পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলায় ৪০ জনেরও বেশি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী নিহত হওয়ার পরেই পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় শেষ। কিন্তু বুধবার মোদি হঠাৎ করেই কিছুটা নরম সুরেই ইসলামাবাদকে ফের আলোচনার বার্তা দিলেন। সউদী ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মোদির বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামগ্রিক আলোচনা যেখানে শুরু হতে পারে, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সে রকম পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে দুদেশ। পুলওয়ামার হামলার পর জয়েশ-ই-মোহম্মদ নেতা মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘের জঙ্গি তালিকায় আনার দাবি জোরদার হওয়ার মুহূর্তেই পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন সালমান। সেখানে পাকিস্তান-সউদী যৌথ ঘোষণাপত্রে ছিল জাতিসংঘের জঙ্গি তালিকা নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ। পররাষ্ট্র সূত্র বলছে, বুধবারের বৈঠকের পরে এ কথা স্পষ্ট যে, পুলওয়ামা-পরবর্তী পরিস্থতি সামলাতে কূটনৈতিক পথেই জোর দিচ্ছে দিল্লি। সউদী আরব পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই সে দেশের নেতৃত্বকে পাশে রেখে বার্তা দেওয়া হয়েছে ইসলামাবাদকে। ২০১৪ সালের মে থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে মোদি যে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন তার প্রশংসা করেছেন সালমান। তবে শুরু থেকেই ভারতের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে তৃতীয় রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না। কিন্তু সউদীর সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তান প্রসঙ্গে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। মোদি বলেন, যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে, তাদের উপর চাপ তৈরি করা হবে। যুবশক্তি যাতে বন্দুক হাতে না-তোলে, তা নিশ্চিত করতে হবে। যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত এবং সউদী আরব সন্ত্রাসকে কোনও বিশেষ জাতি বা সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করার বিরোধী। অপর এক খবরে বলা হয়, কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর ভারতজুড়ে মুসলমান ও কাশ্মীরিদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। একই সঙ্গে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনারও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, মুসলমান ও কাশ্মীরিদের ওপর সহিংসতা এবং হুমকিকে বৈধ করতে পুলওয়ামা হামলার কিছু বিষয়কে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে আমরা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, এ ধরনের হামলার ঘটনা মোকাবেলায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। তবে আশা করছি, সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে সরকার পদক্ষেপ নেবে। গেল বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রæয়ারি) কাশ্মীরের পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) কনভয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় প্রায় ৪৪ জওয়ান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি। এরপর থেকে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। হামলায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকা ছিলো বলে দাবি করেছে ভারত। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। আনাদোলু, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।