Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিরবেই ছড়াচ্ছে সৌরভ

মুশফিকে মুগ্ধ মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

এবারের বিশ্বকাপটা যেন একান্তই নিজের করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। প্রতিনিয়তই নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন অনন্য উচ্চতায়, গড়ে চলেছেন রেকের্ডরে পর রেকর্ড। অনন্য সব অলরাউন্ড কীর্তিতে স্মরণীয় করে চলেছেন বিশ্ব আসর। তবে আরেকজন কিন্তু নিরবেই করে চলেছেন নিজের কাজ। তার ব্যাটের চমক হয়তো চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে না, তবে দোলা দিচ্ছে হৃদয়ে। মুশফিকুর রহিম বিশ্বকাপেও পারফর্ম করে চলেছেন বরাবরের বিশ্বস্ততায়।

৬ ইনিংসে ৩২৭ রান, ১ সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি ২টি। গড় ৬৫.৪০, স্ট্রাইক রেট ৯২.৩৭। যে কোনো মানদণ্ডেই এই পারফরম্যান্স দারুণ। সাকিবের মতো রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় মেতে ওঠেননি বটে। তবে দলে অবদানের পালায় যথারীতি সফল। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ে তার ৮০ বলে ৭৮ রানের ইনিংস দলকে এগিয়ে নিয়েছে বড় স্কোরের পথে। সবশেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ে তার ৮৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংসটি ছিল মহামূল্যবান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ জিততে পারেনি, তবে মুশফিকের সেঞ্চুরি দলকে তুলে নিয়েছে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের চূড়ায়।

এই তিন ম্যাচ দিয়েই মুশফিকের ব্যাটসম্যানশিপের গভীরতা বোঝা যায় অনেকটা। একেক দিন ম্যাচের পরিস্থিতি, উইকেটের চরিত্র, প্রতিপক্ষ ও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতা ছিল একেক রকম। কিন্তু মুশফিকের ব্যাটে জবাব ছিল সবকিছুর। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় মুশফিকের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স প্রত্যাশিতই, বলছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, মুশফিকের প্রয়োজনীয়তা দল বোঝে বলেই তাকে মূল্যায়ন করে সেই উচ্চতায়, ‘এই বিশ্বকাপ বলে নয়, গত কয়েক বছর ধরেই তো মুশফিক দারুণ ধারাবাহিক। দলের প্রয়োজনের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে রান করে। সবচেয়ে বড় কথা, পরিস্থিতির বুঝে দলের যা প্রয়োজন, সব করতে পারে। প্রয়োজনে শট খেলে, প্রয়োজনে সিঙ্গেল নেয় বা উইকেট ধরে রাখে। খেয়াল করে দেখবেন, উইকেট-পরিস্থিতি যেমনই থাকুক, মুশফিকের স্ট্রাইক রেট ভালো থাকে। উইকেট যতই পড়ুক, মুশফিকের ব্যাটিংয়ে চাপের ছাপ থাকে না। খুব কঠিন পরিস্থিতিতেও স্ট্রাইক রেটের মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড ধরে রাখে। এটাই ওর ব্যাটসম্যানশিপের প্রমাণ যে সবকিছুর জন্যই সে প্রস্তুত। এ কারণেই গত কয়েক বছরে দলকে জেতানো অনেক ইনিংস এসেছে মুশফিকের ব্যাটে।’

রান সংখ্যার সঙ্গে যদি দলে প্রভাবকে বিবেচনায় নেওয়া হয়, মুশফিকের অনেক ইনিংসই অমূল্য। হয়তো কোনো ম্যাচে রান তার চেয়ে বেশি করেছে কেউ, কিন্তু মুশফিক নেমেই বদলে দিয়েছেন ম্যাচের মোড়। রানের গতি তিনি সব পরিস্থিতিতেই ধরে রাখতে পারেন বলে অন্যদের কাজও সহজ হয়ে যায় অনেকটা। তার টেম্পারমেন্টের একটি বড় প্রমাণ, বড় মঞ্চের সাফল্য। গত বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই তিন ম্যাচে মুশফিকের পারফরম্যান্স ছিল ৫৬ বলে ৭১, ৪২ বলে ৬০ ও ৭৭ বলে ৮৯।

সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে তার ৬টি ফিফটিতেই জিতেছে দল। কেবল তার প্রথম সেঞ্চুরিটি পূর্ণতা পায়নি দলের জয়ে। মাশরাফি অবশ্য শুধু বিশ্বকাপকে আলাদা করে দেখতে চান না মুশফিকের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণে, ‘বড় টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে ভালো করা অবশ্যই বিশেষ কিছু। কিন্তু বিশ্বকাপ বলেন বা যে কোনো টুর্নামেন্ট, মুশফিক সবসময়ই তো এভাবেই খেলে আসছে। চার নম্বর পজিশন খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কিন্তু মুশফিক আছে বলেই আমরা নিশ্চিন্ত থাকি। জানি, দলের যা প্রয়োজন, মাঠে গিয়ে সেটি মেটাবেন মুশফিক।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাশরাফি

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ