Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বকাপ স্বপ্ন পূরণের পথ আয়ারল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট তার ঝুলিতেই। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ দলে জায়গাই হয়নি তাসকিন আহমেদের! গত ১৬ এপ্রিল ঘোষিত ১৫ জনের দলে নিজের নাম না দেখে কান্নায় বুক ভাসান দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এই গতিতারকা। তার জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজ। আইসিসি ২৩ মে পর্যন্ত বেধে দিয়েছে চূড়ান্ত দল ঘোষণার সময়সীমা। এর আগে ডাবলিনে হতে যাওয়া তিন জাতির সিরিজ দিয়ে নির্বাচকদের মন পাল্টাতে চান তাসকিন।

বাংলাদেশের এই ডানহাতি পেসারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ৫ বছরের। ২০১৪ সালের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্ব টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে যার শুরু। এর দুই মাস পর ওয়ানডে অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে নেন ৫ উইকেট। পরের বছর বিশ্বকাপেও ৯ উইকেট নিয়ে জ্বলন্ত পারফর্ম করে জাতীয় দলের দারুণ সম্ভাবনাময়ী পেসার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। কিন্তু সেটা ধরে রাখতে পারেননি।

২০১৬ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হন। ৬ মাস পর নিজেকে শুধরে নিয়ে ফিরলেও এক বছরের মধ্যে বাজে ফর্মের কারণে বাদ পড়তে থাকেন তাসকিন। দেখতে থাকেন তাকে পেছনে ফেলে দলের পেস বিভাগের নির্ভরতা হয়ে উঠছেন আবু জায়েদ রাহী, খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেনের মতো বোলাররা।

সবশেষ সিলেট সিক্সার্সের জার্সিতে ২২ উইকেট নিয়ে বিপিএলের দ্বিতীয় শীর্ষ বোলার হন তাসকিন। নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও জায়গা করে নেন। কিন্তু আচমকা ইনজুরিতে ছিটকে যান তিনি। মাসখানেক পুনর্বাসনে থাকার পর গত এপ্রিলে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তিন ম্যাচ খেলেন এই পেসার। কিন্তু তার ফিটনেস প্রশ্নবিদ্ধ থাকায় নির্বাচকরা আগ্রহী ছিলেন না দলে রাখতে। বাদ পড়তে হয় বিশ্বকাপ দল থেকে। তবে আয়ারল্যান্ড সফরের দলে শেষ মুহূর্তে জায়গা করে নেন তাসকিন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার এই সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পারেন তাসকিন, সেটাই দেখার অপেক্ষা। কিন্তু এই সফরে চাপে থাকার কথা ক্রিকইনফোর কাছে স্বীকার করলেন তিনি, ‘আয়ারল্যান্ডে পারফর্ম করার জন্য আমার ওপর অনেক চাপ থাকবে। আমাকে ভালো করতে হবে। তবে চাপ কমানোর চেষ্টা আমি করছি। যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় লেগে থাকি, তাহলে ভালো কিছু হবে মনে হচ্ছে।’ চাপটা কি নিজের মধ্যে থেকে আসছে নাকি ভক্তদের কারণে, এর জবাবে তাসকিন বলেছেন, ‘ভালো করার প্রত্যাশা আমার। আমি ভালো করতে চাই। আমার ভক্তরা সবসময় ইতিবাচক।’

তাসকিন শেষবার জাতীয় দলের জার্সি পরেন গত বছর শ্রীলঙ্কায় হওয়া নিদাহাস ট্রফিতে। ওই টুর্নামেন্টে তার বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১২৫ কিলোমিটার। আগের গড়পড়তা গতির চেয়ে (১৩৫ কিলোমিটার) বেশ কম। তার বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় অস্ত্র গতি কম থাকার কারণে উপেক্ষিত থাকতে হচ্ছে তাকে। তাসকিন বুঝতে পারছেন আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে হলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পারফর্ম করতে হবে, ঠিক যেমনটা ছিল ক্যারিয়ারের শুরুতে। তাসকিন বলেছেন, ‘অতীতে যেমনটা করতাম, তেমন বোলিং আমি করতে চাই। অনেক দিন খেলার বাইরে থেকে আবার দলে ফেরা কঠিন চ্যালেঞ্জ। ক্রিকেটে যখন আপনি জায়গা হারান, তখন আপনার জায়গা নিয়ে নেয় অন্য কেউ এবং ভালো করে। তাই আবার জায়গা ফিরে পাওয়া খুব কঠিন।’

গতির ঝড় তুলে দলে ফেরার এই তীব্র ক্ষুধা কাজে লাগাতে পারলে হয়তো আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে তার। বাংলাদেশও সেই দৃঢ়চেতা ও ধারাবাহিক তাসকিনকে দেখতে চায়, যেমনটা দেখা গিয়েছিল তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম বছরে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ