নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আপেক্ষাটা মাত্র এক উইকেটের। কিন্তু পেরিয়ে গেছে তিন ম্যাচ। অবশেষে ফুরোলো মাশরাফি বিন মুর্তজার অপেক্ষা। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে স্পর্শ করলেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪০০ উইকেটের মাইলফলক।
গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে বিকেএসপিতে কাক্সিক্ষত সেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন মাশরাফি। তার ৪০০তম শিকার ইরফান শুক্কুর। নিজের তৃতীয় ওভারে মাশরাফি বোল্ড করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে।
এবারের লিগেই ৪০০ উইকেট ক্লাবে নিজেদের প্রথম প্রতিনিধি পেয়েছে বাংলাদেশ। গত ২৭ মার্চ এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। ২৬৯ ম্যাচে ৪০০ হয়েছিল এই বাঁহাতি স্পিনারের। মাশরাফির লাগল ২৮৭ ম্যাচ।
৩৮৯ উইকেট নিয়ে এবার লিগ শুরু করেছিলেন মাশরাফি। নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ফেরার পর বিশ্রাম শেষে লিগে নিজের প্রথম ম্যাচে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। পরের তিন ম্যাচে উইকেট ছিল না। পরের ম্যাচে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে নেন ৬ উইকেট।
এরপর এক ম্যাচে উইকেট ছিল না। পরের ম্যাচে ২ উইকেট নেওয়ার পর উইকেট সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৯৯। সেখানেই থমকে ছিলেন ৩ ম্যাচ। অপেক্ষা শেষে এবার এগোতে পারলেন পরের ধাপ। পরে আরো দুই উইকেট নিয়ে সেটি পৌঁছে গেছে ৪০২-এ।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেটের বিশ্বরেকর্ড ওয়াসিম আকরামের। পাকিস্তানী কিংবদন্তি নিয়েছেন ৮৮১ উইকেট। ৬৮৪ উইকেট নিয়ে দুইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট অ্যালান ডোনাল্ড। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মাশরাফিই। ২৫৮ উইকেট নিয়ে তিনি সাকিব আল হাসানের চেয়ে এগিয়ে আছেন ১১ উইকেট। আর এই মর্যাদার ম্যাচটি জিতে নিয়েছে আবাহনীই।
বিশ্বকাপে তাকে যে ভূমিকায় চায় বাংলাদেশ দল, শিরোপাধারীদের হয়ে সেই ঝলক দেখিয়ে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ব্যাটে-বলে তার দারুণ পারফরম্যান্সের দিনে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখালেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। অবদান রাখলেন সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ মিঠুন। আবাহনী পেল বাংলাদেশের বিশ্বকাপ তারকাদের আলোয় রাঙা জয়।
সবচেয়ে উজ্জ্বল মোসাদ্দেকই। ব্যাট হাতে সাতে নেমে অপরাজিত ফিফটি করেছেন। এরপর নতুন বলে বোলিং করেছেন, নিয়েছেন ৩ উইকেট। মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবকে ৪৫ রানে হারিয়েছে আবাহনী। মোসাদ্দেকের পাশাপাশি আগ্রাসী ফিফটি করেছেন বিশ্বকাপ দলে থাকা সাব্বির ও মিঠুন। ৫০ ওভারে আবাহনী তোলে ৩০৪ রান। মোহামেডান ৪৬.৩ ওভারে অলআউট হয় ২৫৯ রানে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর চেয়ে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে গিয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তাই শিরোপা অনেক কাছেই মনে হচ্ছিল দলটির জন্য। কিন্তু এদিন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে হেরে গেছে তারা। ফলে শিরোপা স্বপ্ন অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠল তাদের জন্য। রূপগঞ্জকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে এদিন বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি রূপগঞ্জ। অথচ টস জিতে ব্যাট করতে নেমেছিল দলটি। মোহাম্মদ নাঈম ছাড়া আর কন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারেননি। উইকেটে সেট হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি মিডল অর্ডারের কোন ব্যাটসম্যান। ফলে ৪৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করতে পারে তালিকার শীর্ষে থাকা দলটি।
বল হাতে প্রথমে তোপ দাগালেন ফরহাদ রেজা। এরপর ব্যাট হাতে খেললেন কার্যকরী এক ইনিংস। তাতে প্রাইম ডার্বি জিতে নিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে দলটি। ফলে প্রাইম ব্যাংকের সমান ১৬ পয়েন্ট হলো দোলেশ্বরের।
এদিন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ফরহাদ রেজার তোপে পরে প্রাইম ব্যাংক। ফলে দলিও ৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি। এরপর চতুর্থ উইকেটে আল-আমিনকে নিয়ে ৮৫ রানের জুটি গড়ে চাপ সামলে নেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অলোক কাপালী। তবে এ জুটি ভাঙলে আবার নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। ফলে ৪৮.১ ওভারে ১৬৯ রানেই গুটিয়ে যায় তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-মোহামেডান, বিকেএসপি
আবাহনী : ৫০ ওভোরে ৩০৪/৭ (সৌম্য ১৭, সাব্বির ৬৪, জাফর ১৯, শান্ত ৩৬, মিঠুন ৫৬, মোসাদ্দেক ৫৪*, সাইফ ৪১; শফিউল ৩/৬৩, রাহাতুল ২/৪১)। মোহামেডান : ৪৬.৩ ওভারে ২৫৯ (রকিবুল ৯৬, তুষার ১৬, আশরাফুল ৬৮, সোহাগ ২৮; মোসাদ্দেক ৩/৩৬, মাশরাফি ৩/৪০, অপু ১/৩৬, সাইফ ১/৪৬, সৌম্য ২/৪০)। ফল : আবাহনী লিমিটেড ৪৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : মোসাদ্দেক হোসেন (আবাহনী)।
প্রাইম ব্যাংক-প্রাইম দোলেশ্বর, মিরপুর
প্রাইম ব্যাংক : ৪৮.১ ওভারে ১৬৯ (বিজয় ৫, আল-আমিন ৩২, কাপালী ৬১, আরিফুল ২৭, মনির ২৩; রেজা ৪/২২, মানিক ২/২৮, সানি ১/৩৬, তাইবুর ২/১০)। দোলেশ্বর : ৪৩.৪ ওভারে ১৭২/৩ (সাইফ ৫৫, জসীমউদ্দিন ২১, ফরহাদ ২২, মার্শাল ২৫*, রেজা ৪১*; আরিফুল ১/২৭, মনির ১/২৩, নাঈম ১/২৮)। ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : ফরহাদ রেজা (দোলেশ্বর)।
রূপগঞ্জ-শেখ জামাল, ফতুল্লা
রূপগঞ্জ : ৪৯.৩ ওভারে ১৭১ (মোহাম্মদ নাঈম ৫৮, মুমিনুল ১৫, ধাওয়ান ২৩; খালেদ ৪/৩১, নাসির ১/১৬, এনামুল ১/৩৩, ইলিয়াস ১/২৭, তাইজুল ২/১৬)। শেখ জামাল : ৪৮.৩ ওভারে ১৭২/৬ (ইলিয়াস ৫৮, সোহান ২৯, তানবির ৪৩*, জিয়াউর ১০, তাইজুল ১৩*; নাবিল ৩/২৭, শহীদ ১/২৬, ধাওয়ান ২/৩৩)। ফল : শেখ জামাল ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : ইলিয়াস সানি (শেখ জামাল)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।