নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে নামার আগে গতকাল শেষবারের মত নিজেদের শানিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগেই প্রস্তুতিটা মন্দ হয়নি মাশরাফি-মুশফিকদের। খোলা চোখে দেখলে হয়ত মনে হবে বোলারদের তুলোধুনা করে ৩৫৯ রান করল ভারত, জবাবে ২৬৪ রানে গুটিয়ে ৯৫ রানে ম্যাচ হারার মধ্যে বাংলাদেশের ‘ভালো’র কী আছে! এক্ষেত্রে ম্যাচের আগে মাশরাফির বলা কথাটাই সামনে আনা যেতে পারে। টাইগার দলপতি মজার ছলেই বলেছিলেন, এই ম্যাচে আমরা হারতে চাই। তাহলে ভুলগুলো চোখে পড়বে এবং তা সুধরে নেওয়া সহজ হবে।
হারলেও এই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক কিছু যে পাওয়া যায়নি তা নয়। এক্ষেত্রে প্রথম দিকে মাশরাফি-মুস্তাফিজ-রুবেল-সাইফউদ্দিনদের দুর্দান্ত পেস আক্রমণ, ব্যাটিংয়ে ছন্দ ধরে রেখে লিটন-মুশফিকের ১২০ রানের জুটি, শেষদিকে মিরাজ-সাইফউদ্দিনের প্রতিরোধ সবকিছুকে ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
এর মাঝে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো ক্রিজে উইকেট বিলিয়ে আসার ব্যাপারটি। দুর্দান্ত শুরুর পর ৪৯ রানে দাঁড়িয়েই জাসপ্রিত বুমবাহর টানা দুই বলে আউট হন সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসান। এরপর আসে লিটন-মুশফিকের সেই ১২০ রানের জুটি। এরপর আবারো টানা দুই বলে দুই উইকেট নেই! দারুণ খেলতে থাকা লিটন তেড়েফুঁড়ে এসে মারতে গিয়ে যোগেন্দ্র চাহালের বলে ধোনির কাছে স্ট্যাম হারান। তার ৯০ বলে ৭৩ রানের ইনিংসে ছিল ১০টি চারের মার। চাহালের ঠিক পরের বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন মোহাম্মাদ মিথুন। ২ উইকেটে ১৬৯ থেকে মুহূর্তেই ৪ উইকেটে ১৬৯! মাহমুদউল্লাহ এসে স্থায়ী ছিলেন ১২ বল। মাহমুদউল্লাহর মত কুলদীপ যাদবের বলে দৃষ্টিকটু বোল্ড হন সাব্বির। ২১৬ রানে দাঁড়িয়ে মুশফিকের বিদায়ের পর ফেরেন মোসাদ্দেক ও সাব্বির। এবার ৫ উইকেটে ২১৬ থেকে মুহূর্তেই ৮ উইকেটে ২১৬! এরপরও আসে মিরাজ-সাইফউদ্দিনের সেই ৪৬ রানের প্রতিরোধ। কিন্তু সেই প্রতিরোধ ভেঙ্গে দেন চাহাল। কুলদীপ ও চাহাল দুই স্পিনারই নেন ৩টি করে উইকেট। পেস বোলিংয়ে ২টি নেন বুমরাহ।
বাংলাদেশের বোলিংয়ে ঠিক উল্টো চিত্র। পেসারদের দুর্দান্ত শুরুর পর স্পিনাররা আক্রমণে আসতেই হাত খুলে যায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। একসময় তো ভারতের স্কোর ছিল ২২ ওভারে চার উইকেটে ১০২! শেষ পর্যন্ত সেই স্কোর ফুলে ফেপে হয় ৭ উইকেটে ৩৫৯।
অবশ্য ইংলিশ কন্ডিশনের ছোট মাঠে বল করতে এসে মার খাচ্ছে না কে! ভারত যখন কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে বাংলাদেশের বোলদের দিয়ে ব্যাটিং প্রাকটিস করছে তখন ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২২ রানের বিশাল লক্ষ্য গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ডও গড়ে ৩৩০ রানের সংগ্রহ।
বাংলাদেশের শুরুর বোলিংটা ছিল দারুণ। বৃষ্টিভেজা দুই দিনের ঢাকা পিচের কথা মাথায় রেখে টস জিতে বল বেছে নেন মাশরাফি। একই ইচ্ছা ছিল বিরাট কোহলিরও। মাশরাফির পরিকল্পনা ঠিক পথেই এগুচ্ছিল। দারুণ বোলিংয়ে তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেখর ধাওয়ারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন কাটার মাস্টার। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে সময়মত তুলে নিয়ে জুটি গড়তে দেননি রুবেল হোসেন ও মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিন। দুজনেই হন ইনসাইড এজ বোল্ড। বিজয় শংকরকে রুবেল যখন মুস্তাফিজের ক্যাসে পরিণত করেন ভারতের সংগ্রহ তখন ২২ ওভারে চার উইকেটে ১০২।
এরপর সময় গড়ানোর সাথে সাথে ম্যাচের লাগাম হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। বোলিংয়ে এসে মার খান আবু জায়েদ, সাকিব, মোসাদ্দেক-মিরাজরা। লোকেশ রাহুলকে ফিরিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৬৪ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন করেন অনিয়মিত বোলার সাব্বির রহমান। বোল্ড হওয়ার আগে ৯৯ বলে ১২টি চার ও চার ছক্কায় ১০৮ করেন রাহুল। শেষ ওভারে সাকিবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৭৮ বলে আট চার ও সাত ছক্কায় ১১৩ রান আসে ধোনির ক্ষ্যাপা ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের হয়ে নয়জন করেছেন বোলিং প্রাকটিস। আট ওভার করে বল করেছেন মুস্তাফিজ ও রুবেল। ছয় ওভার করে মাঠ থেকে উঠে যান মাশরাফি। সমান ওভার করেছেন সাকিব ও সাইফউদ্দিনও। ওভারপ্রতি সবচেয়ে খরুচে ছিলেন আবু জায়েদ, ৩ ওভারে দেন ৪১ রান। খরুচে বোলিংয়ে রুবেল ও সাকিব নেন দুটি করে উইকেট।
একই মাঠে গত রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। অন্যদিকে নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬ উইকেটে পরাজিত হয়েছিল কোহলি বাহিনী।
২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৫ জুন নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ভারত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।