Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের সামিল: জাতিসংঘ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৩ পিএম

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশন। রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের ওপর সেনাবাহিনী যৌন সহিংসতা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক গঠিত স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক সত্য-অনুসন্ধানী মিশন জানিয়েছে, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং নারীদের ওপর বিভিন্নভাবে যৌন নিপীড়ন চালানোর প্রমাণ পেয়েছে। এমনকি তারা শিশু ও কিশোরের ওপরও এ ধরনের নির্যাতন চালিয়েছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন বলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের শাস্তি দিতে ও আতঙ্কিত করতে যৌন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। নিউইয়র্কে দেয়া এক বক্তৃতায় জাতিসংঘের তথ্য-অনুসন্ধানী মিশনের রাধিকা কুমারাস্বামী বলেন, নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের পরিবেশ নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা তাদের গ্রামে ফিরে যাবে না। পুরুষ, বালক ও হিজড়াদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার ঘটনায় চারপাশের নিরবতা ভাঙতে হবে।
জাতিসংঘের মিশন বলছে, উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্য ও পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইনের কয়েকশ যৌন সহিংসতা থেকে বেঁচে যাওয়া ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে মিশন। আগামী মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।
রাধিকা বলেন, সামরিক কৌশল হিসেবে যৌন সহিংসতাকে ব্যবহার করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এটা তাদের কৌশলের অংশ। কিন্তু রোহিঙ্গা এলাকায় এটা এতই ভয়ঙ্কর হিংস্র ও নৃশংস যে এতে বোঝা যাচ্ছে তারা এই সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে।
নিপীড়নে জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে না পারার ব্যর্থতার জন্য মিয়ানমারের নিন্দা জানিয়েছে তথ্য-অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তি ও মেনে নেয়ার পরিস্থিতি থেকেই এমন সহিংসতা সম্ভব। কারণ সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর শাস্তি কিংবা শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হওয়ার কোনও যৌক্তিক ভয় নেই।
তবে মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের হামলার জবাবে উত্তর রাখাইনের গ্রামে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ৮০ শতাংশ ছিল গণধর্ষণ। আর এসব গণধর্ষণের ৮২ শতাংশের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দায়ী। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন শুরু হলে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ