পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
গত রবিবার খবরের কাগজ সমূহের পাতা উল্টাতে উল্টাতে একটি খবরে এসে চোখ আটকে গেলো। খবরটিতে দেখলাম, একজন মার্কিন কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারমেন বলেছেন রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাকে বাংলাদেশের অংশ করা উচিত। ঐ এলারকার জনগণও তাই চায়। এজন্য মার্কিন সরকারের প্রয়োজনীয় সমর্থন দেওয়া উচিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত একটি উপ কমিটির শুনানিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। ‘লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দেওয়ায় আমি বাংলাদেশকে অভিবাদন জানাচ্ছি। আমি কংগ্রেসের এই কক্ষে এর আগেও বলেছি, এখনও বলতে চাই, মিয়ানমার অথবা বার্মা সরকার যদি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রক্ষায় সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী না হয়, রাখাইন স্টেটের উত্তরাঞ্চলের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকজনকে নিরাপত্তা দিতে না চায় অথবা অপারগ হয় তাহলে ওই স্টেটের (প্রদেশের) রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত এবং ওই এলাকাকে বাংলাদেশের কাছে স্থানান্তর করতে (বাংলাদেশের অংশ করতে) যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেওয়া উচিত, যা ওই এলাকার মানুষও চাচ্ছে।’
ব্র্যাড শারমেনের এমন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক মাহফুজ আর চৌধুরী বলেছেন, ‘এ প্রস্তাবে আমি একশত ভাগ সমর্থন জানাতে চাই। এর বাইরে অন্য কিছুতেই রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে না। কারণ, মিয়ানমার প্রশাসনের মধ্যে গণতান্ত্রিক উদারতা একেবারেই ছিল না।’
এর আগে মালয়েশিয়া থেকে ছোট্ট একটি দ্বীপ সিঙ্গাপুরও স্বাধীন হয়েছে। রাখাইনের মুসলিম স¤প্রদায় সব সময়ই মিয়ানমারের বৌদ্ধ স¤প্রদায় কর্তৃক। তাই তাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে চাই আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের অকুন্ঠ সমর্থন।
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টে ডেমোক্র্যাট সিনেটর বাংলাদেশি আমেরিকান শেখ রহমান বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এজন্য যা করলে ভালো হয় সেখানেই আমার সমর্থন থাকবে। কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারমেনের প্রস্তাবেও আমি একমত। এক্ষেত্রেও মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে বাধ্য করতে জনমত তৈরি করতে হবে।’
এর আগে ১৯৭৫ সালে ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসন কর্তৃক পূর্ব তিমুরে গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই এলাকাকে একটি স্বাধীন ভূখন্ডে পরিণত করা হয়েছে। পূর্ব তিমুরকে স্বাধীন করার ব্যাপারেও জাতিসংঘ সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে। এরপর একইভাবে দক্ষিণ সুদানের উৎপত্তি ঘটেছে।সেখানেও জাতিসংঘ সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে। রাখাইন এলাকার মুসলিম স¤প্রদায়ের নিরাপত্তায় মোটেও আগ্রহী নয় মিয়ানমারের বৌদ্ধ-প্রশাসন, তাই তাদেরকে স্বাধীন একটি ভূখন্ডের অধিবাসী হবার অথবা ওই এলাকাকে বাংলাদেশের অংশে পরিণত করাই শ্রেয়। তাহলেই রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণভাবে জীবন-যাপনে সক্ষম হবে।
আসলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যার এটিই হলো একমাত্র সমাধান। আমরা বাংলাদেশে বাস করে এই সমাধানটি অনেক আগেই চিন্তা করেছি। বিদেশীরা থাকে সাত সমুদ্র তের নদী পারে। তাই তাদের সঠিক সমাধানের চিন্তা করতে দেরি হয়। হতে পারে যে এই সম্পর্কিত সঠিক তথ্য এবং কাগজ পত্র পেতে তাদের অনেক সময় লাগে। তাছাড়া পরিস্থিতি সরে জমিনে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ না করলে সমস্যার গভীরে যাওয়া যায় না।
এব্যাপারে পাঠক ভাইদেরকে আমি প্রায় দু বছর আগে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, যখন রোহিঙ্গা সমস্যা আরো তীব্র, তখন দৈনিক ইনকিলাবে আমি একটি পোস্ট লিখেছিলাম। পোস্টটির শিরোনাম ছিল, ‘সোভিয়েট ও যুগো¯øাভিয়া ভেঙ্গে ২২ টি রাষ্ট্র/ তাহলে বার্মা ভেঙ্গে ২টি হতে পারে না কেন?’ সেদিন ঐ নিবন্ধে যা বলেছিলাম আজও সেই কথা গুলি একশত ভাগ প্রযোজ্য। কারণ পরিস্থিতি বিন্দুমাত্র বদলায়নি।
বেশি দূর যেতে হবে না। গেল ৯০ দশকের দিকেই তাকিয়ে দেখুন। ভৌগোলিক আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র সোভিয়েট ইউনিয়ন ভেঙ্গে তার জঠর থেকে ১৫টি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। বর্তমান রাশিয়া সেই সোভিয়েট ইউনিয়নের উত্তরাধিকারী বা উত্তরসূরী। আজ যে আমরা ইউক্রেন বা বেলারুশ, প্রভৃতি দেশের কথা বলি সেগুলিও একসময় সোভিয়েট ইউনিয়নের অংশ ছিল। সোভিয়েট ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়া এবং ১৫টি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের কথা সকলেই জানেন। কারণ সোভিয়েট ইউনিয়নের কথাটি পত্র পত্রিকা ও টেলিভিশন রেডিওতে মাঝে মাঝেই আলোচিত হয়।
দুই
কিন্তু ইউরোপে আরেকটি দেশ আছে, যে দেশটি ধর্ম এবং নৃতত্তে¡র ভিত্তিতে ৬টি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়েছে। এই রাষ্ট্রটির কথা কদাচিৎ আলোচিত হয়। এই রাষ্ট্রটির নাম যুগো¯øাভিয়া। যুগো¯øাভিয়া ভেঙ্গে ৬টি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এগুলোও সব ঘটেছে ৯০ দশকে। যুগো¯øাভিয়া ভেঙ্গে যে ৬টি রাষ্ট্র হয়েছে, সেই ৬টি রাষ্ট্রের মধ্যেও আবার একটি রাষ্ট্র ভেঙ্গে দুটি রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। যুগো¯øাভিয়া ভেঙ্গে যে ৬টি রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে, সেগুলো হলো- সার্বিয়া, ম্যাসিডোনিয়া, মন্টিনিগ্রো, বসনিয়া হারজেগোভিনা, ক্রোয়েশিয়া, ¯েøাভেনিয়া প্রভৃতি। সার্বিয়া ভেঙ্গে দুটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। একটি সার্বিয়া অপরটি কসোভো। ইউরোপে দুটি রাষ্ট্র অর্থাৎ সোভিয়েট ইউনিয়ন এবং যুগো¯øাভিয়া ভেঙ্গে যদি ২২টি রাষ্ট্র হতে পারে তাহলে মিয়ানমার ভেঙ্গে মুসলমানদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্র হতে পারে তাহলে মিয়ানমার ভেঙে দুটি রাষ্ট্র হতে পারে না কেন?
সার্বিয়রা যখন সার্বিয়ার অধীনে থেকেও স্বায়ত্বশাসন তথা স্বাধিকার দাবি করে সেই মুর্হূত থেকেই তাদের ওপর সার্বরা চালায় প্রচন্ড দমন নীতি। দীর্ঘদিন একই রাষ্ট্রের অধিবাসী ও নাগরিক হওয়া সত্তে¡ও সার্বরা তাদের ওপর প্রভুর মত দমন-পীড়ন শুরু করে। কসোভোর মানুষ এই দমন পীড়নের প্রতিবাদ করলে সার্বরা শুরু করে গণহত্যা এবং নারী ধর্ষণ। কসোভোর সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের অপরাধ ছিল, তারা হলেন মুসলমান। কসোভোর মানুষও শুরু করে প্রতিরোধ। শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। সা¤প্রতিক ইতিহাসে এটিকে বলা হয় কসোভো যুদ্ধ। কসোভোর অধিবাসীদের ওপর সার্বরা যে গণহত্যা চালায় সেটি ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম গণহত্যা বলে আখ্যায়িত হয়ে আছে। ১৯ লক্ষ মানুষের এই দেশটির ৯৪ শতাংশ অধিবাসীই মুসলমান।
কসোভোর মানুষদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং নারী ধর্ষণ রুখে দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ যদি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে, জাতিসংঘের সামরিক হস্তক্ষেপের চূড়ান্ত পরিণতিতে যদি কসোভো স্বাধীনতা লাভ করতে পারে, তাহলে বর্মী মগ সেনা এবং চরমপন্থী বৌদ্ধদের গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং নারী ধর্ষণ প্রতিরোধের জন্য রাখাইনে তথা বার্মায় জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না কেন? বসনিয়া হারজেগোভিনার উদাহরণ আরো জ্বলন্ত। বসনিয়া এক সময় ওসমানীয় সা¤্রাজ্যের অংশ ছিল। বসনিয়া সংকটের উৎপত্তি ঘটে সাবেক যুগো¯øাভিয়া থেকে দুটি প্রদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পর। এই দুটি প্রদেশ হলো ¯েøাভেনিয়া এবং ক্রোয়েশিয়া।
তিন
বসনিয়াভুক্ত সার্বদের নেতা ছিলেন রাদোভান কারাডিচ এবং সার্বিয়া সরকারের প্রধান ছিলেন ¯েøাভেধান মিলোসেভিক। বসনিয়া হারজেগোভিনার আয়তন হলো ১৯ হাজার ৭৬৭ বর্গমাইল। জনসংখ্যা ৩৫ লক্ষ ৫০ হাজার। ১৯৯১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী বসনিয়ার ৪৪ শতাংশ ছিল মুসলমান এবং ৩২ শতাংশ ছিল সার্ব। সংখ্যাগুরু হওয়ায় ১৯৯২ সালের ১লা মার্চ বসনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে। সার্বরা বসনিয়াতে সংখ্যালঘু হওয়া সত্তে¡ও যেহেতু সার্বিয়ার ফেডারেল সরকারে ক্ষমতায় ছিল সার্ব নেতা মিলোসেভিক তাই তিনি তার প্রশিক্ষিত পেশাদার সৈন্যদের বসনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন দমনের জন্য মাঠে নামিয়ে দেন। বসনিয়ার মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় সংখ্যালঘুদের দমন নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। তখন সার্বিয়ার সামরিক শক্তিকে পূর্ণ মাত্রায় ব্যবহার করা হয় এবং শুরু হয় মুসলিম গণহত্যা। এই মুসলিম গণহত্যা ধীরে ধীরে মুসলিম নিধনে পর্যবসিত হয়। ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশ সংখ্যাগুরু বসনিয়ার মুসলমানদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। তখন তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে ৩টি মুসলিম দেশ। দেশগুলি হলো সৌদি আরব, ইরান ও পাকিস্তান। প্রয়োজনীয় অস্ত্র সংগ্রহের জন্য অর্থ সাহায্য করে সৌদি আরব। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পাকিস্তান বিমানযোগে ক্ষেপনাস্ত্র পাঠায়। পশ্চিমা সংবাদপত্রের রিপোর্ট মোতাবেক ইরানের রেভুলিউশনারী গার্ডের কিছু সদস্য ইরান থেকে গিয়ে বসনিয়া মুসলমানদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে। ১৯৯২ সাল থেকে ১০৯৫ সাল- এই ৩ বছর বসনিয়ার যুদ্ধ চলে। অবশেষে ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করে। জাতিসংঘের তরফ থেকে ন্যাটোবাহিনী ‘অপারেশন ডেলিবারেট ফোর্স’ নামে সার্বদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায়। এই অভিযানের ফলে সার্বরা চূড়ান্তভাবে পরাস্ত হয়। এই যুদ্ধে এক লক্ষ মানুষ নিহত হন, যাদের প্রায় সকলেই ছিলেন বসনিয়ার মুসলমান। ২২ হাজার মুসলিম নারী ধর্ষিত হন। ২২ লক্ষ মানুষ উদ¦াস্ত হন। প্রিয় পাঠক, চিন্তা করুন, যেখানকার মোট জনসংখ্যা হলো ৩৫ লক্ষ, যেখানে ২২ লক্ষ মানুষ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়ে যান। মানবতা এবং মানবাধিকার যেখানে চরমভাবে লংঘিত হচ্ছিল সেখানে ৩ বছর পরে হলেও জাতিসংঘ সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করে, একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হয় এবং সমস্যাটির একটি স্থায়ী সমাধান হয়।
বসনিয়া এবং কসোভোর সাথে রোহিঙ্গা সমস্যার প্রায় সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। কসোভো এবং বসনিয়ার ক্ষেত্রেও জাতিসংঘ ৩/৪ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় ছিল। কিন্তু যখন গণহত্যা, নারী ধর্ষণসহ সমস্ত মানবাধিকার লংঘন সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন জাতিসংঘ সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। সেদিনও রাশিয়ার ভূমিকা ছিল চরম গণবিরোধী। বসিনয়া এবং কসোভোর গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব স¤প্রদায় কোন প্রস্তাব গ্রহণ করতে গেলে রাশিয়া প্রতিটি প্রস্তাবে বাধা দিত এবং প্রতিটি প্রস্তাবকে বøক করে দিত। তবে ন্যাটো বাহিনী রুশ বিরোধিতাকে উপেক্ষা করেই সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপ করে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় ঘটছে।
কসোভো এবং বসনিয়ার চেয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুটির ওজন বেশি। বাংলাদেশ যদি ভারতের ওপর একক নির্ভরতা হ্রাস করতে পারে, তাহলে রোহিঙ্গা মুসলমানরা তাদের ন্যায্য দাবির সমর্থনে একটি শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষক পায়। আর সেই পৃষ্ঠপোষক হলো বাংলাদেশ।
কিছুক্ষণ আগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বসনিয়ার যুদ্ধে ইরান থেকে রেভুলিউশনারী গার্ডের কিছু সদস্য নাকি তাদের বসনিয়া মুসলমান ভাইদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে। এখন মুসলমানদের পক্ষে একটি বড় ফ্যাক্টর হলো তুরস্ক। যখন বসনিয়া এবং কসোভোতে যুদ্ধ হয় তখন তুরস্ক ছিল মার্কিনপন্থী। আজ তুরস্ক মুসলমানদের স্বার্থে প্রায় প্রতিটি ইস্যুতেই সর্বাগ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এবারও রোহিঙ্গা ইস্যুতে তুরস্ক হলো প্রথম দেশ যারা রোহিঙ্গা মুসলমান এবং সেই সাথে বাংলাদেশের পক্ষে এগিয়ে এসেছে।
বসনিয়া ইস্যুতে পাকিস্তান সরাসরি সাহায্য করেছিল। এখানে জেনে শুনেই পাকিস্তানের সাহায্যের প্রশ্নটি আনা থেকে বিরত থাকলাম। কারণ পাকিস্তানের কথা বললেই দেশের একটি উল্লেখ যোগ্য গোষ্ঠীর এলার্জি শুরু হবে।
অতীতেও বলেছি আজও বলছি যে, আমরা যুদ্ধবাজ জাতি নই। আমরা মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধ চাই না। কিন্তু সাথে সাথে একথাও আমরা বলবো যে, মিয়ানমার যদি বাড়াবাড়ি করে তাহলে সেখানে বাংলাদেশ যেনো কোন ছাড় না দেয়। বাংলাদেশকেও সমপরিমাণ শক্ত ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আভ্যন্তরীণ ইস্যুতে যত বিরোধিতাই থাকুক না কেন, রোহিঙ্গা মুসলিম ইস্যুতে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীকে ভারত থেকে ফেরত আনার জন্য ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সামরিক হস্তক্ষেপ সহ যত গুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে তাদের পিতৃভূমিতে পাঠানোর জন্য ইন্দিরা গান্ধীর মতো সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।