নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এক বছরে দুটি বিপিএল- কোথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সাধুবাদ পাবে তা না উল্টো একটার পর একটা ঝামেলা বেড়েই চলেছে। যার শুরুটা হয়েছে ক’দিন আগে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের শভা শেষে দেয়া ঘোষনা, ‘প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে চুক্তি নবায়ন করতে হবে’র পর থেকেই। সাকিব, মুশফিকদের চুক্তি নিয়েও পানি কম ঘোলা হয়নি। এর পর থেকেই বিপিএলের আরও অনেক বিষয় চলে আসছে সামনে। যার মধ্যে একটি- আয়ের ভাগ চায় (রেভিনিউ শেয়ার) তারা।
ফ্র্যাঞ্চাইজি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর গড়ে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা খরচ হয় একটা দল গড়তে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে যারা দল গড়ে তাদের খরচ আরও বেশি। কিন্তু টুর্নামেন্টে শক্তিমত্তায় পার্থক্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত সবার লাভের খাতাটাই শূন্য। ট্রফি জিতলেই তাই শত ভাগ খুশি হওয়া কঠিন! রাজশাহী কিংসের প্রধান নির্বাহী তাহমিদ আজিজুল যেমন বললেন, ‘গত তিন বছরে আয় ভাগাভাগির বিষয়টা বলতে বলতে গলা শুকিয়ে গেছে! প্রতি বছর কত লোকসান গোনা যায়? আইপিএলে ভারতের একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি দল বছরে ১৫০ কোটি টাকা লাভের ভাগ পায়। আমরা দেড় টাকাও পাই না! পৃথিবীর সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে রেভিনিউ শেয়ার হয়। না হলে দল চলবে না। আমরা বিপিএল হৃদয় দিয়ে খেলি, প্যাশন দিয়ে খেলি। কিন্তু এভাবে তো চলা কঠিন।’
সবশেষ এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিয়ে বিতর্ক যুক্ত হয়েছে সাকিব আল হাসানকে চুক্তি করানোর পর। আইকন ক্রিকেটার হিসেবে তার চুক্তির বিষয়টি বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল অস্বীকার করলে টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়েছে রংপুর রাইডার্স। তাই বির্তক থাকছেই। তাদের মতো আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে একই সুরে কথা বলেছেন রাজশাহী কিংসের প্রধান নির্বাহী তাহমিদ আজিজুল হক, ‘আমরা আসলে আশার ভেলাতে চড়েই টুর্নামেন্টে টিকে আছি। হয়তো একদিন গভর্নিং কাউন্সিল বুঝতে পারবে টুর্নামেন্টকে সফল করতে হলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে কিছু বিনিময়ে দিতে হবে। যারা কিনা খেলাটিকে সফল করতে বিনিয়োগ করে চলেছে।’
আর লোকসান গুনতে চায় না বলে এবার যেমন চিটাগং ভাইকিংসের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ডিবিএল গ্রæপ সরে দাঁড়িয়েছে বিপিএল থেকে। তারা ছেড়ে দিচ্ছে চিটাগং ভাইকিংস। সিলেট সিক্সার্সেরও মালিকানা বদল হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এত বড় বিনিয়োগের প্রণোদনাও তো চাইবেন বিনিয়োগকারীরা। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর এক কথা, খেলাটা ক্রিকেট হলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট মানেই ব্যবসা। সেই ব্যবসা তাঁরা আর লোকসানে করতে চান না।
আইপিএলের আয়ের উৎস মূলত স্পনসরশিপ, গ্রাউন্ড স্পনসরশিপ, টিভি সত্ত¡, টিকিট মানি। আয় ভাগাভাগি হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে। আইপিএলের প্রথম মৌসুমে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ৮০ শতাংশ লাভের ভাগ দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। পরে সেটি ৬০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। সে হিসেবেই গত বছরও প্রতিটি দল ১৫০ কোটি রুপি লাভের ভাগ পেয়েছে। আইপিএলের একটি আয়ের বড় উৎস টিভি স্বত্ব। চার বছর (২০১৮-২০২২) মেয়াদে স্টার ইন্ডিয়ান আইপিএলের টিভি স্বত্ব পেয়েছে ১৬ হাজার ৪৩৭ কোটি রুপি। প্রতি ম্যাচের মূল্য ৫৪ কোটি রুপি। ২০০৮ সালে আইপিএল শুরু হওয়ার পর বিসিসিআই ১০ বছরে আয়করই দিয়েছে ৩৫০০ কোটি রুপি। আয় করেছে ১২ হাজার কোটি রুপিরও বেশি।
ভারতের এই বিশাল বাজারের তুলনায় বিপিএল এক অর্থে কিছুই নয়। গত বছর বিপিএলের আয় সাকল্যে ৩৫ কোটি টাকা। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য জালাল ইউনুসের তাই দাবি, এ আয় যদি তাঁরা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করেন পরের বছর টুর্নামেন্ট আয়োজন করাই কঠিন হয়ে পড়বে, ‘আমাদের বাজার কি আইপিএলের সমান? তারা শত শত কোটি টাকা আয় করে। আমরা সে তুলনায় কিছুই নয়। এর মধ্যে অনেক খরচ আছে। মাঠের খরচ আছে। আম্পায়ার, মাঠ পরিচর্যা, নানা খাতে লোকবল, নিরাপত্তা কর্মীর খরচ আছে। সব খরচের পর যদি ২০ কোটি টাকাও না রাখতে পারি পরের বছর টুর্নামেন্ট কীভাবে আয়োজন করব? এখন সব ভাগাভাগি করার পর ধরেন থাকল ৫ কোটি টাকা। এই টাকার জন্য কি এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায়?’ তবে আলোচনাটা যেহেতু উঠেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বিষয়টি আলোচনা করবে এবার। তারা জানতে চাইবে কত শতাংশ লাভ চায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এরই মধ্যে চুক্তি নবায়ন-প্রসঙ্গে সব দলকেই চিঠি দিয়েছে বিসিবি। ঈদের পর একে একে সবার সঙ্গে বসার কথা গভর্নিং কাউন্সিলের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।