পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামে জাল টাকার ছড়াছড়ি। ঈদ বাজারে জালনোট ছড়িয়ে দিয়েছে জাল টাকার কারবারিরা। নগদ টাকা লেনদেনের সময় এক হাজার ও পাঁচশ’ টাকার জালনোট মিলছে। ব্যাংক এমনকি এটিএম বুথ থেকে নেয়া টাকার সাথেও পাওয়া যাচ্ছে জাল টাকা। কখন কার হাতে জালনোট চলে আসে তা নিয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। অত্যাধুনিক ডিজিটাল মেশিনে তৈরি এসব জালনোট এতটাই নিখুঁত যে খালি চোখে বোঝার উপায় নেই এটি আসল না নকল। জালনোট শনাক্ত করার ব্যবস্থা না থাকায় জালিয়াত চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এদিকে শনিবার রাতে নগরীতে সাড়ে ৩১ হাজার টাকার জাল নোটসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ফারুক (৩৬) চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্টেশন রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৩১ হাজার টাকার জাল নোটসহ ফারুকককে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১২ এপ্রিল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে ৩০ লাখ টাকার জালনোটসহ জালিয়াত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারা সেখানে একটি কম্পিউটার দোকানের আড়ালে জাল টাকা তৈরি করছিল। সেখানে তৈরি টাকা চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবং মহানগরীর কয়েকটি বাজারে ছড়িয়ে দেয়া হতো। গ্রেফতারের পর তারা স্বীকার করেছে কয়েক কোটি জাল টাকা তারা বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। এ চক্রের সাথে বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ীও জড়িত। রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব জাল টাকা তৈরি হয়। পাঁচশ’ ও এক হাজার টাকার নোটের লাখ টাকার বান্ডেল বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। জালিয়াত চক্র এ টাকা কিনে নিয়ে নানা কৌশলে হাট-বাজারে ছড়িয়ে দেয়। এদের টার্গেট হয় মহানগরীর বিভিন্ন হাট-বাজার ও মার্কেট এবং গ্রামের হাট ও গবাদি পশুর বাজার। নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজার, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছাদগঞ্জ, পাহাড়তলী-সিডিএ মার্কেট, ইপিজেড মার্কেটসহ বিভিন্ন পাইকারি দোকানে জাল টাকা ছড়িয়ে দিচ্ছে জালিয়াত চক্র। এসব মার্কেটে গ্রাম থেকে আসা ক্রেতাদের লেনদেনের সময় জাল টাকা দিয়ে দিচ্ছে কতিপয় ব্যবসায়ী।
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে লেনদেনকারী গ্রাহকদের পক্ষ থেকেও ব্যাংক থেকে দেয়া পাঁচশ’ ও এক হাজার টাকার নোটের ব্যাংকের স্টিকারযুক্ত বান্ডেলে জাল টাকা পেয়ে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। এ ব্যাপারে গ্রাহক-ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ আশংকা ব্যক্ত করে বলেছেন, বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদের মনে হয়েছে, বেশ কিছু ব্যাংকের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারি জাল টাকা বাজারে ছাড়ার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ফলে কিছু কিছু ব্যাংকের মাধ্যমেও বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে জালনোট। ব্যাংকের এটিএম বুথেও অনেকে জাল টাকা পাচ্ছেন। আবার ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আনার পর বান্ডেলের ভেতর পাওয়া যাচ্ছে জালনোট। তবে গ্রাহকরা ভয়ে বিষয়টি প্রকাশও করতে পারছেন না।
জাল টাকা লেনদেন, গ্রহণ, বহন ও ব্যবহার আইনত দÐনীয় অপরাধ হওয়ায়, এই টাকা হাতে পেয়ে বিব্রত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ ব্যাংক থেকে পাওয়া জালনোট ব্যাংকে ফেরত দিয়ে বদলে নিতে গিয়ে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। টাকা ফেরত না দিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা নানা প্রশ্নবানে বিদ্ধ করছেন গ্রাহককে। নিয়মমাফিক পাঞ্চমেশিন দিয়ে ছিদ্র করে দিচ্ছেন নিয়ে আসা জালনোট। ফলে টাকা ফেরত পাওয়ার বদলে উল্টো শাস্তির ভয়ে আর্থিক ক্ষতি মেনে নিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে প্রতারিত গ্রাহককে। তবে নগরীর বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে জাল টাকা সনাক্তকারী যন্ত্র থাকলেও, বেশিরভাগ বাণিজ্যিক স্থানে এই যন্ত্র নেই। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রতিমুহূর্তে ঝুঁকি নিয়ে অর্থ লেনদেন করছেন।
জাল টাকার ছড়াছড়ি থাকলেও তা রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। যদিও সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, জাল টাকার কারবারিদের ধরতে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। থানাগুলোকেও এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, নতুন নোট বাজারে ছাড়ার সময় জাল টাকার ব্যবসায়ীরা অধিকতর তৎপর হয়ে ওঠে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক চট্টগ্রামের সব তফসিলি ব্যাংককে বিশেষ বুথ খুলে জাল টাকা শনাক্তকরণে হ্যান্ডবিল বিতরণসহ গ্রাহকদের সচেতন করে তোলার বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।