গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নগরীতে আলোচিত দুটি খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় কিশোরীকে খুন করেছে তার সৎ পিতা। অন্যদিকে কর্ণফুলী থানার চর পাথরঘাটায় নৈশ প্রহরী আলমগীর খুনের ঘটনায় জড়িত তার দুই আপন ভাই। চান্দগাঁও থানার খেঁজুরতলা লালপুল রেলবিটের পাশ থেকে গত শনিবার অজ্ঞাত কিশোরীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় তার নাম সোমা দাশ (১৬)। পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে তার খুনি সৎ পিতা নুরুন্নবী। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
রেলওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) মোস্তফিজ ভুঁইয়া জানান, কিশোরীর মা ধর্মান্তরিত নাছিমা বেগম অভিযোগ করেন ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মেয়েটিকে নির্মমভাবে খুন করেছে সৎ পিতা নুরুন্নবী। কিশোরী সোমার লাশের পাশে যে জুতো জোড়া পাওয়া গেছে সেটি নুরুন্নবীর পায়ে ছিলো। ওই জুতা দেখে তাকে চিহ্নিত করা হয়। আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, সতের বছর আগে রাউজানের বানিয়াপাড়ার রাজু দাসের সাথে নাছিমার বিয়ে হয়। সোমা গর্ভে থাকা অবস্থায় রাজুর সাথে তার বিচ্ছেদ হয়। সাত বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে সাতকানিয়ার রূপকানিয়া গ্রামের মৃত কালা পাঠানের ছেলে নুরুন্নবীর সাথে তার বিয়ে হয়। শিশু সোমাকে নানা রামদাস লালন পালন করেন। সম্প্রতি সে মায়ের কাছে চলে আসে। এরপর থেকে তার উপর কুনজর দেয় নুরুন্নবী। এ অবস্থায় কন্যাকে নগরীর চান্দগাঁও খেজুরতলায় বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেন নাছিমা। সেখানে এসে সোমাকে খুন করে পালিয়ে যায় নুরুন্নবী।
এদিকে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই বছর আগে নগরীর কর্ণফুলী থানার চর পাথরঘাটায় নৈশ প্রহরী মোহাম্মদ আলমগীর খুনের ঘটনায় তার আপন ভাই জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। খুনের শিকার আলমগীরের চাচাত ভাইয়ের ছেলে নকিবুল হক সৌরভকে মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর এমন তথ্য পায় পিবিআই। ২০১৭ সালের ২ জুলাই রাতে চর পাথরঘাটা এলাকায় কর্মস্থল থেকে বাড়িতে ফেরার পথে খুন হন আলমগীর। গ্রেফতার সৌরভ কর্ণফুলী থানার চরপাথরঘাটা এলাকার নজির মেম্বার বাড়ি মোহাম্মদ নুরুল আবছারের ছেলে। নুরুল আবছার ও নিহত আলমগীর চাচাত-জেঠাত ভাই এবং প্রতিবেশী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আলমগীরের সঙ্গে সৌরভের বাবা নুরুল আবছারের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। তার জেরে হুমকি পেয়ে আলমগীর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যাকাÐ ঘটানো হয়।
সৌরভের আদালতে দেয়া জবানবন্দীর বরাত দিয়ে পিবিআই কর্মকর্তা ফিরোজ বলেন, হত্যার কয়েকদিন আগে বৈঠকে বসে পরিকল্পনা হয়। ওই বৈঠকে নিহতের আপন ভাই সেকান্দরও ছিলেন। হত্যার রাতে সৌরভের আরেক ভাই সজীব ফোনে নুরুল আবছার ও সেকান্দরকে জানিয়েছিল যে আলমগীর বাড়ি ফিরছে। এই হত্যাকাÐে সৌরভ নিজে, তার তিন ভাই, তার বাবা নুরুল আবছার এবং নিহতের আপন ভাই সেকান্দর জড়িত বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন সৌরভ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।