বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাইদুর রহমান পায়েল হত্যার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ সোমবার। আলোচিত এ হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হলেও তা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হয়ে গেছে। ফলে সন্তান হত্যার বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় চরম হতাশ পায়েলের বাবা-মা। গত বছরের ২১ জুলাই হানিফ পরিবহনের একটি বাসে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের বাসাব থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন সাইদুর রহমান পায়েল। ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জ উপজেলার ভাটেরচর খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ। ২২ জুলাই ভোরে তাকে হত্যা করা হয়।
গ্রেফতার আসামিদের আদালতে দেয়া জবানবন্দির বরাতে জানা যায়, গজারিয়া এলাকায় বাস যানজটে আটকা পড়ায় প্রস্রাব করতে নেমেছিলেন পায়েল। এরপর বাস চলতে শুরু করলে তিনি দৌঁড়ে এসে ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সংজ্ঞা হারান। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে দায় এড়াতে ভাটেরচর সেতু থেকে খালে ফেলে বাস নিয়ে ঢাকায় চলে যান চালক ও সুপারভাইজার। পায়েলকে অচেতন অবস্থায় সেতু থেকে খালে ফেলে দেয়ার আগে পরিচয় লুকাতে চালক ওই তরুণের মুখ থেঁতলে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করে তার পরিবার।
ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে জামাল হোসেন ও ফয়সাল হোসেন দুই ভাই। তারা তিনজনই খুনের দায় স্বীকার করে। পায়েলের মৃত্যুর পর তার মামা গোলাম সরোয়ার্দী বিপ্লব বাদী হয়ে চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গজারিয়া থানার পুলিশ ওই তিনজনকে আসামি করেই গত ৩ অক্টোবর অভিযোগপত্র দেয়।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার বিচার কাজ শুরু হলেও পরে পরিবারের আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত বছর ২৪ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে মামলাটি চট্টগ্রামের দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়। মামলাটি চট্টগ্রামের আদালতে আসার পর বাদী সরোয়ার্দী বিপ্লবসহ মোট নয়জন সাক্ষ্য দেন। এরমধ্যে দুই আসামির করা এক আবেদনে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। আদালতের বিশেষ পিপি আইয়ুব খান বলেন, চট্টগ্রামের আদালতে মামলার বিচার চলা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন আসামি জামাল হোসেন ও ফয়সাল হোসেন। তাদের যুক্তি ছিল, মামলাটি যেহেতু মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানায় করা হয়েছে, সেহেতু চট্টগ্রামের দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার বিচার চলতে পারে না।
আসামিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রামের আদালতে এ মামলার কার্যক্রম পরিচালনায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি সরকার চাইলে ঢাকা বিভাগের যে কোনো দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তরে কোনো বাধা নেই বলে আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী মঞ্জুর আহমদ আনসারী জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা বিভাগীয় দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার কাজ শুরু করতে আইনগত প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।