নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশ্বকাপের পরপরই শ্রীলঙ্কা সফর। হাতাশার কমাতে গিয়ে যেটি এসেছে বুমেরাং হয়ে। যেখান থেকে কিছুটা আত্মবিশ্বাস জমাতে পারতো তামিম-মুশফিকরা, হয়েছে ঠিক তার উল্টো। মাশরাফি-সাকিবহীন বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেই। এ বছর আর কোন ওয়ানডে ম্যাচ নেই বাংলাদেশের। তার আগে নিজেদের হারানো বিশ্বাস ফিরে পেতে ত্রিদেশীয় একটি সিরিজের পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই করে রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেই সিরিজ নিয়েই কাটছে না ধোঁয়াশা। তবে এই জটিলতার মধ্যেও বাংলাদেশে আসবে জিম্বাবুয়ে, আশা করছে বিসিবি।
চলতি মাসে বাংলাদেশ দলের কোনো খেলা নেই। সামনে টি-টোয়েন্টি আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যস্ত সূচি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইগার শিবিরের মাঠের লড়াই শুরু আগামী মাস থেকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটি শুরু হওয়ার কথা ৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু টেস্টের পরে আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে যে সিরিজটা হওয়ার কথা বাংলাদেশে, সেটি নিয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি এখনো। অনিশ্চয়তাটা আসলে জিম্বাবুয়েকে নিয়ে।
আইসিসির সদস্যপদ স্থগিত হওয়ার পর জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ গতিপথ অনিশ্চিত। বোর্ডের পরিচালনা ও প্রশাসনে সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে গত ১৯ জুলাই আইসিসি জিম্বাবুয়ের সদস্যপদ স্থগিত করে। মূলত আইসিসির অনুদানের অর্থের যথোপযুক্ত ব্যবহার না হওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি। স্থগিতাদেশের আওতায় আছে আইসিসির অনুদান আপাতত বন্ধ রাখা ও জিম্বাবুয়ের কোনো দল আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে না পারা। বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বা অন্য টুর্নামেন্টে খেলতে তাই দৃশ্যত বাধা নেই।
তবু কোনো আইনগত জটিলতা আছে কিনা, সেটি নিয়েই দুই দেশের বোর্ড কাজ করছে বলে জানালেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার মধ্যে সফরের জন্য গুছিয়ে ওঠার ব্যাপারও আছে জিম্বাবুয়ের। তবে আলোচনা যতটুকু হয়েছে, তাতে জিম্বাবুয়ে আসবে বলে প্রবলভাবেই আশাবাদী বিসিবি, গতকাল দুপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন প্রধান নির্বাহী, ‘আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচি অনুযায়ী আফগানিস্তানের যে সফরটি ছিল একটি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের, জিম্বাবুয়ের অনুরোধে সেটিকে আমরা একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ করার সিদ্ধান্ত নেই গত আইসিসি মিটিংয়ে। এখন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট বোর্ডের কিছু নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে কিছু সংশয় তৈরি হয়েছিল। তাদের ক্রিকেট বোর্ড আমাদের কাছে সময় চেয়েছিল যে বিষয়টি তারা মানিয়ে নিতে পারবে বা সিরিজে অংশ নিবে। আমরা আশা করছি দ্রæত তাদের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা আমরা পাব।’
বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিশ্চিত করলেন, আইসিসির স্থগিতাদেশের কারণে জিম্বাবুয়ের খেলায় অংশ নেওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, ‘ম্যাচের স্ট্যাটাস নিয়ে কোনো অসুবিধা নেই। যেটা হয়েছে, তারা আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে না। জিম্বাবুয়ের বোর্ড তাদের সরকারের সঙ্গে কথা বলছে, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিরিজটি ‘অন’ রাখার। আমাদের সাথে সর্বশেষ যে কথা হয়েছে, তারা বলেছে যে সিরিজটি ‘অন’ আছে। আশা করছি, দুই-এক দিনের মধ্যে ওদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমরা জানতে পারব।’
আসলে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডই বিসিবিকে অনুরোধ করে সময় চেয়ে নিয়েছে। তারা ভীষণ আগ্রহী সেপ্টেম্বরের ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে। যেহেতু জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সংকটটা আর্থিক, গাঁটের পয়সা খরচ করে বিসিবি তাদের নিয়ে আসবে কি না সে প্রশ্নও উঠছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানালেন, যেটা রীতি সে অনুযায়ী জিম্বাবুয়ে আসবে। বিমান ভাড়া ও খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেট বোর্ডই দেখবে। বিসিবি দেখবে হোটেল, স্থানীয় যাতায়াত, নিরাপত্তা- যেটি সব স্বাগতিক বোর্ডই দেখে থাকে। আর আইসিসির সঙ্গে যে সমস্যাটা আছে, সেটি দ্রæত সমাধান হয়ে গেলে অক্টোবরে আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি কোয়ালিফাইং খেলার কথা জিম্বাবুয়ের। এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারলে দুবাই পর্যন্ত বিমান ভাড়া তারা আইসিসি থেকেই পাবে।
তা না হয় হলো, জিম্বাবুয়ের জন্য বিসিবি কেন এত অপেক্ষা করছে? ভারত-অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দল হলে না হয় বোঝা যেত শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে খুব আগ্রহী বলে অপেক্ষা করছে বিসিবি। গত এক দশক ধরেই বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের লড়াইটা যে একপেশে। ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করতে র্যাঙ্কিংয়ের নিচের একটা দলের জন্য বিসিবির অপেক্ষা আসলে অন্য কারণে।
নিজেদের দুঃসময়ে জিম্বাবুয়ে বারবার বিসিবিকে অনুরোধ করছে তারা ত্রিদেশীয় সিরিজটা খেলতে চায়। নিজামউদ্দীন চৌধুরী বললেন, অপেক্ষাটা তাঁদের কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে, ‘একটা সময় বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনামূলক বেশি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলত জিম্বাবুয়ে। আমাদের অনুরোধে জিম্বাবুয়েই বেশি হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমরাও তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। এবারও আমরা যেমন ওদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আসবে কি আসবে না, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেটা তারাই জানিয়ে দিক। আমরা কিছু বলতে চাই না।’
জিম্বাবুয়ে শেষ পর্যন্ত না এলে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজটি রূপ নেবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজে। তবে জিম্বাবুয়েকে আরও একটি কারণে চায় বিসিবি। জিম্বাবুয়ে এলে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শেষে তাদের সঙ্গে একটি ওয়ানডে সিরিজও খেলতে পারে বাংলাদেশ। সেই সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বিদায়ী আয়োজন করার ভাবনা আছে বিসিবির। যদিও তারা এটি নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করেননি মাশরাফির সঙ্গে। মাশরাফি নিজেও অবসর নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছেন অনেকবারই।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপটি ভালো যায়নি মাশরাফির। আট ম্যাচে উইকেট মিলেছে মাত্র একটি। এমনকি পুরো ফিটও ছিলেন না। এরপর থেকেই তার অবসর নিয়ে গুঞ্জনটা জোরালো হয়। বিসিবিও বিষয়টি আমলে নেয়। এ নিয়ে ভক্তদেরও আগ্রহের শেষ নেই। এখন দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত আসে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।