বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এক হাজার টাকার নোটগুলো এতোটাই চকচকে, দেখে মনে হবে মাত্র ব্যাংক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। নিরাপত্তা সুতা, জলছাপসহ প্রায় সবই রয়েছে। এমন এক কোটি জাল টাকাসহ ১০ জাল টাকা কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঈদকে সামনে রেখে ৫ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার টার্গেট ছিল ওই জালিয়াত চক্রের। ১০ হাজার টাকায় জাল লাখ টাকা বিক্রি করতে ওই চক্র। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে রাজধানীর বিভিণ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম, নিরাপত্তা সুতা, প্রিন্টার, ল্যাপটপ, কাগজ ও কালি উদ্ধার করা হয় ওই চক্রের কাছ থেকে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- হলো রফিক, জাকির, হানিফ, রাজন শিকদার, খোকন, রিপন, মনির, সোহরাব, জসিম ও লাবণী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) দেবদাস ভট্টাচার্য্য এ সব তথ্য জানান।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জাল নোটের কারবারিদের দৌরাত্ম নিয়ন্ত্রনে বিপাকে পড়েছে প্রশাসন। এসব কারবারিরা বার বার আটক হলেও আইনের ফাঁক ফোকরের কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে। ছাড়া পেয়ে আবার শুরু করছে তাদের কারবারি। জড়িতদের গ্রেফতার করা হলেও ৮০ শতাংশ জামিনে মুক্তি পেয়ে পরবর্তী সময়ে আবারও নিয়োজিত হচ্ছে জাল নোটের ব্যবসায়। ঈদ এলেই তাদের সিন্ডিকেট সারাদেশে সক্রিয় হয়ে ওঠে। গোয়েন্দা সংস্থা ধারণা করছে, ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে প্রায় ৫০ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে জাল নোট ব্যবসায়িরা।
আইন-শৃংখলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ও র্যাব মাদকবিরোধী অভিযানে ব্যস্ত থাকায় জালনোটের কারবারীরা ঈদকে সামনে রেখে তৎপর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ২১০টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। আর ৪৬টি চক্র বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় জাল টাকা ছাড়ানোর কাজ করছে। রাজধানীতে সক্রিয় রয়েছে ২৫টি জাল টাকা জালিয়াত চক্র।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) দেবদাস ভট্টাচার্য্য আরো জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর কদমতলীর বউবাজার এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির জালিয়াত চক্রটিকে গ্রেফতার করা হয়। ঈদ লক্ষ্য করে বাজারে ৫ কোটি টাকার জাল নোট ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। এ ধরনের আরো আট-নয়টি জাল নোট তৈরির চক্র আছে জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি গ্রæপ ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, যে পরিমাণ জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে, তা দিয়ে আরও তিন-চার কোটি টাকার জাল নোট তৈরি করা সম্ভব। এসব টাকা পাইকারি বিক্রেতাদের মাধ্যমে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিত চক্রটি।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এক লাখ টাকার জাল নোট তৈরিতে খরচ ১০ হাজার টাকা। পাইকারি বিক্রেতার কাছে এই এক লাখ টাকা বিক্রি করা হয় ১৪-১৫ হাজার টাকা। পাইকারি বিক্রেতা এসব নোট খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করেন ২০-২৫ হাজার টাকায়। প্রথম খুচরা বিক্রেতা এক লাখ টাকা দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করে ৪০-৫০ হাজার টাকায়। দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতা এক লাখ টাকার জাল নোট প্রায় সমপরিমাণ দামে মাঠপর্যায়ে বিক্রি করে থাকে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এ প্রতারক চক্রের অধিকাংশই প্রথম জীবনে রিকশা চালক, ভ্যান চালক কিংবা হোটেল বয় হিসেবে কাজ করতো। এদের মধ্যে জাল টাকার মামলায় কেউ কেউ দীর্ঘদিন জেলও খেটেছেন। জেল থেকে বের হয়ে আবারও তারা এ ব্যবসায় জড়িয়ে যান। এক প্রশ্নের জবাবে দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, নিরাপত্তা সুতা প্রতারক চক্রটির কাছে কিভাবে পৌঁছায় বা টাকার কালি, জলছাপের হলোগ্রামের বিষয়ে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জাল নোট তৈরির প্রতারক চক্রটিকে আটকের অভিযানে অংশ নেয়া ডিবি উত্তরের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মহরম আলী জানান, এই চক্রের মূলহোতা রফিক। টাকার মধ্যে নিরাপত্তা সুতা বসানোসহ অন্যান্য সূক্ষ কাজ করতো জাকির। বাকিরাও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত থাকে। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল নোট তৈরির কাজ করে আসছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।