Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাম বেড়েছে সেমাই মুরগি পেঁয়াজের

রাজধানীতে ঈদবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঈদ উৎসবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সেমাই বিক্রি বেড়েছে। পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ অলিগলিতে একসময় খোলা সেমাইয়ের রমরমা বাণিজ্য হলেও এখন সেই দিন নেই। কদর বাড়ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কজাত পণ্যের। বিক্রির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দামও।

একই সঙ্গে দাম বেড়েছে মাছ, মসলা, পেঁয়াজ এবং ব্রয়লার মুরগির। তবে দাম কমেছে মোটা চালের। এ ছাড়া চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা ও ছোলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ঈদের আগে গত দু’দিন রাজধানীর কয়েকটি পাইকারী ও খুচরা বাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। যদিও গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছিলো। কিন্ত এবার ঈদ সামনে রেখে এ দুটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আমদানি করা ও দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। একই সঙ্গে রোজার শুরুর দিকে পণ্যটি আমদানির গতিও শ্লথ ছিল। এসব কারণে আমদানি করা পেঁয়াজের বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে মৌসুমের শেষ দিকে এসে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে বাড়তে শুরু করেছে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম।
ঈদ সামনে রেখে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেমাই উঠেছে। পাশাপাশি পুরানো ঢাকার ঐতিহ্য খোলা সেমাই বিক্রি হচ্ছে মুদি দোকানগুলোতে। মান ও কোম্পানি ভেদে প্রতি ৫০০ গ্রাম ওজনের প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ব্র্যান্ডের মোড়কজাত সেমাইয়ের মধ্যে রয়েছে বনফুল, অ্যারাবিয়ান, এস টি বেকারি, জেদ্দা, মধুবন, আলাউদ্দিন, কুলসুন, প্রাণ, ফু-ওয়াং, বিডি ফুড, প্রিন্স, কিশোয়ান, ডেনিশ, পুষ্টি ও ডায়মন্ড।

এসব লাচ্ছা সেমাইয়ের ২০০ গ্রামের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। কয়েক দিন আগেও এসব সেমাইয়ের প্যাকেট প্রতি দাম ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা। এ ছাড়া ৫০০ গ্রামের স্পেশাল লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ঈগলু ব্র্যান্ডের ২৫০ গ্রাম ওজনের প্যাকেটজাত লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কিশোয়ন ৫০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই ১২০ টাকা, এস টি বেকারির লাচ্ছা সেমাইয়ের ৫০০ গ্রামের প্যাকেট ৫৫ টাকা, বোম্বের ৮০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সেমাইয়ের সঙ্গে বিক্রি বেড়েছে তরল দুধেরও। ক্রেতারা আড়ং, প্রাণ, ফার্মফ্রেশসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের প্যাকেটজাত তরল দুধ কিনছেন। প্রতি কেজি দুধ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকায়। রমজানের শুরুতে চিনির দাম প্রতি কেজি বেড়ে ৭৫ টাকা হলেও এখন কিছুটা কমেছে। কাওরানবাজারে ৫০ কেজির চিনির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৯০০ টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৪ টাকা।

ঈদকে সামনে রেখে মশলার দামও কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি এলাচ মান ভেদে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম (কালো) ৬৩০ টাকা, কাঠ বাদাম (সাদা) ৭৫০ টাকা, কিসমিস ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, আলু বোখারা ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, জিরা ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে কাজু বাদামেরও। প্রতি কেজি কাজু বাদামে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে।
বাজার মৌসুমী ফল বিশেষ করে আম ও লিচুতে ভরে গেছে। সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত বিদেশি ফলের। কিন্তু সেই তুলনায় দাম কমছে না। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি হিমসাগর আম ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি ১০০ লিচু ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের বাজারে শাক-সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। নাড়ির টানে ইতোমধ্যে গ্রামের দিকে ছুটতে শুরু করেছেন মানুষ। ঈদের ছুটি শুরু হলে বাজারের ওপর চাপ কমে আসবে বলে জানালেন বিক্রেতারা। ওই সময় অনেক বিক্রেতাও ঈদের ছুটি উপভোগ করতে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাবেন।

এদিকে, বাজারে প্রতিকেজি গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকা। এ ছাড়া খাসির গোশত ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দাম দু’একটি বাজারে কার্যকর হলেও বেশির ভাগ ব্যবসায়ীরা মূল্য বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও বাজারে মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে বলে জানা গেছে।
অপরিবতির্ত রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম। রুই কাতলা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।
তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০, আইড় ৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০, গলদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পুঁটি ২৫০ টাকা, পোয়া ৬০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া মশুর ডাল ৯০ থেকে ১২০ কেজি, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৯২ থেকে ১০৮, প্রতিকেজি ছোলা ৮০ থেকে ৯০, সরু চাল ৫৪ থেকে ৬৮, মোটা চাল ৪২ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। গত বছর এই সময়ে এসব পণ্যের দাম ছিল যথাক্রমে মশুর ডাল ৫৫ থেকে ১২০, সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ৭৮ থেকে ৮৪, প্রতিকেজি ছোলা ৭৫ থেকে ৮৫, সরু চাল ৪৮ থেকে ৫৬, মোটা চাল ৩৪ থেকে ৩৮ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদবাজার

২৬ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ