পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে একটি কক্ষে এনে চার ছাত্রকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পাশবিক ওই নির্যাতনের গতকাল রোববার চার দিন পার হলেও অধরা থেকে গেছে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের ক্যাডারেরা। শুধু তাই নয়, তারা আহত ছাত্রদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন দুই ছাত্রকে ঘটনার ব্যাপারে মুখ খুললে একেবারে মর্গে পাঠিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এতো কিছুর পরও নির্বিকার কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের প্রিন্সিপাল বলছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। প্রতিবেদন ফেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এদিকে চার ছাত্রকে আটকে রেখে একরাত একদিন পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে। আর হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানোর ফলে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন দুই ছাত্র ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
যদিও পুলিশ বলছে, আইসিইউতে গিয়ে আহত দুই ছাত্রকে হুমকি দেওয়ার পর সেখানকার নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আহত এক ছাত্রের ভাই গতকাল বিকেলে ইনকিলাবকে বলেন, হামলায় গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলাকারীরা ফের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গেছে। সেই থেকে ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আরো ভেঙ্গে পড়েছে। তার পরিবারের সদস্যরাও এখন চরম উৎকন্ঠায়। তিনি বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন কিছু হয়নি। আমরা অসহায় কার কাছে বিচার চাইব। আমার ভাই তো কলেজ কর্তৃপক্ষের হেফাজতে ছাত্রাবাসেই ছিল।
চমেক প্রধান ছাত্রাবাসে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার চার শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন জাহিদ হোসেন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেন আইসিইউতে রয়েছেন। তাদের গত বৃহস্পতিবার রাতে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শনিবার কয়েকজন যুবক আইসিইউতে ঢুকে এ দুজনকে শাসায় ও হুমকি-ধমকি দেয়। বিশেষ করে মারধর করেছে এমন কারো নাম না বলতে শাসিয়ে আসে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একজন যুবক আইসিইউ বেডে শুয়ে থাকা সাকিবের খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছেন। সাকিবের গায়ে হাত রেখে বেশ কিছুক্ষণ ধরে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। ওই যুবক চমেকের ৬২তম ব্যাচের সাজু দাশ।
সাজু দাশ চমেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুসারী ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালের ২৯ ও ৩০ অক্টোবর চমেক হোস্টেল ও ক্যাম্পাসে সংঘটিত ছাত্রলীগের দুই গ্রæপের মারামারির ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে ৩১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতদের তালিকায় সাজু দাশও ছিলেন। তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাÐ নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে সাজুর দাবি, সে ওই দুইজনকে দেখতে গিয়েছে কোন হুমকি দেয়নি। তার ভাষ্য তারা দুজন সুস্থ স্বাভাবিক হলেও কলেজ প্রশাসনের প্রপাগান্ডার কারণে আইসিইউর মতো স্পর্শকাতর জায়গায় তাদের রাখা হয়েছে। অথচ, আইসিইউতে শয্যা না পেয়ে কত মুমূর্ষু রোগী মারা যাচ্ছে।
এদিকে ছাত্রাবাসে চার শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করছে কলেজের নিয়মিত অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি। ৯ সদস্যের এ কমিটির প্রধান চমেক ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. হাফিজুল ইসলাম। কমিটিকে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে আইসিইউতে গিয়ে হুমকিদানের ঘটনাটিও এই কমিটি তদন্ত করবে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তীতে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এই ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি।
ছাত্রশিবির সন্দেহে জাহিদ হাসান ওয়াকিল, সাকিব হোসেন, এসএ রায়হান ও মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র নামে চার শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের শিকার চারজনই কলেজের ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ওয়াকিল ও সাকিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। বাকি দুজন নিজেদের গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেছেন। তাদের একজনকে বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আরেকজনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। তাকে ডাক্তার দেখানো হয়েছে বলে চমেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।