নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
তাপমাত্র দিরে ১১-১২, রাতে ৬-৭। কনকনে ঠান্ডা, সাথে গা হিম করা বাতাস। শরীরের কোনো অংশ বেরিয়ে থাকলে মনে হয় এই বুঝি জমে হিম হয়ে গেল। কন্ডিশনের সঙ্গে লড়াই তো ছিলেই, ছিল প্রথম শিরোপা জয়ের চ্যালেঞ্জ। ঠিক এমন পরিবেশের মধ্য দিয়ে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে হয়েছে গ্রীষ্মমন্ডলীয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।
প্রচন্ড ঠান্ডায় প্রায় জবুথবু হয়ে স্বাগতিক ‘এ’ দলের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু হয় প্রস্তুতি। কিন্তু কন্ডিশন যেমনই হোক না কেন যুদ্ধে নেমে তো আর ঠান্ডার দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না। তাই ড্রেসিংরুমে যখনই সতীর্থদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে, অধিনায়ক হিসেবে উৎসাহ বাক্য দিয়ে দলকে উজ্জ্বীবিত করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। যে করেই হোক, কন্ডিশন জয় করে শিরোপা ঘরে তুলতেই হবে। তার সেই মন্ত্রে দল করলো উড়ন্ত পারফরম্যান্স। এই দুইয়ের রসায়নেই বাজিমাত। উইন্ডিজদের উড়িয়ে দিয়ে প্রথম কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টের মুকুট মাথায় পড়লো লাল সবুজের দল। সেই আরাধ্য ট্রফি বুকে নিয়ে গতপরশু রাতেই দেশে ফিরেছেন অধিনায়ক ম্যাশ। সঙ্গী তখন সফরের বাকি সদস্য তাসকিন আহমেদ, ফরহাদ রেজা, নাঈম হাসান ও ইয়াসির আলী।
প্রস্তুতি ম্যাচের পর ত্রিদেশীয় সিরিজের পারফরম্যান্স সবারই জানা। বৃষ্টির বাধায় একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। বাকি চারটি ম্যাচের সবকটিতেই প্রভাব বিস্তার করে জিতেছে বাংলাদেশ। ডাবলিনে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ২৪ ওভারে ২১০ রান চেজ করতে গিয়ে সাত বল হাতে রেখে ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয় মাশরাফিরা।
মূল টুর্নামেন্টে এই হারই মূলত তাতিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ দলকে! ৮৮ রানে হারের পর ড্রেসিংরুমে অধিনায়ক মাশরাফির প্রেরণাই তেতে উঠতে ভূমিকা রেখেছে চ্যাম্পিয়ন হতে। আয়ারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে গতকালই মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে চলা এলিট ক্যাম্পে যোগ দিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে সে কথাই জানালেন শেষ মুহূর্তে ত্রিদেশীয় সিরিজে ডাক পাওয়া অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা, ‘আসলে প্রথম থেকে তিন বিভাগেই আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়া। প্রচন্ড ঠান্ডা ছিল, মানিয়ে নেয়া কঠিন ছিল। পরে মাশরাফি ভাই ড্রেসিংরুমে অনেক কথা বলেছেন, যেটা সবাইকে ড্রেসিংরুমে বুস্টআপ করেছে। ফাইনাল ম্যাচে তো সবাই খুব ভালো করেছে।’
ফাইনাল ম্যাচে বৃষ্টিতে প্রায় সোয়া ৫ ঘণ্টার বিরতির পর খেলা শুরু হলে যেন আরেকটি হারের হুমকিই দিচ্ছিল মাশরাফিদের। কেননা খেলা হবে ২৪ ওভারের, সেখানে রান প্রয়োজন ২১০। টি-টোয়েন্টির ধুমধারাক্কার জামানায় পুরো ৫০ ওভারে তিনশোর্ধ রান তাড়ার চাইতে এটিই তুলনামুলক সহজ ছিল। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ কবে বলে-কয়ে ২১০ রান তাড়া করেছে? তাই শঙ্কাটি ছিলই। তবে রেজার মনে এমন কোনো শঙ্কারই উদ্রেক হয়নি, ‘কখনোই মনে হয়নি ম্যাচটা হারব আমরা। কারণ সবার মধ্যে জেতার জেদটা ছিল। ভালো সুযোগ দরজা থেকে যাতে ফিরে না যায়, তাই যেভাবেই হোক চেষ্টা করেছি ম্যাচটা জিততে।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা দুই তিন বছর পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে লম্বা সময় পর জাতীয় দলের সঙ্গে সফর করার সুযোগ মিলেছিল ফরহাদের। কিন্তু টিম কম্বিনেশনের কারণে একটি ম্যাচেও একাদশে ঠাঁই মেলেনি তার। তাতে কোনো ক্ষোভ বা অভিযোগ তার নেই। বরং জাতীয় দলের আবহে থেকে পুরো সময়টা দারুণ উপভোগ করেছেন তিনি, ‘অনেক দিন পর গিয়েছি। সবার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার ব্যাপার ছিল। সব কিছুই ঠিকভাবে হয়েছে। খুব ভালো লেগেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আমরা যেভাবে খেলতে চেয়েছি ওভাবেই খেলতে পেরেছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।