নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আলহাজ্ব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সরকার প্রধান হিসেবে নয় বছর দায়িত্ব পালন করেন এই সাবেক সামরিক কর্মকর্তা। তিনি ১৪ জুলাই রোববার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিএমএইচএ ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
সেনাবাহিনী ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও এরশাদ কিন্তু ছিলেন ক্রীড়াঙ্গণের মানুষই। তাকে স্বৈরশাসক হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও ৯ বছর সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি দেশের উন্নয়নে বড় অবদান রেখেছিলেন। দেশের ক্রীড়া উন্নয়নেও তার অবদান ভুলার নয়। বলা যায় এরশাদের শাসনামলে দেশের ক্রীড়াঙ্গন ছিল ঝঁকঝকে-তকতকে। কোথায়ও দূর্নীতির ছোয়া ছিলনা। ক্রীড়াঙ্গনে তখন ছিল জবাবদিহীতা। তিনি ছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের এবং ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ মানুষ। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দেশের খেলাধুলার দুই শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) প্রধান হিসেবে এরশাদ দায়িত্ব পালন করেছিলেন দীর্ঘদিন। এর মধ্যে বিওএ’র প্রথম সভাপতি হিসেবে ১৯৭৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এনএসসি’র চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৭৬ সালের জুলাই থেকে ১৯৭৯ সালের ফেব্রƒযারি মাস পর্যন্ত। তার দায়িত্বকালেই ১৯৭৮ সালে প্রথম বাংলাদেশ গেমস আয়োজন করা হয়েছিল।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এনএসসি’র চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম (তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়াম) এলাকা থেকে বিভিন্ন ক্লাব ভবন সরিয়ে নেয়া হয়। তখনই ক্লাবগুলোর জন্য স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা করা হয় মতিঝিলে। যা বর্তমানে মতিঝিল ক্লাবপাড়া নামে পরিচিত।
১৯৮৭ সালে এনএসসি’র এক সভায় তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়াম চত্বর থেকে ক্লাবগুলোকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হলে পরের বছরই সেগুলো স্থানান্তর করা হয় মতিঝিলে। রাষ্ট্রক্ষমতা ছাড়ার আগের বছর এরশাদ মতিঝিলস্থ ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ভবনের জায়গাটি স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিয়েছিলেন। পরে তিনি মোহামেডান ক্লাবের খেলাধুলা উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ ১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ছিলেন বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি। এই সময়ে তিনি রমনাস্থ জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্সকে আধুনিকভাবে নির্মানের ব্যবস্থা করেছিলেন। জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্সের নানাবিধ উন্নয়ন তার দায়িত্বকালেই হয়েছে।
দেশের খেলাধুলার সূতীকাগার খ্যাত বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই। রাজধানী থেকে ৪৫ কিলোমিটার দুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জিরানী নামক স্থানে ১৯৭৪ সালে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ১০০ একর জমির ওপর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব স্পোর্টস (বিআইএস) প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিল। এখানেই এরশাদ ১৯৮৩ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করেন বিকেএসপি’র। ১৯৮৬ সালের ১৪ এপ্রিল বিকেএসপি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠান এখন দেশের তারকা ক্রীড়াবিদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা ছিল এরশাদের। তার শাসনামলেই নির্মিত হয়েছে মিরপুর স্টেডিয়াম, মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম, এরশাদ আর্মি স্টেডিয়াম (বর্তমানে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়াম) সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়াস্থাপনা। শুধূ তাই নয়, এরশাদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ১৯৮৫ সালে ঢাকায় আয়োজন হয়েছিল প্রথম সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন (সাফ) গেমস। যা বর্তমানে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস নামে পরিচিত। একই বছর বাংলাদেশ আয়োজন করেছিল এশিয়া কাপ হকি টুর্নামেন্টের মত বড় ক্রীড়া আসর। এসব আয়োজনের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের। সাবেক এই ক্রীড়াবান্ধব প্রেসিডেন্টকে ভুলবেন না দেশের ক্রীড়া সংগঠকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।