুরাইয়ার অস্বীকৃতি’ শিরোনামে এক লেখায় উল্লেখ করেছেন ‘ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা বানিয়েছিলেন একজন মুসলীম নারী, আইসিএস বদরুদ্দীন ফাইজ তায়েবজী’র স্ত্রী সুরাইয়া বদরুদ্দীন তায়াবজি’। সুরাইয়ার করা নকশা পন্ডিত নেহেরুর ভালো লাগায় তিনি তাঁর নিজের গাড়ির বনেটে তা লাগিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেটাই ভারতের জাতীয় পতাকার মর্যাদা পায়। সুরাইয়া তায়াবজি ভারতের অহিংস স্বাধীনতা আন্দোলনেও অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেন। ওই লেখায় ইতিহাসবিদ ট্রেভোর রয়েল উল্লেখ করেন ‘হিন্দুপ্রধান ভারতে তিনি বিস্মৃতির অতলে চলে গিয়েছেন। একে নারী, তাও আবার মুসলিম’।
ট্রেভোর রয়েল লিখেছেন, ‘ভারতের জাতীয় পতাকার ডিজাইনার হিসেবে সর্বত্র যে নামটি পাওয়া যায় সেটি হলো পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া। কিন্তু তিনি কী বাস্তবে ভারতের জাতীয় পতাকার ডিজাইনার? না! বরং অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে এক মুসলিম নারীর নাম। যার নাম সুরাইয়া বদরুদ্দিন তায়াবজি। সুরাইয়ার স্বামী ছিলেন বদরুদ্দিন ফাইজ তায়াবজি। তিনি একজন ভারতীয় সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) অফিসার হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। সে সময়েই ভারতের জাতীয় পতাকার ডিজাইন করেন তার স্ত্রী সুরাইয়া বদরুদ্দীন তায়াবজি। এরপর স্বামী বদরুদ্দিন ফাইজ তায়াবজি পতাকাটি নেহরুর কাছে নিয়ে গেলে তিনি তা পছন্দ করেন এবং তাঁর নিজের গাড়িতে লাগিয়ে নেন। এরপর এ পতাকাটিই গৃহীত হয় ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে। কিন্তু ডিজাইনার হিসেবে অজ্ঞাত কারণে কখনোই সুরাইয়া বদরুদ্দীন তায়াবজির নামটি ইতিহাসে তোলা হয়নি। সুরাইয়া বদরুদ্দীন তায়াবজির তৈরি করা পতাকাটি প্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে গৃহীত হয় ১৯৪৭ সালের ১৭ জুলাই। ভারতীয় কোনো ইতিহাসবিদের লেখায় সুরাইয়ার তৈরি করা পতাকাটির বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ইংলিশ ইতিহাসবিদ ট্রেভোর রয়েলের বইতে সুরাইয়া বদরুদ্দীন তায়াবজি’র নাম পাওয়া যায়। তাঁর লেখা থেকে জানা যায়, ভারতীয় জাতীয় পতাকাটির ডিজাইনার বদরুদ্দিন ফাইজ তায়াবজি’র স্ত্রী সুরাইয়া বদরুদ্দীন তায়াবজি।
ভারতের জাতীয় পতাকার কেন্দ্রে ২৪টি দণ্ডযুক্ত নীল ‘অশোকচক্র’সহ গেরুয়া, সাদা ও সবুজ আনুভ‚মিক আয়তাকার ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা। এ পতাকার কেন্দ্রে রয়েছে অশোকচক্র, যা সম্রাট অশোক নির্মিত সিংহ শীর্ষযুক্ত অশোকস্তম্ভ থেকে নেওয়া। সম্রাট অশোক হিন্দু-মুসলিম সবার নিকটই শ্রদ্ধেয় হওয়ায় এ অশোকচক্রও গৃহীত হয় সবার নিকট। স্বাধীনতা প্রাপ্তির কয়েকদিন পূর্বে ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই বিশেষভাবে গঠিত গণপরিষদ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে ভারতের জাতীয় পতাকাকে সব দল ও সম্প্রদায়ের নিকট গ্রহণযোগ্য করে হতে হবে। বাস্তবে তিন রঙের পতাকাতে ছিল একটি চরকা। যা গান্ধী তার পার্টির চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করতেন। সুরাইয়া তায়াবজি মনে করেন এটি ভুল বিষয় উপস্থাপন করবে। এরপর বহু চাপের পর গান্ধী এ চাকাটি পতাকায় নিতে রাজি হন।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।