Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা-সাভারে উচ্ছেদ অভিযান

তুরাগে খালসহ ২৯ স্থাপনা : খিলগাঁওয়ে নকশাবহির্ভূত ভবন ভেঙেছে রাজউক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঢাকার অদূরে সাভারে তুরাগ তীরে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ছোট-বড় ২৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। গতকাল অভিযানের ২৩তম দিনে দিয়াবাড়ি ও কাউন্দিয়া এলাকায় এ অভিযান চলে। অভিযানকালে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির দখলে থাকা একটি খাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় এলাকাবাসী খালে নেমে মাছ ধরায় মেতে ওঠে। এতে উচ্ছেদ অভিযান মাছ ধরা উৎসবে রূপ নেয়। এদিকে, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে অবাসিক ভবনে অবৈধভাবে বাণিজ্যিকীকরণ ও নকশা বহির্ভূতভাবে তলা বাড়ানোয় তা অপসারণ করা হয়।
সাভার থেকে সেলিম আহমেদ জানান, অভিযানকালে তুরাগ পাড়ের কাউন্দিয়ায় নদী দখল করে তৈরি করা খালের বাঁধ কেটে দখলমুক্ত করে তা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়া হয়। এরপরই খালে আটকা থাকা অজস্র মাছ নদীতে নেমে পড়ে। পরে সেসব মাছ ধরতে নদীতে নেমে পড়েন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, কাউন্দিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম শান্তর যোগসাজশে তুরাগ নদীর এ অংশটি বাঁধ দিয়ে খাল বানিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার আবু তালেব মেম্বার। অভিযানকালে ভেকু দিয়ে বাঁধের মাটি সরিয়ে দিলে পানির প্রবাহ সচল হয়। তখন নারী-পুরুষসহ শত শত গ্রামবাসী একইসঙ্গে মাছ ধরতে নদীতে নেমে পড়েন। কেউ জাল দিয়ে, কেউ আবার ট্যাটা বা পলো দিয়ে মাছ ধরেছেন। কোনো কিছু না পেয়ে অনেকে হাড়ি পাতিল নিয়েই নেমে পড়েছেন। পুরো উচ্ছেদ অভিযান যেন মাছ ধরার উৎসব। প্রত্যেকেই কম বেশি মাছ ধরেন।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ঢাকার চারপাশের নদী দখলমুক্ত করার চলমান অভিযানে বুধবার সাভারের কাউন্দিয়ায় পুরনো একটি খাল উদ্ধার করে নদীর সঙ্গে যুক্ত করলে এ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নদীর পাশাপাশি ধীরে ধীরে ঢাকার চারপাশের খালগুলোও দখলমুক্ত করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ›র যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) আরিফ হাসানাত বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছের চাষ করছিল। পরে সেখানেই অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলে। তিনি বলেন, জলের মতো যে খাল ছিল, সেগুলোর মুখ আমরা অবমুক্ত করার চেষ্টা করছি। এপ্রসঙ্গে জানতে আবু তালেবের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে দিয়াবাড়ি এলাকায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে নদী দখল করে তৈরী ছোট-বড় ২৯টি স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাকা তিন তলা ভবন ১টি, দোতলা ভবন ৪টি, একতলা ১২টিসহ ১৭টি পাকা ভবন উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া আধা পাকা ৭টি ও ৫িিট টিনের ঘর উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া প্রায় এক একর জায়গা অবমুক্তকরণসহ একটি খাল দখলমুক্ত করা হয়।
এর আগে ২২তম দিনের উচ্ছেদ অভিযানে গত মঙ্গলবার চারতলা পাকা ভবন একটি, তিনতলা চারটি, দোতলা সাতটি, একতলা ১৩টিসহ ২৫টি পাকা ভবন উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাশাপাশি আধা পাকা ভবন আটটি, টিনের ঘর ২৩টিসহ ৫৬টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। আজ বৃহস্পতিবারও উচ্ছেদ কার্যক্রম চলবে বলে সংস্থাটি জানায়।
খিলগাঁওয়ে রাজউকের উচ্ছেদ
এদিকে, খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায় অবাসিক ভবন অবৈধভাবে বাণিজ্যিকীকরণ ও নকশা বহির্ভূত স্থাপনা অপসারণের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করছে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (রাজউক)। রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার ও অথরাইজ অফিসার নুরুজ্জামান জাহিদের নের্তৃত্বে এ অভিযান চলে।
অভিযানে তালতলা থানা সংলগ্ন নির্মাণাধীন এগারো তলা ভবনের আংশিক অপসারণ করা হয় এবং দশতলা অনুমোদনের সাপেক্ষে একতলা বেশি নির্মাণ করার দায়ে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি অবৈধভাবে দখলকৃত ফুটপাথ দখলমুক্ত করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার বলেন, বাতায়ন ডেভলপারস নামে একটি প্রতিষ্ঠান দশতলা আবসিক ভবনের অনুমোদন নিয়ে চার তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছে। কিন্তু তাদের যে প্লানে বাণিজ্যিক ভবনের কথা উল্লেখ নেই। এছাড়া ১০ তলার অনুমোদন থাকলেও বেআইনিভাবে ১১ তলা করা হয়েছে। এছাড়া ভবনের সামনের ফুটপাথ মুক্ত করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উচ্ছেদ

১৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ