নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রস্তুতি ম্যাচ মানে নিজেদের প্র্যাকটিস সেরে নেয়া। আবহাওয়ার অবস্থা কিংবা প্রতিপক্ষ দলের উইকেটের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের সম্পর্কে ধারণা নেয়া। সেইসাথে নিজেদের অনুশীলনে যদি কোন ঘাটতি থাকে তাহলে সেটা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা। সফরকারী আফগানিস্তান দল দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথম দিন যে সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছে শেষ দিনের বোলিংয়ের দাপট দেখিয়েছেন রশিদ খান ও জহির খানরা। আফগান ঘূর্ণির ফাদে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বিসিবি একাদশের ব্যাটসম্যানরা। ২৮৯ রানের জবাবে আফগান স্পিনারদের দাপটে মাত্র ৪৪.১ ওভার টিকতে পেরেছে বিসিবি একাদশ। নুরুল হাসান সোহানের দল গুটিয়ে গেছে মাত্র ১২৩ রানে! বিরুপ আবহাওয়ার কারণে ম্যাচটি হয়েছে ড্র।
ব্যাটিং প্রস্তুতিটা আগের দিনই সেরে নিয়েছিল সফরকারীরা। গতকাল দিনটা ছিল বোলিং ডিপার্টমেন্টে ঝালিয়ে নেয়ার। সে লক্ষ্যে একশ’তে একশ’ আফগানিস্তান। তরুণ, অভিজ্ঞ ও ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরমারদের মিলিয়ে বিসিবি একাদশের ব্যাটিং লাইন আপ ছিল যথেষ্টই সমৃদ্ধ। কিন্তু তারা দাঁড়াতেই পারেনি আফগান স্পিনের সামনে। এনামুল হক বিজয়, নাঈম ইসলাম, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, নুরুল হাসান সোহানদের মতো ব্যাটসম্যান থাকার পরও দেড় সেশনও ব্যাট করতে পারেনি সাকিবদের প্রতিনিধিরা। এখনও পর্যন্ত কেবল একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা চায়নাম্যান বোলার জহির ১১.৩ ওভার বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ২৪ রানে। অধিনায়ক রশিদের লেগ স্পিনে ৩ উইকেট এসেছে ২৬ রানে। যাতে লেগ স্পিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চিরায়ত দুর্বলতা এদিন সামনে এসেছে আরো মোটা দাগে। তাদের বীপরিতে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ২৯ রান করেন বল হাতেও আলো ছড়ানো আল-আমিন জুনিয়র।
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৮ উইকেটে ২৪২ রান নিয়ে নেমে এদিন মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে আরও ৪২ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে আফগানরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমেই বিপর্যয়ে পড়ে বিসিবি একাদশ। দলের ১৬ রানে ওপেনার সাব্বির হোসেনকে ফেরান পেসার শাপুর জাদরান। ১৯ রান করা এনামুলকে এলবিডবিøও করে উইকেট নেওয়া শুরু করেন রশিদ। আহমেদ শিরজাদ ছাঁটেন ফজলে রাব্বিকে। অভিজ্ঞ নাঈম ইসলামকে আউট করে উইকেট নেওয়া শুরু জহিরের। ৬০ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে বিপাকে পড়া বিসিবি একাদশ আর দাঁড়াতে পারেনি। জহির, রশিদরা টপটপ উইকেট গিলে ধসিয়ে দেন সোহানদের ইনিংস।
শুধু বোলিংয়েই নয়, নিজেদের প্রস্তুতির পার্থক্য দেখা গেছে ব্যাটিংয়েও। আফগান দুই ওপেনার ইহসানউল্লাহ এবং ইব্রাহিম জাদরান যতটা ধৈর্য্য এবং টেম্পারমেন্টের পরিচয় দিয়েছেন, তার ধারেকাছেও যেতে পারেননি এনামুল হক বিজয় (১৯) ও সাব্বির হোসেন (৪)। সাজঘরে ফিরেছেন দলীয় ২৭ রানের মধ্যেই। আশা জাগানো নাঈম ইসলাম (১৩) কিংবা ঘরোয়াতে ভালো করা ফজলে মাহমুদও (৮) পারেননি কিছু করতে। বল হাতে অগ্নিপরীক্ষায় নামা জোবায়ের হোসেন লিখন যেমন পারেননি নিজের দাবী জোরালো করতে, তেমনি নাঈম ইসলামও আউট হয়ে গেছেন মাত্র ১৩ রান করে। যে কারণে তাদের দলে ফেরার দাবী হয়তো আবারও চাপা পড়ে যাবে খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে।
বল হাতে বিসিবি একাদশের সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন আলআমিন জুনিয়র। তিনি আশা জাগিয়েছিলেন ব্যাটিংয়েও। কিন্তু টেস্ট মেজাজের বদলে মারমুখী খেলে ৫ চারের মেরে সর্বোচ্চ ২৯ রান করে ফিরে যান পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে। ৮২ রানে প্রথম পাঁচ উইকেটের পর, শেষের পাঁচ উইকেট নিতে মাত্র ৪১ রান খরচ করেছে আফগানরা। বিসিবি একাদশের অধিনায়ক সোহান ১৫ এবং ফারদিন অনি ১৪ রান করে দলের সংগ্রহ কোনোমতে ১০০ পার করান।
মাত্র ৮ ওভার হাত ঘুরিয়েছেন রশিদ। জহির আরেকটু বেশি। তাতেই নাকাল বিসিবি একাদশের ব্যাটসম্যানরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ‘আসল’ টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী হবে, সেই বার্তাই যেন দিয়ে রাখলেন জহির-রশিদরা। সামলাতে হবে আফগানদের স্পিন বিষ!
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস : ৯৯ ওভারে ২৮৯/৯ (ডি.) (আগের দিন ২৪২/৮) ( আফসার ৩৫*, রশিদ ১৩, কাইস ২৩*; মেহেদি রানা ১০-০-৩২-০, মানিক ১২-২-৩৪-০, সাকিল ১৭-৬-৩৬-০, সুমন ১৯-৮-৪৩-৩, জুবায়ের ১৯-১-৬৮-০, গালিব ৪-০-১৮-০, আল আমিন ১৮-৩-৫১-৪)। বিসিবি একাদশ ১ম ইনিংস : ৪৪.৩ ওভারে ১২৩ (এনামুল ১৯, সাব্বির ৪, ফজলে মাহমুদ ৮, নাঈম ১৩, আল আমিন ১৯, সোহান ১৫, ইরফান ৯, ফারদিন ১৪, সুমন ৩, মেহেদি রানা ০, মানিক ০*; ইয়ামিন ৫-১-১২-০, শাপুর ৫-২-৪-১, নবি ৮-২-১৮-০, রশিদ ৮-১-২৬-৩, শারজাদ ৫-০-২৩-১, জহির ১১.৩-৩-২৪-৫, কাইস ২-০-১০-০)। আফগানিস্তান ২য় ইনিংস : ৩.৫ ওভারে ১৪/০। ফল : ম্যাচ ড্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।