নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জয় দিয়েই বিশ্বকাপ শুরু করেছিল দল। তবে এরপর হেরেছে টানা দুই ম্যাচ। একটি ভেস্তে গেছে বৃষ্টিতে। দলের বিশ্বাস পোক্ত করতে, সেমি-ফাইনালের সমীকরণে টিকে থাকতে পরের ম্যাচে জয়টা খুব করে চাই দলের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর ব্রিস্টল থেকে বাংলাদেশ দল এসেছে টন্টনে। বুধ ও বৃহস্পতিবার কোনো অনুশীলন নেই দলের। শারীরিক ও মানসিক ধকল কাটিয়ে সবাইকে চাঙা ও ফুরফুরে করে তুলতে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দুই দিন। গতকাল ঐচ্ছিক অনুশীলন করার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে সম্ভব হয়নি। হোটেলবন্দী হয়ে কাটিয়েছেন বেশিরভাগ ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফরা।
বিশ্রামটা কত জরুরি ছিল জানিয়ে কোচ বললেন, সামনের কঠিন সময়ের জন্য দলকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করবে এই ছুটি, ‘গলফ খেলছি, একটু ঘুরে বেড়াচ্ছি, বিশ্রাম নিচ্ছি। গত কিছুদিনে আমাদের অনেক খেলা ছিল। এছাড়াও অনুশীলন, অনেক ভ্রমণ মিলিয়ে ক্লান্তি পেয়ে বসা স্বাভাবিক। এই সব সময়ে বিশ্রাম খুব জরুরি। সবাই চাঙা হয়ে উঠবে আশা করি। সামনে অপেক্ষায় চ্যালেঞ্জ। এখন জেতা শুরু করতে হবে আমাদের।’
রোডসের কোচিংয়ে ওয়ানডেতে জয়টাই বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের মাঝামাঝি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন এই ইংলিশ কোচ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার একবছর পূর্ণ হয়েছে সম্প্রতি। এই সময়টায় ২৫ ওয়ানডের ১৫টি জিতেছে বাংলাদেশ। ৬ টি-টোয়েন্টিতে জয় ৩টি, ৮ টেস্টে জয় ৩টি। ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে তিনি ছিলেন অনেক অভিজ্ঞ ও শ্রদ্ধেয় কোচ। জাতীয় দলের কোচ হিসেবে প্রথম দায়িত্বের প্রথম বছরে ফিরে তাকিয়ে তৃপ্তিটাই বেশি তার, ‘জয়-হার ছিল। ওঠা-নামা এসেছে। তবে সব মিলিয়ে এই এক বছর বেশ ভালো কেটেছে। আমার নিজের জন্য এটি ছিল অনন্য অভিজ্ঞতা। অনেক কিছু শিখেছি, শেখানোর চেষ্টা করেছি। দারুণ উপভোগ করছি নিজের কাজ। ছেলেরা খুব ভালো সাড়া দিয়েছে, তাতে আমার কাজ সহজ হয়েছে।’
দায়িত্বের শুরুতে অবশ্য বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল রোডসকে। সেসবের সঙ্গে মানিয়ে এগিয়ে চলাও বেশ উপভোগ করছেন, জানালেন কোচ, ‘নতুন, নতুন পরিবেশ, নতুন দায়িত্ব। অনেক কিছুর সঙ্গেই মানিয়ে নিতে হয়েছে। আমার তো এমন কিছুর অভিজ্ঞতা আগে ছিল না। বিশেষ করে ভাষার দূরত্ব একটি বড় বাধা ছিল। তবে ভাষা খুব বড় সমস্যা হয়নি। কারণ ক্রিকেটের একটি নিজস্ব ভাষা আছে। ক্রিকেটের ভাষা জানলে অন্য কিছু আর লাগে না। অনেকে হয়তো খুব ভালো ইংরেজি পারে না, আমি বাংলা কিছুই পারি না। কিন্তু ক্রিকেটের ভাষা দিয়েই আমরা সেই দূরত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছি।’
দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের পারফরম্যান্সে উন্নতি হলেও রোডসের বড় একটি পরীক্ষা এই বিশ্বকাপ। মূলত ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ভাবনাতেই ইংলিশ কন্ডিশনে অভিজ্ঞ এক কোচকে নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ। কোচের কাছে প্রত্যাশা তাই অনেক। সামনের কয়েকটি ম্যাচই বলে দেবে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির অবস্থান।
ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে ধরেই রেখেছেন মাশরাফি। চার নম্বর জায়গা নিতে হলে তাই নিউজিল্যান্ডে ঠেলে সরাতে হয়। কিন্তু সহজ তিন ম্যাচ থেকে ছয় পয়েন্টের সঙ্গে বৃষ্টিতে ওরা আরেক পয়েন্ট পেয়ে গেল। সেমির চার জায়গা তো তবে পাকা। যদিও এখনো সেমির অনেক পথ বাকি। অনেক কিছু ওলটপালট হয়ে যেতে পারে এরমধ্যে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও নতুন করে শুরু করতে চান হিসেব নিকেশ। তবে সেটি যে কঠিন করে দিয়েছে বৃষ্টি তা লুকালেন না নিজের কথাতেও।
এই পর্যন্ত যা খেলা হয়েছে তাতে বিশ্বকাপের সব হিসাব নিকাশ যেন এলোমেলো করে দিয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টি কারো কাছে পয়েন্ট পাওয়ার ম্যাচ, কারো কাছে পয়েন্ট হারানোর ম্যাচ, কারো কাছে হিসাব এলোমেলো করে দেওয়ার। ভারতের সঙ্গে খেললে নিউজিল্যান্ডও জিততেই পারত। কিন্তু সাদামাটা হিসেবে ভারতের হয়েই পাল্লা ভারি। অধিনায়কের হাবভাবে বোঝা গেল ক্রিকেটীয় হিসেবেই সেমির আগে ‘বিগ থ্রি’কে টলানো যাবে না। এটা ধরে নিয়েই পরিকল্পনা করতে হচ্ছে।
নিউজিল্যান্ড প্রথম তিন ম্যাচ জিতলেও প্রতিপক্ষ ছিল তুলনামূলক সহজ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান আর বাংলাদেশ। অর্থাৎ কিউইদের সামনে এখন থেকে কঠিন প্রতিপক্ষ। বৃষ্টি সেখানেই তাদের সুবিধা করে দিল কিনা চিন্তায় বাংলাদেশ অধিনায়ক।
নিউজিল্যান্ডের ঠিক উল্টো পরিস্থিতি বাংলাদেশের। প্রথম তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিল কঠিন। তাতে এক ম্যাচ জেতা, আরেক ম্যাচে কিউইদের কাছেই লড়াই জমিয়েও তালগোল পাকিয়ে হার, অন্য ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছে উড়ে যাওয়া। ঠিক চতুর্থ ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের জন্য বেশ সহজ। অথচ ব্রিস্টলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচটাই কেড়ে নিয়েছে বৃষ্টি।
খেলা হলেই জেতার নিশ্চয়তা ছিল না বটে, তবে নিজেদের শক্তি, সামর্থ্য বিচার করে শ্রীলঙ্কা ম্যাচটাকে তাই বাংলাদেশ দেখছে পয়েন্ট খোয়ানোর ম্যাচ হিসেবে। সেই ধরে নেওয়া পয়েন্ট খুইয়ে ক্রিকেটারদের মনমরা ভাবটা যেন যাচ্ছে না। বড় টুর্নামেন্টের মাঝে দুদিন ছুটি পেয়ে সবাই ঘুরছেন ফিরছেন, কিন্তু কোথায় যেন বিধে আছে অস্বস্তির কাটা, ‘ওই পয়েন্ট হারানোটাই সর্বনাশ করে দিল। তাও সমস্যা হতো না’, এই কথা বলার পর মাশরাফি ফিরে গেলেন নিউজিল্যান্ডে ম্যাচে। খামতিগুলো কোথায় ছিল? কেন উইলিয়ামসনকে মুশফিকুর রহিমের রান আউট করতে না পারা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। টুর্নামেন্টে প্রত্যাশা পূরণ না হলে কথা হয়ত আরও হবে। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়কের কথায় মনে হলো, সেদিন উইকেট পড়তেও ভুল করেছিলেন তারা। ‘ওটা কোনভাবেই সাড়ে তিনশো বা তিনশো রানেরও উইকেট ছিল না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।